Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home বাংলাদেশকে ধর্মীয় রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি
    মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার

    বাংলাদেশকে ধর্মীয় রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি

    জুমবাংলা নিউজ ডেস্কAugust 25, 202014 Mins Read
    Advertisement

    পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তিনি ছিলেন প্রথম হিন্দু বাঙালি অফিসার। পাক-ভারত যুদ্ধে অসম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার, বিডিআরের প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত বীর-উত্তম এ দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার আদায়ের মূল সেনানী। বিভিন্ন ফ্রন্টের আজীবন লড়াকু এই মানুষটি আজ প্রয়াত হয়েছেন। কালের কণ্ঠকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বর্ণময়, সংগ্রামী জীবনের অসামান্য চিত্র ফুটিয়ে তুলেছিলেন। আজ তাঁর প্রয়াণে সাক্ষাতকারটি পুনপ্রকাশ করা হচ্ছে:

    ছোটবেলার কথা মনে পড়ে?

    আমার জন্ম আসামের শিলংয়ে, ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি। বাবার বদলির চাকরির সূত্রে আমরা সেখানে থাকতাম। শিলংয়ে আমাদের বাংলো টাইপের বিরাট বাড়িটি এখনো আছে। ভাইদের মধ্যে আমি তৃতীয়। আমরা পাঁচ ভাই, দুই বোন। বোনেরা বড়। আমার ডাকনাম রাখাল। ছোটবেলায় আমি কিন্তু খুব ডানপিটে ছিলাম। খুব ভালো ফুটবলার ছিলাম। মাঠের একধার থেকে বলে লাথি মারতাম, অন্যধারে চলে যেত। এক-দুবার মোহনবাগান দলেও সুযোগ পেয়েছি। রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড় ছিলাম। মায়ের (লাবণ্যপ্রভা দত্ত) কথা যতটুকু মনে পড়ে, সব সময় তিনি আমাদের আগলে রাখতেন। মা-ই তো আমাদের দেখাশোনা করতেন। বাবা (উপেন্দ্রচন্দ্র দত্ত) ছিলেন ভীষণ কড়া। ঠিকমতো লেখাপড়া করছি কি না, নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছি কি না—এসব ব্যাপারে খুব নজর রাখতেন। বাবা পুলিশ অফিসার ছিলেন। আমি অবশ্য বাবাকে দেখে আর্মিতে যোগ দিইনি। চাকরিতে যোগদানের পর ভালো লেগে গেল, থেকে গেলাম।

    লেখাপড়ার শুরু?

    ক্লাস টু পর্যন্ত শিলংয়ের লাবান গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে পড়েছি। তারপর তো বাবা চাকরি থেকে অবসর নিলেন। আমরা পৈতৃক ভিটা হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার মিরাশি গ্রামে চলে এলাম। ঠাকুর দাদা সেখানে জমিদার ছিলেন। এখনো দত্তবাড়ি, দত্ত পুকুর এবং ঠাকুর দাদার জমিতে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি আছে। আমাকে হবিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করে দেওয়া হলো। ১৯৪৩ সালে এই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেছি। এরপর কলকাতার আশুতোষ কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়তে ভর্তি হলাম। তবে সেখানে খুব বেশি দিন থাকিনি। কারণ বাবা চাননি আমি কলকাতায় পড়ি। তিনি ভেবেছিলেন, সেখানে থাকলে বখাটে হয়ে যাব। তবে আমি তো আগেই বখাটে হয়ে গিয়েছিলাম (হাসি)। বাবার কাছে টাকা চেয়ে চিঠি পাঠালাম। বাবা টাকা পাঠালেন, সঙ্গে হোস্টেল সুপারকে আমার ভর্তি বাতিলের জন্য চিঠিও দিলেন। হোস্টেল সুপার ডেকে বললেন, ‘তোমার বাবা চিঠি দিয়েছেন, তুমি আর সিট পাবে না। অন্য কোথাও ভর্তি হও।’ আমার কলকাতার পাট চুকে গেল।

    কিভাবে বিএল কলেজে ভর্তি হলেন?

