বাংলাদেশের চেয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণীর’ আয়তন বড়: বিপদ এড়াতে যা করবেন

জুমবাংলা ডেস্ক: দানবীয় রূপ নিয়ে ক্রমশ উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। বঙ্গোপসাগরে গত ৪৩ বছরে এপ্রিল মাসে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ‘ফণী’ সবচেয়ে শক্তিশালী বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বঙ্গোপসাগরে উষ্ণতার কারণে অনেকটা অস্বাভাবিকভাবে সৃষ্ট এবং উপকূলে আঘাত হানতে দীর্ঘ সময় নেওয়ায় ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। উত্তাল হয়ে উঠছে সাগর।

এ দিকে ঘূর্ণিঝড় ফণী আয়তনে বাংলাদেশের আয়তনের চেয়েও বড়। এটি ২ লক্ষ বর্গকিলোমিটার।

৪৩ বছর পর সবচেয়ে শক্তিশালী আঘাত নিয়ে হাজির হচ্ছে ফনি। অতিপ্রবল এ ঘূর্ণিঝড় আগামীকাল শুক্রবার বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ অতিক্রম করার সময় এটির গতি হবে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার।

আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফনি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ধীরে এগিয়ে এলেও ফনি বেশ শক্তিশালী হয়ে গেছে। এখন তার গতি বেড়ে গেছে। এ কারণে বাংলাদেশের পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সারা দেশে নৌচলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলকায় সতর্ক সংকেত জারি করে সব সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝেড়ের মতো পরিস্থিতিতে যে কেউ ঘাবড়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। তবে এ সময় মাথা ঠাণ্ডা রেখে কিছু বিষয়ে নজর দিলে অনেক বড় দুর্ঘটনা বা বিপদ এড়ানো যায়। ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিপদে পড়ে গেলে কী করবেন, সে বিষয়ে জরুরি কিছু পরামর্শ দেয়া হলো।

# বাড়ির আশপাশে বড় গাছের শুকিয়ে যাওয়া ডাল থাকলে আগে তা কেটে ফেলুন।

# জোরে বাতাস বয়ে গেলে উড়ে যেতে পারে এমন বস্তু খোলা জায়গা থেকে সরিয়ে ফেলুন। যেমন আলগা হয়ে যাওয়া টিন, ময়লার বাক্স, সাইনবোর্ড ইত্যাদি। কারণ দমকা হাওয়ায় এসব উড়ে গিয়ে কোনো বিপদ ঘটাতে পারে।

# শোবারঘর, রান্নাঘর, টয়লেটসহ জরুরি কোনো স্থাপনা মেরামতের প্রয়োজন হলে আগেই সেটি করিয়ে নিন।

# বিদ্যুতের লাইনে কোনো সমস্যা থাকলে তা সারিয়ে ফেলুন। বাড়ির ওপর বিদ্যুতের লাইন থাকলে সরিয়ে ফেলুন।

# ঝড় শুরু হয়ে গেলে ঘরের ভেতর বিমের নিচের জায়গাটা বেছে নিন।

# হাতের সামনে কাঠের বোর্ড রাখুন। কাঠ বিদ্যুৎ অপরিবাহী।

# হ্যারিকেন, মম ও টর্চ হাতের কাছে রাখুন। কারণ যেকোনো সময় বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে।

# ঘূর্ণিঝড়ে ঘরের চালা উড়ে গেলে খাটের নিচে অবস্থান নিন।

# বাড়িতে খাবার মজুদ করে রাখুন। বিশেষ করে মুড়ি, চিড়া, গুড়- এমন নষ্ট না হয় শুকনো খাবার। সব পাত্রে পানীয় জল ভরে রাখুন।

# প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুদ ঘরে রাখুন।

# ঝড়ের সময় বাড়িতেই থাকার চেষ্টা করুন। বাড়ির এমন এক জায়গা বেছে নিন, যেখানে নির্ভয়ে থাকতে পারবেন।

# ঝড়ের সময় শিশুদের শক্ত করে ধরে রাখবেন। তারা ভয় পেয়ে যেতে পারে।

# কাঁচের জানালা থাকলে আগে থেকে তাতে শক্ত করে বোর্ডজাতীয় কিছু ঝুলিয়ে দিন। না হলে জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

# পরিস্থিতির ওপর নজর রাখুন। কোনো গুজবে কান দেবেন না।

# সাইক্লোন অ্যালার্ট জারি হলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে থেকে সতর্ক থাকুন ।

# সর্বোপরি আতঙ্কগ্রস্ত হওয়া যাবে না। মাথা ঠাণ্ডা রেখে বিপদের মোকাবেলা করতে হবে।