আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অভাব আর দেনায় জর্জরিত হয়ে বাঁশ চাষ শুরু করেন রাজশেখর পাতিল। দেনায় ডুবে থাকা রাজশেখর সবার দেনা পরিশোধ করে স্রেফ বাঁশ চাষ করেই আজ কোটিপতি। বছরে তিনি অন্তত ১ কোটি টাকা আয় করেন বাঁশ বিক্রি করেন।
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের খরা কবলিত অঞ্চল নিপানি গ্রামে তার বেড়ে ওঠা। তার গ্রাম ‘নিপানির’ বাংলা অর্থ হল পানি বা জলহীন। তাদের গ্রামে প্রবল পানিসঙ্কট ছিল। রাজশেখরের বাবাও একজন চাষী ছিলেন।
কিন্তু খরাপ্রবণ এলাকা হওয়ায় চাষাবাদ ছিল ব্যয়বহুল। এক সময়ে ১০ লাখ টাকা ঋণ করেছিলেন তার বাবা। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেই দেনা শোধ করতে পারেননি তিনি।
রাজশেখরের ‘রাজশেখর পাতিল বাম্বু’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে। সেখানে তিনি কী ভাবে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ চাষ করে সাফল্য পাওয়া যাবে তা শেখান।
রাজশেখর তখন পড়াশোনা করছেন। দেনার ভার মাথায় নিয়েই তিনি পড়াশোনা শেষ করেন। তারপর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় যোগ দেন। সেখান থেকে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা বেতন পেতেন তিনি।
পরে তার বেতন বেড়ে হয় ৬ হাজার টাকা; কিন্তু ঋণ শোধ করার জন্য এই টাকা যথেষ্ট ছিল না। তার বয়স যখন ২৭ বছর, তখন পরিবারের হাল ধরার জন্য বাবা-মা তাকে গ্রামে ডেকে পাঠান।
প্রথমে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসার হওয়ার; কিন্তু সাফল্য আসেনি। তারপর তাদের ১৬ একর জমিতে ফলের চাষ শুরু করেন।
ফল চাষ লাভজনক ছিল। আম, জাম, সফেদার চাষ করতেন তিনি। তা থেকে দৈনিক ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় হত।
তবে রাজশেখরের জীবনের আমূল বদল আসে ২০০২ সালে। তার গ্রামেরই এক চাষী বাঁশের চারা পুঁতেছিলেন। কিন্তু সেই ব্যবসায় খরিদ্দার না পাওয়ায় অনেক ক্ষতি হয়ে যায় তার। তিনি সমস্ত বাঁশ তুলে ফেলে দিচ্ছিলেন।
রাজশেখর তার কাছ থেকে সেই সমস্ত বাঁশ গাছ নিয়ে নিজের জমির চারপাশে পুঁতে দেন। উদ্দেশ্য ছিল জমির বেড়া হিসেবে সেগুলো কাজে লাগানো।
২০০৫ সাল থেকে গ্রাহক নিজে থেকেই খোঁজ নিয়ে বাঁশ কেনার জন্য তার কাছে আসতে শুরু করলেন। সে বছর বাঁশ বিক্রি করে ২০ লাখ টাকা উপার্জন করেন তিনি। ওই বছর থেকেই বিষয়টি গুরুত্ব পায় রাজশেখর কাছে। সারা দেশ ঘুরে বাঁশের বিভিন্ন প্রজাতির চারা নিয়ে এসে জমিতে পুঁততে শুরু করে দেন সে বছর থেকেই। কারণ তিনি বুঝে গিয়েছিলেন এই ব্যবসা কতটা লাভজনক।
বাঁশ গাছের খুব একটা পরিচর্যা করতে হয় না। চাষে পানিও লাগে খুব কম। খরাপ্রবণ পানিসঙ্কটের গ্রামে তাই বাঁশ চাষই হয়ে ওঠে তার কাছে আদর্শ।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।