জুমবাংলা ডেস্ক : জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিক দরিদ্র পরিবারের সন্তান মো. ইমন (১৮)। স্বপ্ন দেখতেন একদিন পরিবারের দুঃখ দূর করবেন। ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়েছেন। এরপর থেকেই ইমনের জীবনযুদ্ধ শুরু। অনেক কিছু না পাওয়ার কষ্ট থাকলেও পথভ্রষ্ট হয়নি তার। শত বাঁধা বিপত্তির পরও এগিয়ে যেতে থাকে ইমন। কিন্তু গত চার আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। শত আলোর মাঝেও অন্ধকার নেমে আসে তার জীবনে। টানা ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে হেরে গেলেন।
মো. ইমন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নলিন এলাকার মৃত্যু মো. জুলহাসের ছেলে।
ইমনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় ইমনের ভ্যানচালক বাবা জুলহাস হোসেন মারা যান। মা রিনা বেগম মানুষের বাসায় কাজ করে চার সন্তানকে বড় করেন। চার ভাইবোনের মধ্যে ইমন ছিল সবার বড়। তাই অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। টিউশনি করে নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি সংসার চালিয়ে ছোট তিন ভাইবোনকেও স্কুলে ভর্তি করায় ইমন।
জানা যায়, ইমন টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলার মনিরুজ্জামান খান বিএম কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করে। পরে গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন।
ইমনের মা রিনা বেগম বড় ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায়। তিনি ছেলের বিভিন্ন স্মৃতি মনে করে প্রলাপ বকছে।
ইমনের বন্ধু ও স্বজনরা জানায়, আন্দোলনে অংশ নিয়ে গেল ৪ আগস্ট বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় ইমনের পেটে গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ওই দিন আহত ইমনকে নিয়ে ঢাকার উত্তরার লেক ভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ৬ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ (১৮ আগস্ট) সকালে মারা যান তিনি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।