    এ কথা শোনার পরে ভাবছিলাম, কী করব? কোথায় ভর্তি হব? আশুতোষ কলেজের বন্ধুরাই দৌলতপুরের কথা বলল যে খুলনার দৌলতপুরে ভালো কলেজ আছে। আশুতোষ কলেজে অল্প সময় পড়লেও নিজে থেকে অনেকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলাম। দৌলতপুর চলে এসে বিএল (ব্রজলাল) কলেজে ভর্তি হলাম। কলেজ হোস্টেলে থাকতাম। খেলাধুলা ও আড্ডাবাজি করতাম। মিশুক ছিলাম তো, ফলে সবাই আমাকে খুব পছন্দ করত। বিএল কলেজ থেকেই আইএসসি ও বিএসসি পাস করেছি। পূজার ছুটিতে বাড়ি যেতাম। সেটি আবার খুব ইন্টারেস্টিং জার্নি ছিল। প্রথমে খুলনা থেকে ট্রেনে কলকাতা যেতাম। ট্রেন পাল্টে সুরমা মেইলে একেবারে সিলেট। রেলস্টেশনে নেমে হাওর পেরিয়ে হবিগঞ্জে পৌঁছতাম।

    সেনাবাহিনীতে কিভাবে যোগ দিলেন?

    পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চাকরিটি কেন জানি আমার হয়েই গেল। একদিন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখলাম—পাকিস্তান আর্মিতে অফিসার নেবে। মা-বাবাকে না জানিয়ে খুলনা থেকে ঢাকা চলে এলাম। এসে দেখি, অনেক লম্বা লাইন। লাইনে দাঁড়ালাম। আমাদের লাইনে অনেক সুন্দর চেহারা, সুঠাম শরীরের ছেলেরাও ছিল। তাদের না নিয়ে সেনা কর্মকর্তারা আমাকে নির্বাচিত করলেন। তখন আবার আমি ফটফট ইংরেজি বলতাম। ভুল কি শুদ্ধ দেখতাম না। এটাও তাদের মুগ্ধ করেছিল। পরে তো প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানে চলে গেলাম। ১৯৫১ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত প্রশিক্ষণ নিলাম এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করলাম।

    তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে আপনিই তো একমাত্র বাঙালি হিন্দু অফিসার ছিলেন?

    পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বাঙালিরা যে খুব ভালো অবস্থানে ছিল না, এটি তো সত্য। তবে একমাত্র বাঙালি হিন্দু অফিসার হিসেবে আমার সঙ্গে তাঁরা কটু কথা বা কটু ব্যবহার করেননি। আমিও সেনাবাহিনীর নিয়মকানুনের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলাম। কাজই ছিল আমার প্রধান বিষয়। কর্তব্যপরায়ণ অফিসার হিসেবেই পাকিস্তান আর্মি এবং পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছি। আমার কর্তব্যপরায়ণতাই আমাকে সাহসী করে তুলেছে। এটিই ছিল আমার শক্তি।

    পাক-ভারত যুদ্ধে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন।

    ১৯৬৫ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ী এলাকা আসালংয়ে পাক-ভারত যুদ্ধ হয়েছিল। তখন আমি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন, কুমিল্লায় পোস্টেড। কম্পানি কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। যুদ্ধের সময় আমাকে লক্ষ্য করে ছোড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোলা পেছনের সৈনিকের গায়ে লাগল, কপালগুণে বেঁচে গেলাম। এই যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে হারিয়ে আসালং মৌজা পুনর্দখল করেছিলাম। জয়ের পর পাহাড়ি পথ দিয়ে কুমিল্লার ওপর দিয়ে যখন আমার কনভয় যাচ্ছিল, ছাত্র-জনতা দুই পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। কুমিল্লাবাসী এখনো তা মনে রেখেছে। আসালং জয়ের ফলে পাকিস্তান সরকার আমাকে মেডেল দিয়েছিল, পুরস্কৃতও করেছে। তবে পরে লাহোরের অফিসার্স মেসে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান হিন্দুদের বিষোদগারে মেতে উঠলেন। তখন দাঁড়িয়ে এই বলে প্রতিবাদ করেছি, ‘আই অ্যাম অ্যা হিন্দু অ্যান্ড আই অ্যাম প্রাউড টু বি অ্যা মেজর অব পাকিস্তান আর্মি। সো ইউ শুড নট ডেয়ার সেয়িং দিস।’ তখন অন্যরা মনে মনে আমার সাহসের তারিফ করেছেন এবং নৈতিকভাবে আমাকে সমর্থন করেছেন।

    মুক্তিযুদ্ধে কিভাবে যোগদান করলেন?

