স্পোর্টস ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকায় চলতি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটি দুঃস্বপ্নের এক টুর্নামেন্ট হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য। একে তো মাঠে যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স। নিগার সুলতানার দল হেরেছে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মেয়েদের কাছে ৭ উইকেটে হারের পর পরশু নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে ৮ উইকেটে। মাঠের হতাশাজনক পারফরম্যান্সই ড্রেসিংরুমে অস্থিরতা তৈরির জন্য যথেষ্ট ছিল। এর মধ্যে আবার যোগ হয়েছে ‘ফিক্সিং প্রস্তাব’ কলঙ্কের দাগ। বাংলাদেশ দলের এক নারী ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশেরই আরেক নারী ক্রিকেটার! যিনি বর্তমানে দলের বাইরে আছেন।
গতকাল বাংলাদেশের একটা বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ফিক্সিংয়ের প্রস্তাবের খবরটি প্রথম প্রকাশ করে। টিভি চ্যানেলটি দুই ক্রিকেটারের অডিও কলের একটা ভিডিও প্রকাশ করে। সঙ্গে দুই ক্রিকেটারের নামও। দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা বাংলাদেশ দলের অন্যতম সদস্য লতা মন্ডলকে ঘৃণিত প্রস্তাবটা দেন সোহেলি আক্তার, যিনি বর্তমানে জাতীয় দলের বাইরে। লতা-সোহেলী দীর্ঘদিন জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলেছেন।
তবে সোহেলী ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিলেও লতা মন্ডল তার ফাঁদে পা দেননি। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বসে ফোনেই সোহেলীকে ‘না’ করে দেন। পরে সঙ্গে সঙ্গে তা দলের কোচ ও টিম ম্যানেজারকে জানান। কোচ ও ম্যানেজার দ্রুতই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানান। বিসিবিও সঙ্গে সঙ্গে আইসিসিকে জানিয়েছে দিয়েছে। ফিক্সিংয়ের প্রস্তাবের বিষয়টি স্বীকার করে বিসিবির নারী ক্রিকেট বিভাগের প্রধান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, বিষয়টি এখন আইসিসির দুর্নীতি দমন (আকসু) বিভাগের হাতে। তারা বিষয়টি দেখছে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনও বিষয়টি স্বীকার করে ক্রিকইনফোকে বলেছেন, ‘বিষয় এখন আইসিসির অ্যান্টিকরাপশন ইউনিটই দেখভাল করছে। আমাদের খেলোয়াড়েরা এ ব্যাপারে খুবই সতর্ক। তারা জানে কী করতে হবে, কী করতে হবে না।’
ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায়, ফোনের এক প্রান্ত থেকে সোহেলী অপর প্রান্তের লতা মন্ডলকে বলছেন, ‘ভয়ের কিছু নেই। আমি তোমার ক্ষতি করব না। তোমার যখন ইচ্ছা ফিক্সিং করবে, যখন ইচ্ছা করবে না। কোন ম্যাচে ফিক্সিং করবে সেটাও তোমার ব্যাপার। ধরো একটা ম্যাচে ভালো খেললে, তাহলে পরের ম্যাচেই করতে পারো। তুমি চাইলে স্টাম্প-আউট বা হিট উইকেট হতে পারো। যদি ২০-৩০ লাখের হিট উইকেট হতে অসুবিধা হয়, তাহলে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে স্টাম্প-আউট হতে পারো। যদি কম মনে হয়, বলতে পারো। আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলব। মনে রেখো, এই কথাটা শুধু তোমার-আমার মধ্যেই থাকবে।’
সোহেলীর এই প্রস্তাবের জবাবে লতা সরাসরি তাকে বলে দেন, ‘বান্ধবী, আমি এগুলার মধ্যে নেই। তুমি আমাকে এগুলো বইল না। আমাকে দিয়ে এগুলো কখনোই হবে না। আমাকে এসব বইল না প্লিজ!’ সোহেলী ‘না’ করার পরপরই বিষয়টি দলের কোচ-ম্যানেজারকে জানিয়ে দেন লতা। সাকিব আল হাসান যেমন ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও গোপন রেখেছিলেন, লতা তা করেননি।
লতাকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কথা সোহেলী স্বীকার করেছেন। তবে সোহেলীর দাবি, তিনি ভুল কিছু করেননি। তিনি জানিয়েছেন ফিক্সিংয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছেন ‘আকাশ’ নামের এক জুয়াড়ি। তিনি শুধু লতার সঙ্গে মধ্যস্থতা করেছেন। কাজেই তার কোনো দোষ নেই!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।