জুমবাংলা ডেস্ক : ওয়েল্ডিং, পাইপ ফিটিংসহ বিভিন্ন কাজের জন্য বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ করবে রাশিয়া। এ বিষয়ে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে রাশিয়ার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) এক নোটিশে এ কথা জানিয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, রাশিয়ার জাহাজ নির্মাণ খাতের কয়েকটি কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় একশ কর্মী নেবে এসব প্রতিষ্ঠান। মূলতঃ স্ক্যাফোল্ডিং (উঁচু মাচান নির্মাণ), হাল ফিটার (ধাতব জাহাজের কাঠামো তৈরি), মেরিন মেশিন ফিটার (যন্ত্রাদি সংযোজন), মেরিন পাইপ ফিটার ও ওয়েল্ডিংয়ের মতো কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ শ্রমিক নিতে চায় রুশ কোম্পানিগুলো।
জানা গেছে, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশের জাহাজ নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি শ্রমিক ও কলাকুশলীরা ব্যাপক সংখ্যায় কাজ করলেও রাশিয়ার জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে এর আগে বাংলাদেশিরা কাজ করেনি। ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে জাহাজের বিভিন্ন পার্টস ও যন্ত্রাদি আমদানিতে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে রাশিয়া। এরইমধ্যে দেশটি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করল।
বোয়েসেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে একশ কর্মীর কথা বললেও রাশিয়ার জাহাজ নির্মাণ খাতে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও বাড়বে। একবার বাংলাদেশীরা রাশিয়ার এ খাতটির শ্রমবাজারে প্রবেশ করলে নিয়োগকর্তাদের আগ্রহ বাড়বে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সে চেষ্টাই করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, রাশিয়ায় নিয়োগ পেতে আগ্রহী কর্মীদের দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর অথবা যে কোনো দেশে আন্তর্জাতিক জাহাজ নির্মাণ খাতে ন্যুনতম ছয় মাসের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আগ্রহীদের রাশিয়া যেতে খরচ হবে জনপ্রতি ৪২ হাজার টাকা (সার্ভিস চার্জ সহ)। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ভেদে বেতন হবে মাসিক ৬৫,০০০ হাজার থেকে ৮৫,০০০ হাজার টাকা। বিমান ভাড়া, রাশিয়ায় থাকা ও যাতায়াতের খরচ নিয়োগদাতা বহন করবে। তবে খাবার খরচ কর্মীকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বহন করতে হবে।
আগ্রহী প্রার্থীরা বোয়েসেলের (বিওইএসএল) ওয়েবসাইটে প্রদত্ত লিঙ্কের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রতি বছর তিন থেকে পাঁচ মাস সময় ১১ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাজ করতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে বর্তমানে একশটি স্থানীয় ও ২০টি আন্তর্জাতিক শিপইয়ার্ড ও ডকইয়ার্ড রয়েছে। শ্রমঘন এ খাতটিতে সরাসরি নিযুক্ত রয়েছে ১৫ হাজারের বেশি দক্ষ ও অর্ধ-দক্ষ কর্মী। ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্পসহ জাহাজ নির্মাণ খাতে আনুমানিক ২০ লাখ লোক প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে নিয়োজিত রয়েছে।
দেশের ছয়টি মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউট থেকে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ জাহাজ নির্মাণ ও সংশ্লিষ্ট খাতের জ্ঞান নিয়ে শ্রম বাজারে প্রবেশ করছে। দেশের ভেতরে স্থানীয় ও বিদেশী মালিকানাধীন শতাধিক শিপইয়ার্ড ও ডকইয়ার্ডে বিপুল সংখ্যক দক্ষ কর্মী ও পেশাজীবী নিয়োজিত রয়েছে। দেশের বাইরে কেবলমাত্র সিঙ্গাপুরেই জাহাজ নির্মাণ খাতে ৫০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।