    আমরা বছরে এক মাস ছুটি পেতাম। পাকিস্তান থেকে ছুটিতে হবিগঞ্জে আসতাম। চোখের পলকে সময় চলে যেত। এই দেখে বুদ্ধি করে ছুটির ধরন বদলালাম। প্রতিবছর ছুটি না নিয়ে তিন বছর পর পর ছুটি নিতাম। তখন আবার একসঙ্গে তিন বছরের ছুটি পেতাম। ১৯৫১ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ২০ বছর এভাবেই ছুটি নিয়েছি। ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে ছুটি নিয়ে হবিগঞ্জে এলাম। তখন আমি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সিক্স ফ্রন্টিয়ার্সের বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিনিয়র মেজর। অত দূর থেকে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না। আমাদের কোনো কিছু জানতেও দেওয়া হয়নি; কিন্তু দেশে এসে দেখলাম, চারদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এখানে সবাই স্বাধীনতার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন। এদিকে আমার ছুটিও শেষ হয়ে আসছিল। ফলে আমিও দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম যে এমন পরিস্থিতিতে বউ, ছেলেমেয়ে নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে যাওয়া ঠিক হবে না। এর মধ্যে সাতই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দিলেন। হবিগঞ্জে রেডিওতে সেই ভাষণ শুনলাম—‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এই কথাগুলোই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং সিদ্ধান্ত নিলাম, পশ্চিম পাকিস্তানে আর ফিরে যাব না।

    যুদ্ধের শুরুর দিকের ঘটনাবলি মনে পড়ে?

    ২৬ মার্চ খবর পেলাম, ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকাসহ সারা দেশ আক্রমণ করে বাঙালিদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পরদিন সকালে কয়েকজনের সঙ্গে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করছিলাম। তখন কয়েকজন ছাত্র আমাকে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে তাদের সাহায্যের জন্য অনুরোধ করলেন। আমিও সেটাই চাইছিলাম। আমি তাদের এমএনএ আবদুর রবের (কর্নেল অব:) সঙ্গে আলাপের জন্য বললাম। তিনি কিছুদিন আগে ঢাকায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। ভেবেছিলাম, তাঁর কাছ থেকে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা জানা যাবে। তিনি সেদিনই আমাকে তাঁর বাসভবনে আমন্ত্রণ জানালেন। তাঁর বাসার সামনে দেখি, কয়েকটি বাস ও ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। অপেক্ষ করা ১৫০ জন মানুষ এখনই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। চারদিকে শুধু ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। আবদুর রব আমাকে বললেন, ‘আজ বিকেল ৫টায়ই যে লোকবল আছে, তাদের নিয়ে সিলেট মুক্ত করার জন্য যুদ্ধ শুরু করব। এই যুদ্ধ পরিচালনার ভার আপনাকে দেওয়া হলো।’ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জনের অংশীদার হওয়া যেন আমার নিয়তি। হাসিমুখে সবাইকে অভিবাদন জানালাম এবং যাওয়ার সময় আমাকে নিয়ে যেতে অনুরোধ করলাম। বাড়ি ফিরে স্ত্রী (মনীষা দত্ত) ও ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে বিদায় নিলাম। সেদিন বিকেল ৫টায় একটি জিপ, পাঁচটি ট্রাক ও একটি বাসে মুক্তিযোদ্ধারা এসে স্বাধীনতার ডাকে আমাকে নিয়ে গেলেন। আমি, মানিক চৌধুরী ও রব একই গাড়িতে ছিলাম। আমাদের গাড়িবহর শায়েস্তাগঞ্জের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। গন্তব্য ছিল রশীদপুর চা বাগান। কারণ আমরা খবর পেয়েছিলাম, পাকিস্তানিরা শ্রীমঙ্গলের ওপারে আছে। মুক্তিকামী বাঙালিদের ব্যারিকেড সরিয়ে আমরা এগিয়ে গেলাম। রশীদপুর চা বাগানে পৌঁছতে পৌঁছতে রাত ১১টা বেজে গেল। সেখানে পৌঁছেই রবকে (পরে মেজর জেনারেল) বললাম, ‘আজ রাতে এখানেই থাকব এবং আগামীকাল ভোরে আমাদের সঙ্গে যারা আসছে, তাদের সঙ্গে কী কী অস্ত্র আছে—সব দেখে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করব।’ সেদিন সারা রাত উত্তেজনায় ঘুম হলো না। রশীদপুর চা বাগানের ম্যানেজার মোস্তফা সাহেব আমাদের সহযোগিতা করেছেন। তিনি আমাদের নিরাপত্তা, থাকা-খাওয়া ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছেন। আমার লক্ষ্য ছিল, সিলেটকে মুক্ত করব; কিন্তু আনসার, মুজাহিদ, পুলিশ ও বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্যদের নিয়ে আমার মোট লোকবল ছিল ১৫০ জন। তাঁদের কাছে কিছু থ্রি নট থ্রি রাইফেল ও ১০ রাউন্ড করে গুলি আছে। তবে তাঁরা সবাই যখন বললেন, ‘স্যার, আমরা প্রস্তুত’, মনে সাহস ফিরে পেলাম। ঠিক করে ফেললাম, আমাদের গ্রামবাসীর সাহায্য নিতে হবে। কারণ তারাই হলো বড় শক্তি। গ্রামের লোকদের ডেকে বললাম, আপনারা আমার মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে থাকবেন এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে চারদিক কাঁপিয়ে তুলবেন। যাতে পাকিস্তানিরা মনে করে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে অনেক সৈন্য নিয়ে এসেছি। ২৮-২৯ মার্চ সৈন্যদের সংগঠিত করলাম। আমার প্রথম ঘাঁটি ছিল রশীদপুর। মোস্তফা, আজিজসহ আশপাশের চা বাগানের বাঙালি ম্যানেজাররা আমাকে খুব সহযোগিতা করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতা মানিক চৌধুরী অস্ত্র ও গোলাবারুদের ব্যবস্থা করেছেন।

