বাংলা ব্যান্ড সংগীতে মাদকতা ছড়ানোর নাম জেমস। ফারুক মাহফুজ আনাম জেমসকে ভক্তরা ‘গুরু’ বলে ডাকেন। ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে অবিশ্রান্ত গান শুনিয়ে যাচ্ছেন এই রকস্টার।
বুধবার (২ অক্টোবর) উপমহাদেশের অন্যতম সেরা এই রকস্টারের জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের আজকের এই দিনেই পৃথিবীতে এসেছিলেন তিনি। জীবনের ৫৯ বসন্ত পেরিয়ে ৬০ বছরে পা দিলেন এই গায়ক।
বাংলাদেশে গানের পাশাপাশি বলিউডেও গান করেছেন জেমস। ‘ভিগি ভিগি’ দিয়ে মাত করেছেন বলিউড, এরপর চাল চালে, আলবিদা মাত করেছে কোটি কোটি শ্রোতাপ্রেমীকে। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউডের ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমার এই গান মাসেরও বেশি সময় বলিউড টপচার্টের শীর্ষে ছিল। সেই জেমস হুট করে বলিউড থেকে সরে গেলেন কেন? এর কারণ কেউ জানত না। অবশেষে সে প্রশ্নের উত্তর দিলেন জেমস।
বলিউডে স্থায়ী হননি কেন? এই প্রশ্নের জবাবে জেমস বলেন, বলিউডে নিয়মিত গান করতে চাইলে সেখানে থাকতে হতো আমাকে। আমি দেশ ছেড়ে কোথাও যেতে চাই না, থাকতে চাই না। এটা সম্ভব না আমার পক্ষে। আমি এই দেশে জন্মে অনেক সম্মান ও ভালোবাসা পেয়েছি। এটাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।
জেমসের মিউজিক জীবন শুরু আশির দশকের একেবারে শুরুতে চট্টগ্রামে। বাবার চাকরিসূত্রে চট্টগ্রামে চলে যান। কিন্তু বাবা যখন ঢাকা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ডিরেক্টর জেনারেল হয়ে চলে আসেন। জেমস থেকে যান চট্টগ্রামে। আজিজ বোর্ডিংয়ের ‘বারো বাই বারো’র একটি ছোট্ট রুমে চলে সংগ্রামী জীবন। সামনের একটা রেস্টুরেন্টে খাওয়াদাওয়া আর সন্ধ্যায় চলে যেতেন আগ্রাবাদের হোটেলে।
জেমস ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। ১৯৮৭ সালে প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ পায়। ১৯৮৮ সালে ‘অনন্যা’ নামের একক অ্যালবাম প্রকাশ করে সুপারহিট হয়ে যান জেমস। এরপর ১৯৯০ সালে ‘জেল থেকে বলছি’, ১৯৯৬ সালে ‘নগর বাউল’, ১৯৯৮ সালে ‘লেইস ফিতা লেইস’, ১৯৯৯ সালে ‘কালেকশন অব ফিলিংস’অ্যালবামগুলো প্রকাশ পায়। এরপর ‘ফিলিংস’ ভেঙে জেমস গড়ে তোলেন নতুন লাইনআপে ব্যান্ড ‘নগর বাউল’। এই ব্যান্ড ‘দুষ্টু ছেলের দল’ এবং ‘বিজলি’ অ্যালবাম দুটির মধ্যেই আটকে যায়।
২০০৪ সালে কলকাতার সংগীত পরিচালক প্রিতমের সঙ্গে গান নিয়ে কাজ করেন জেমস। ২০০৫ সালে বলিউডের ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমায় প্লেব্যাক করেন তিনি। এরপর ২০০৬ সালে আবারও বলিউড সিনেমা ‘চল চলে’ গানে কণ্ঠ দেন। ২০০৭ সালে তিনি ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’ সিনেমায় প্লেব্যাক করেন। তার প্রকাশ পাওয়া সবশেষ গান ‘সবই ভুল’। ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরের চাঁদ রাতে এটি প্রকাশ পায়।
২০০০ সালের প্রথম দিকে পেপসির একটি বিজ্ঞাপন চিত্রে অংশগ্রহণ করেন জেমস। এটিই ছিল তার কাজ করা প্রথম বিজ্ঞাপন চিত্র। বিজ্ঞাপনটি বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে প্রচার করা হয়। এরপর তিনি ২০১১ সালে এনার্জি ড্রিংক ব্ল্যাক হর্সের বিজ্ঞাপনে কাজ করেন।
জেমসের উল্লেখযোগ্য অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে, স্টেশন রোড (১৯৮৭), জেল থেকে বলছি (১৯৯০), নগর বাউল (১৯৯৬), লেইস ফিতা লেইস (১৯৯৮), কালেকশন অব ফিলিংস (১৯৯৯), দুষ্টু ছেলের দল (২০০১) প্রভৃতি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।