জুমবাংলা ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আপনাদের পাশেই ভারত। ওরা অনেক খারাপ কাজ করে। সীমান্তে আমাদের লোকজনকে গুলি করে মেরে দেয়। আমরা তাদের সঙ্গে ভালোভাবে প্রতিবেশীর মতো থাকতে চাই। কিন্তু আমাদের ওপর যদি অন্যায়-অত্যাচার হয়, তার প্রতিবাদ আমরা জানাব।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ঈদগাহ মাঠে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনের জন্য আওয়ামী লীগ আয়নাঘর বানিয়েছিল। এই ভয়াবহ দানব ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার দুই হাজার মানুষকে খুন করেছে। গুলিতে কারও হাত চলে গেছে, কারও পা চলে গেছে, কারও মাথার খুলি উড়ে গেছে। আজকে মুক্ত বাতাসে আমরা বাস করছি। কিন্তু মনে রাখবেন, সেই পর্যন্তই মুক্ত থাকবে, যত দিন আমরা স্বাধীন রাখতে পারব। আমরা যদি আওয়ামী লীগের মতো শুরু করি, তাহলে কি আমরা থাকতে পারব। আমাদেরও একই রকম দশা হবে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের কাছে অনুরোধ, আপনার নিজেদের মানুষের কাছে নিজেকে প্রিয় বানান। কারও ওপর অন্যায়-অত্যাচার, নির্যাতন করবেন না।
উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে যে বিজয় অর্জন হয়েছে, সেই বিজয় কিন্তু নষ্ট হতে দেবেন না। যে সুযোগ আসছে দেশকে সুস্থ করার, ভালো করার, সেটা যেন না হারাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৬ বছরে আমরা খুব কষ্ট পেয়েছি। শেখ হাসিনার সরকার আমাদের নির্যাতন করেছে। বিএনপি-জামায়াত করার অপরাধে আপনাদের জেলে পুরে রাখা হয়েছে। সেই অবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটেছে। যেই হাসিনা সবচেয়ে প্রতাপশালী নেতা হয়েছিলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। সেই প্রতাপশালী শেখ হাসিনা আজ ভারতে আশ্রয় নিয়ে করুণ অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। আর যারা আমাদের ওপর জুলুম করতেন, জমি-ব্যবসা নিয়ে নিতেন, তারা জেলের ভেতর চলে গেছে।
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদের আমাকে বিদ্রূপ করে বলতেন, আমরা তো পালাব না। যদি পালাতেই হয়, তবে দেশের বাইরে যাব না। আমার নাম ধরে বলতেন, ফখরুল আপনি কি আপনার বাসায় আমাকে জায়গা দেবেন না? এখন তাকে (ওবায়দুল কাদের) বলতে চাই, আপনি আসেন, আমার বাসাতেই এসে ওঠেন।
সনাতন ধর্মের মানুষজন সংখ্যাগুরুদের আমানত মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের দেশে একটা বিরাট অংশ আছেন সনাতন ধর্মের মানুষ। তারা আমাদের আমানত। তাদের রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের। এই আমানত আমাদের রক্ষা করতে হবে। সামনে পূজা আসছে। পূজায় যেন অঘটন না ঘটে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার বলছে, কিছু কিছু জিনিস আওয়ামী লীগ সরকার খুবই খারাপ করে দিয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি হলো ভোটের ব্যবস্থা। এটা ঠিক করা দরকার। সবাই যাতে ভোট দিতে পারে। যার ভোট সেই দেবে, যাকে খুশি তাকে দেবে, এমন একটা ভোটের মধ্য দিয়ে আমরা প্রতিনিধি নির্বাচন করব। এই সময়টুকু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দিতে হবে। তারা সবাই নিরপেক্ষ মানুষ, কোনো দল করেন না। কিন্তু দেশকে ভালোবাসেন। তারা কাজ শুরু করেছেন। আমাদের উচিত হবে তাদের সহযোগিতা করা।
জনসভায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহসভাপতি নুর করিম, ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, আবু তাহের দুলাল, হরিপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরসহ জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।