    আপনার সেক্টর কোন কোন এলাকা নিয়ে?

    ভারতের মেঘালয়ের ডাউকি থেকে আগরতলার খোয়াই পর্যন্ত—মানে খোয়াই-শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন ছাড়া পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেটের ডাউকি সড়ক; হবিগঞ্জ থেকে দক্ষিণ কানাইঘাট পুলিশ স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ১০০ বর্গমাইলজুড়ে আমার সেক্টর। এটি পাহাড়ি এলাকা। পাহাড় ছাড়াও এই এলাকার আরেকটি বৈশিষ্ট্য, এখানে প্রায় ১০০টি চা বাগান ছিল। একদিকে গেরিলাযুদ্ধের জন্য যেমন এটি অত্যন্ত উপযুক্ত এলাকা, তেমনি এটি দুর্গমও ছিল। আমার সেক্টরে গেরিলা যোদ্ধা ছিলেন প্রায় ৯ হাজার। তাদের মধ্যে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা প্রায় চার হাজার। আমার হেডকোয়ার্টার প্রথমে ছিল করিমগঞ্জ, পরে কাসিমপুর। আমার রাজনৈতিক লিয়াজোঁর দায়িত্বে ছিলেন দেওয়ান ফরিদ গাজী, প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলেন আজিজুর রহমান ও ড. হাসান। এই সেক্টরকে ছয়টি সাবসেক্টরে পরিণত করে আমি স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছি। জালালপুর সাবসেক্টরের দায়িত্বে গণবাহিনীর মাহবুবুর রব সাদী, বারাপুঞ্জী সাবসেক্টরে ক্যাপ্টেন রব, আমলসিদ সাবসেক্টরে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জহির, কুকিতল সাবসেক্টরে ফ্ল্যাইট লেফটেন্ট্যান্ট কাদের, কৈশাল শহর সাবসেক্টরে লেফটেন্যান্ট ওয়াকিজ্জামান, কমলপুর সাবসেক্টরে মেজর এনাম মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচালনা করেছেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের লোহারবন্দে প্রশিক্ষণ দিতাম। এই ৯ মাসের যুদ্ধে আমার এক শর বেশি মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। হানাদারদের সঙ্গে অসংখ্য মুখোমুখি ও গেরিলাযুদ্ধ করেছি।

    মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

    ১৯৭২ সালে আমাকে সেনাবাহিনীর রংপুর ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হলো। তখন স্বাধীন দেশের জন্য সেনাবাহিনীর রংপুর ব্রিগেড গড়ে তোলায় আত্মনিয়োগ করেছি। রাত-দিন পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমাকে অবকাঠামো বানাতে হয়েছে, আরো কাজ করেছি। এই দায়িত্বে এক বছরের মতো ছিলাম। ১৯৭৩ সালে আমি একটি বাহিনী গড়ে তোলার দায়িত্ব পেলাম। এই বাহিনীর কাজ হবে আমাদের দেশের অরক্ষিত সীমান্ত রক্ষা করা। দিন-রাত পরিশ্রম করে বিজিবি (সাবেক নাম বাংলাদেশ রাইফেলস) গড়ে তুলেছি। ‘বাংলাদেশ রাইফেলস’ নামটি আমার দেওয়া। স্লোগানটিও আমি দিয়েছি। বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রথম মহাপরিচালক ছিলাম। এই দায়িত্ব কিন্তু কোনো সহজ কাজ ছিল না। আমি সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ করেছিলাম। এই দায়িত্বে বছরখানেক থাকার পর ১৯৭৪-৭৫ সালে সেনা সদর দপ্তরে ‘চিফ অব লজিস্টিকসের দায়িত্ব পালন করেছি। যখন যে দায়িত্ব পেয়েছি, আমি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করেছি।

    মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের দুই দফা চেয়ারম্যান ছিলেন।

    ১৯৭৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেলাম। এই প্রতিষ্ঠানটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন, তাঁদের কল্যাণ ও উন্নয়নে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পাকিস্তানিদের পরিত্যক্ত অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কারখানা, সিনেমা হল কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ছিল। আমার কাজ ছিল বন্ধ কারখানাগুলো চালু করা এবং সেগুলোকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা। প্রথম মেয়াদে দুই বছর ছিলাম। মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারগুলোর অবস্থার উন্নয়নে কাজ করেছি। ট্রাস্টের অধীনে থাকা সিনেমা হলগুলোতে নিজে গিয়ে ব্ল্যাকারদের হাতেনাতে ধরেছি, যাতে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের পয়সা মেরে দিতে না পারে। এরপর ১৯৭৯ সালে আমাকে বিআরটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো। বিআরটিসি একটি লস প্রতিষ্ঠান ছিল। আমিই প্রথম একে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে নিয়ে এসেছি। নিজের অফিশিয়াল গাড়ি থেকে নেমে বিআরটিসির সাধারণ যাত্রী পরিবহন করা বাসে চড়ে বসতাম। গাড়িতে গাড়িতে ঘুরে সেগুলো ভালোভাবে চলছে কি না, চালক, হেলপার ও সংশ্লিষ্টরা যাতে তেল চুরি করতে না পারে সে জন্য তাদের কাজকর্ম, গতিবিধি নজরে রাখতাম। কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হলে হাতেনাতে ধরতাম। ড্রাইভার-হেলপার-কন্ডাকটরদের পোশাকের ব্যবস্থা করেছি। তাদের বোনাসের ব্যবস্থা করেছি, নতুন বাস কিনেছি। এরপর ১৯৮২ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে আমাকে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হলো। শুনেছি, আমার জন্য অসহায় মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদ মিছিল ও অনশন করেছিলেন। দু-দুবার চেয়ারম্যান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের যে প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল, সব কটিকেই লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছি।

    সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিলেন কবে? কিভাবে?

