জুমবাংলা ডেস্ক : বিয়ে করে বাংলাদেশি তরুণীকে পাচারের অভিযোগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুই চীনা নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। আর তাদের দেওয়া তথ্যে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় থেকে আরেক বাংলাদেশি নাগরিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার (২৮ মে) এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের মুখপাত্র ও সহকারী পুলিশ সুপার রাকিবুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার দুই চীনা নাগরিক হলেন- হু জানজুন (৩০) ও জিয়াং লিজি (৫৪) এবং অপরজন বাংলাদেশি নাগরিক মো. নয়ন আলী (৩০)।
জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার শ্রাবন্তী আক্তার (১৯) নামের এক ভুক্তভোগী সোমবার (২৬ মে) রাতে বিমানবন্দরের মূল প্রবেশ পথে অভিযোগ করেন যে, তাকে জোরপূর্বক চীনে পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ গ্রেপ্তার করে চীনা নাগরিক হু জুনজুন ও জ্যাং লেইজিকে।
অভিযোগকারীর তথ্যের ভিত্তিতে সহকারী পুলিশ সুপার ফাউজুল কবীর মঈন দুই চীনা নাগরিককে এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে ও ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বাড়িতে আরও দেশি-বিদেশি পাচারকারী ও নারী ভুক্তভোগী অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এয়ারপোর্ট এপিবিএনের একটি দল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সেই বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে তারা মো. নয়ন আলী (৩০) নামে আরেক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাকিরা পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ পাচারকারী চক্রের গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মানবপাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ মিলেছে।
আরও জানা যায়, মানবপাচারকারী এই দুই চীনা নাগরিক প্রায় একবছর আগে বাংলাদেশে এসে তারা বসুন্ধরা এলাকায় বসবাস করতে থাকে এবং দেশীয় বিভিন্ন দালালদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশি নাগরিক নয়ন আলীর সহযোগিতায় ভুক্তভোগীকে বিয়ে করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখাতে থাকে। বিবাদীরা পরস্পর যোগসাজসে ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বিয়ে করার জন্য রাজি করায়।
পরবর্তী সময়ে ভুক্তভোগীর নামে ভুয়া ঠিকানায় পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করে গত মার্চ মাসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে চীনা নাগরিক হু জানজুন এর সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়। পরবর্তী সময়ে ভিকটিমকে না জানিয়ে চীনে নিয়ে যাওয়ার জন্য জিয়াং লিজি ভিকটিমের নামে প্লেনের টিকিট বুক করে। অভিযুক্তরা বিএস৩২৫ ফ্লাইটে ভিকটিমকে চীনে পাচার করার জন্য জোর করে বাসা থেকে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে আসলে ভুক্তভোগীর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের নজরে আসে।
পাচার হওয়া সম্পদ ফেরাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার ভুক্তভোগীর মা রাশিদা বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পুলিশ সুপার (অপারেশন্স) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সম্প্রতি এপিবিএন কর্তৃক হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মানবপাচারের অপরাধে চীনা নাগরিক আটকের এটি দ্বিতীয় ঘটনা। আমরা লক্ষ করছি, বেশ কিছু মানবপাচারকারী চক্র স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় নারী পাচারের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা মূলত গ্রামের সহজ-সরল ও দরিদ্র পরিবারের নারীদের টার্গেট করে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করার চেষ্টা করে। মানবপাচার প্রতিরোধে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নিরলসভাবে কাজ করছে।’
সূত্র : ইত্তেফাক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।