স্পোর্টস ডেস্ক : ভারত-নিউ জিল্যান্ড সেমি-ফাইনাল ম্যাচ শেষের পর তখন বেশ কিছুক্ষণ হয়ে গেছে। ম্যাচের পর টিভিতে বিশ্লেষণ পর্ব শেষ করে মাঠ থেকে বেরিয়ে আসছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। এগিয়ে গিয়ে বাংলাদেশের সংবাদকর্মী পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইতেই সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক বলে উঠলেন, “তোমাদের কি হলো বলো তো, কোচকে বরখাস্ত করে দিলে! বাংলাদেশ ভালো খেলেছে তো, কোচ কেন বরখাস্ত!”
সৌরভের কথার উত্তর দেওয়ার শুরুই অবশ্য করা গেল না। তার আগেই শুরু হয়ে গেল সেলফি শিকারিদের ভিড়। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ম্যাচ শেষ হলেও দর্শকদের অনেকেই তখনও অপেক্ষায়, তারকাদের যদি একটু নাগালে পাওয়া যায়। সৌরভকে দেখে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। ‘দাদা একটু এদিকে তাকাও’, ‘দাদা, এবার এদিকে..’, ‘দাদা, একট ছবি প্লিজ’, চারপাশে থেকে অনুরোধের স্রোত। ঘিরে ধরা শতশত মানুষ আর ক্যামেরার ভিড়ে তিনিই প্রায় হারিয়ে গেলেন!
নিরাপত্তাকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছিলেন পরিস্থিতি সামাল দিতে। অবস্থা বেগতিক দেখে পার্কিংয়ের দিকে ইশারা করে নিজে থেকেই বললেন, “ওখানে অপেক্ষা করো, আসছি।” ভক্তদের আবদার মিটিয়ে যখন ফিরলেন, তখন দেখা গেল তার অনেক তাড়া। ফিরতে হবে লন্ডনে। গাড়িতে ওঠার আগে কিছুক্ষণ কথা অবশ্য বলে গেলেন।
কোচকে দিয়ে আবার শুরু হলো কথা। তার সত্যিই কৌতূহল, বাংলাদেশ কেন স্টিভ রোডসকে আর কোচের দায়িত্বে রাখছে না। ‘ব্যর্থ বিশ্বকাপ অভিযানের বলি…’, উত্তরটা দেওয়ার শুরু করতেই মুখে কথা কেড়ে নিলেন সৌরভ, “ব্যর্থ বলছো কী! তোমরা ভালো করেছো তো। আমি কেন, এখানে সবাই প্রশংসা করছে। এভাবে কোচ বাদ দেওয়া মোটেও ভালো সংস্কৃতি নয়।”
সৌরভের এই কথা অবশ্য সত্যি, প্রশংসা এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যথেষ্টই পেয়েছে। কিন্তু শুকনো প্রশংসায় তৃপ্ত হওয়ার দিন তো বাংলাদেশের ক্রিকেট বেশ আগেই পেরিয়ে এসেছে! দিনশেষে ফলাফলটা বড় ব্যাপার, বাংলাদেশ পয়েন্ট টেবিলে অষ্টম, প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তি মেলেনি, এসব বিস্তারিত বলার পর একটু গম্ভীর হয়ে কিছু ভাবলেন। খানিক পর জানালেন, কোন জায়গাটায় বাংলাদেশের উন্নতি সবচেয়ে জরুরি।
“বড় টুর্নামেন্টে চাপের মুহূর্তগুলো জিততে শিখতে হবে। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোয় নার্ভ ধরে রাখতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলি যারা জিততে পারে, ম্যাচও তারা জেতে। বাংলাদেশ এবার বেশ কয়েকটি ম্যাচে ওই সময়গুলো নিজেদের পক্ষে আনতে পারেনি।” “মানসিকভাবে শক্ত হতে হবে। আজকে দেখেছো, জাদেজা ও ধোনির জুটির সময়ও নিউ জিল্যান্ড একটুও হাল ছাড়েনি। সবসময় বিশ্বাস করেছে তারা জিতবে। চেষ্টা করে গেছে এবং ফল পেয়েছে। এই মানসিকতা না থাকলে নিয়মিত জেতা সম্ভব নয়।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।