    ১৯৮৪ সালের জানুয়ারিতে আমাকে বাধ্য হয়ে চাকরি থেকে অবসর নিতে হয়। তখন মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত শক্তি ক্ষমতায়। তারা কল্যাণ ট্রাস্টের হরদেও গ্লাস ফ্যাক্টরি, কোকা-কোলার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। অনেক ধনীও সেগুলো কিনতে জোর চেষ্টা-তদবির করছিল। তবে আমি সেগুলো বিক্রি করতে দিচ্ছিলাম না। কারণ এগুলোই ছিল শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের একমাত্র আয়। ফলে এরশাদ সরকারের নির্দেশে আইনবহির্ভূতভাবে এলপিআর ছাড়াই আমাকে অবসর নিতে হয়েছে।

    বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কেন, কিভাবে গড়ে তুললেন?

    আমি মুক্তিযুদ্ধ করে এই দেশকে স্বাধীন করেছি। কখনোই ভাবিনি, আমাকে এ দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার ও নিরাপত্তার জন্য লড়াই করতে হবে। কারণ আমি বাঙালিত্বের চেতনায় বিশ্বাস করি। তবে ১৯৮৮ সালের ২০ মে যখন ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার বিল পার্লামেন্টে উঠল, দেশ পাকিস্তানি ধারায় প্রত্যাবর্তন করল, তখন কিন্তু সমসাময়িক অফিসার-অধীনস্থদের বলেছি, বাংলাদেশকে ধর্মীয় রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি। এখনো এটিই বলি—এই আমার বিশ্বাস। যখন বিলটি পার্লামেন্টে গেল, বিচারপতি দেবেশ ভট্টাচার্য, আমি, বিচারপতি রণধীর সেন, কে বি রায় চৌধুরী, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সুধাংশু শেখর হালদার, নির্মল সেন প্রমুখ সংখ্যালঘু নেতৃস্থানীয় ভাবলাম, সংবিধানকে আজ শুধু সাম্প্রদায়িকীকরণই করা হয়নি, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার মাধ্যমে দেশ সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের দিকেও চলে যাচ্ছে। আড়াই কোটি মানুষকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যে চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি, সেটি থেকে দেশ সরে যাচ্ছে। এ ঘটনার বছরখানেক পর পরিষদের জাতীয় সম্মেলন হলো। সেখানে বিচারপতি দেবেশ ভট্টাচার্যের কাছ থেকে ঐক্য পরিষদের লড়াইয়ের মূল দায়িত্বটি গ্রহণ করলাম।

    তখন তো আপনাকে মেরে ফেলারও চেষ্টা চলেছে?

    যেদিন ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কনফারেন্সটি হলো, তার আগেই পুলিশ দিয়ে চারদিক থেকে ঘেরাও করে দেওয়া হলো, যাতে কেউ সম্মেলনে আসতে না পারেন। কনফারেন্সের দিন বনানী ডিওএইচএসের বাড়ি থেকে যাতে বেরোতে না পারি, সে জন্য আমাকে নজরবন্দি করে রাখা হলো। তখন গোয়েন্দারা আমাকে অনুসরণ করতেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও সুধাংশু শেখর হালদার ও আরেকজন বাসা থেকে আমাকে নিয়ে এলেন। ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিসেবে কনফারেন্স করার এক সপ্তাহের মাথায় পহেলা বৈশাখ বাংলা একাডেমির সামনে, তিন নেতার মাজারের পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে আসার সময় আমার ওপর গুলি চালানো হলো। স্ত্রীও আমার সঙ্গে ছিলেন। পাশের গাড়িটি আমাদের পেরিয়ে যাওয়ার সময় ওরা আমার দিকে বন্দুক উঁচু করল, স্ত্রী দেখে চিৎকার করে উঠলেন, ‘ওরা তো তোমাকে মেরে ফেলবে।’ সঙ্গে সঙ্গে মাথা নিচু করে ফেললাম। গুলি আমার গায়ে লাগল না, কিন্তু গাড়ির কাচ ভেঙেচুরে গেল। আমার গায়ে অসংখ্য ভাঙা কাচের টুকরো ঢুকে পড়ল। তবে স্ত্রী অক্ষত থাকলেন। পরে ঢাকা মেডিক্যালে অস্ত্রোপচার করে অনেকগুলো কাচের টুকরো বের করা হলো। যেহেতু তৎকালীন সরকার আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছিল, ফলে ঐক্য পরিষদ আমার নিরাপত্তায় এগিয়ে এসেছিল। জগন্নাথ কলেজের দুজন ছাত্র সব সময় আমার সঙ্গে থাকত। তারা নিজেরা খাবার খেয়ে আমাকে খেতে দিত। খাবারও বিশ্বস্ত কারো না কারো বাসা থেকে রান্না করে আনা হতো। এগুলো আমার প্রতি মানুষের ভালোবাসার প্রকাশ।

    কিভাবে এই সংগঠনকে ছড়িয়ে দিয়েছেন?

    তখন এরশাদ বলতেন, স্বাধীন বঙ্গভূমির আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই গুজব তৈরি করে নানা জায়গা থেকে প্রায় ১৩০ জনকে গ্রেফতার করা হলো। যশোর পৌরসভার তখনকার চেয়ারম্যানকেও গ্রেফতার করা হলো। এর প্রতিবাদে ঢাকায় ঐক্য পরিষদের এক মিটিংয়ে পরিষ্কার বলেছি, স্বাধীন বঙ্গভূমির জন্য আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করিনি। এরপর আস্তে আস্তে এটি কেবল জাতীয় সংগঠনেই পরিণত হয়নি, আন্তর্জাতিক সংগঠনের রূপ পেয়েছে। প্রতিটি থানা ও জেলায় গিয়ে আমি একে বিস্তৃত করেছি। সেখানকার অনেককে নেতৃত্বে এনেছি। যখন যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হয়েছে, আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি। সেসব জায়গার ডিসি-এসপিকে বলে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। নিজে গিয়েছি। মেয়েদের সংঘটিত করার জন্য নারী শাখা প্রতিষ্ঠা করেছি।

    ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পেছনে আপনার ভূমিকা?

    ৮০০ বছরের পুরনো এই মন্দির দেবোত্তর সম্পত্তি। তবে পুরোটাই দখলে ছিল, মন্দিরও অবহেলিত ছিল। এখন যেমন সরকার এখানে অনেক অবদান রাখছে, তখন তেমন ছিল না। একে জাতীয় মন্দির নির্বাচনের পর আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় জমি উদ্ধার শুরু করেছি। সরকার নানাভাবে সহযোগিতা করছে। মন্দিরের ২০ বিঘা জমির ছয় বিঘা দখলে আছে, ১৪ বিঘা বেদখল। কেন্দ্রীয়-জাতীয় এই মন্দিরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ বিশ্বের সব রাষ্ট্রনেতা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আসেন। এর সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের মামলা হাইকোর্টে চলছে। আমার একটিই স্বপ্ন—ঢাকেশ্বরী মন্দিরের ২০ বিঘা জমি ফেরত পাব। মন্দিরের আমি উপদেষ্টা।

    বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদে অংশগ্রহণ?

    আমি এই সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭৮ সালে প্রথম ঢাকাভিত্তিক মহানগর সবর্জনীন পূজা উদ্‌যাপন কমিটি তৈরি হয়। ঢাকার পূজাগুলো সমন্বয় করা, নতুন ঢাকায় পূজাকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গড়ে ওঠে। পরে এটি বিস্তৃত হয়ে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদে রূপ লাভ করে। এবারও যে সারা দেশে ২৯ হাজার পূজা হয়েছে, সেগুলো আমাদের কমিটিগুলোর মাধ্যমে হয়েছে। এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও আমাদের কমিটি আছে। আমি এই পরিষদের এককালে সভাপতি ছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা।

    সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম কিভাবে তৈরি হলো?

    আমরা একপর্যায়ে দেখলাম যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে না। তারা শুধু বিচারের বাইরেই নয়, তারা মন্ত্রী পর্যন্ত হয়েছে। এর প্রতিবাদে ২০০৭ সালে আমরা সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম গঠন করলাম। সেখান থেকেই ফোরামের যাত্রা। সেই সময় জীবিত যাঁরা সেক্টর কমান্ডার ছিলেন এবং কিছু সিনিয়র অফিসার, যাঁরা বিভিন্ন সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, তাঁদেরও এখানে আমরা সম্পৃক্ত করি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। নির্বাচনের আগে গঠিত এই ফোরামের মাধ্যমে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে আমাদের কাছে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম, তাদের কাছে আমাদের কিছু দাবি আছে। আমাদের দাবি ছিল : এক. যাঁরা নির্বাচন করবেন, তাঁরা যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে নির্বাচনে যাবেন না, নির্বাচনী প্রচারেও যাবেন না। দুই. কোনো যুদ্ধাপরাধীকে নির্বাচনে প্রার্থী করবেন না। তিন. যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠনের সঙ্গে আপনাদের যেন কোনো ধরনের যোগাযোগ না থাকে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে আমরা আমাদের সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের অফিসে ডেকে এই কথাগুলো বলেছি। যা-ই হোক, নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে। তাদের মানুষ ভোট দেওয়ার একটি কারণ মনে হয়, আমাদের সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের এই আদর্শ। আমি ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আছি।

    ব্যক্তিগত জীবন?

    আমার একাকী জীবনে স্ত্রী নতুন উদ্দীপনার সঙ্গী হয়ে আসে। ১৯৫৭ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের বিয়ে হয়। আমার শ্বশুর অনিল কুমার রায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের একান্ত সচিব ছিলেন। তাঁরা বিখ্যাত কংগ্রেস পরিবার। স্ত্রী আমার প্রতিটি কাজে সহযোগিতা করেছে। সংসারে সময় দিতে পারিনি, সে সংসার সামলেছে। কখনো নিজের কাছে টাকা রাখতাম না, স্ত্রীই সংসারের সব করত। সে ২০১০ সালে মৃত্যুবরণ করে। আমার তিন ছেলে, এক মেয়ে। বড় মেয়ে মহুয়া দত্ত নিউ ইয়র্কে থাকে। তারপর চয়নিকা দত্ত, সে থাকে কানাডার টরন্টোতে, ব্যারিস্টার। ছেলে চিরঞ্জীব দত্ত থাকে নিউ ইয়র্কে, পেশায় চিকিৎসক। সবার ছোট কবিতা দাস গুপ্ত, কনসালটেন্ট।

    কিভাবে দিন কাটে?

    পত্রিকা পড়ি, টিভি দেখি। মাঝেমধ্যে সামাজিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাই। অনেক সময় বাইরে খেতে যাই। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে বসি।

    শ্রুতলিখন : ওমর শাহেদ ও আবু রায়হান রাসেল

    (১৫ ও ২৯ নভেম্বর ২০১৬, বনানী ডিওএইচএস, ঢাকা)

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    Related Posts
    জামায়াত আমির

    দেশে ইদানীং রাজনীতির নামে চাঁদাবাজি, লুটপাট লক্ষ্য করা যাচ্ছে : জামায়াত আমির

    July 5, 2025
    যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা

    জুলাইয়ে শহীদ হতে না পারা আমার জন্য আফসোসের: যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা

    July 5, 2025
    জাতি পুনর্গঠন

    জুলাই আমাদের জাতি পুনর্গঠনের নতুন আশা জাগায়: উপ-প্রেস সচিব

    July 4, 2025
    সর্বশেষ খবর
    iHerb Health Innovations

    iHerb Health Innovations: Leading Global Natural Supplement Distribution

    Imou Smart Security Innovations

    Imou Smart Security Innovations:Leading the AI-Powered Surveillance Revolution

    https://en.wikipedia.org/wiki/Oral-B

    Best Electric Toothbrush for Sensitive Teeth: Top Picks and Reviews

    LG PuriCare 360 Air Purifier: Price in Bangladesh & India

    LG PuriCare 360 Air Purifier: Price in Bangladesh & India with Full Specifications

    নারীদের ঘুম

    পুরুষদের তুলনায় যে কারণে নারীদের ঘুমের বেশি প্রয়োজন

    ওয়েব সিরিজ

    বিছানায় সুখ না পেয়ে স্বামীর কাণ্ড, উল্লুর নতুন ওয়েব সিরিজ!

    Upodastha

    সঞ্চয়পত্রের মুনাফা বাড়ানো নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা

    Dell Inspiron 15: Price in Bangladesh & India

    Dell Inspiron 15: Price in Bangladesh & India with Full Specifications

    যৌবন

    যৌবনের ৬টি ভুল, যার খেসারত অনেক বড়

    Kaam Tamam official trailer review

    রাতের অন্ধকারে জেগে ওঠা গোপন ইচ্ছার কাহিনি!

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.