জুমবাংলা ডেস্ক: মানুষের শখের কোনো শেষ নেই। শখ থেকে মানুষ কয়েন, ডাকটিকিট, ভিউকার্ডসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র জমিয়ে থাকেন। শখ থেকে বিদেশে অনেক মানুষই সিংহ, বাঘ ও সাপের মতো প্রাণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন। কিন্তু পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এক জেলেকে নিজের বন্ধু হিসেবে বেছে নিয়েছে একটি বাজপাখি।
প্রখর দৃষ্টি সম্পন্ন শিকারি প্রাণী হিসেবে বাজপাখির পরিচিতি রয়েছে সর্বত্র। আর এই পাখির সঙ্গেই আত্মার বন্ধন গড়ে উঠেছে
কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের বিপিনপুর গ্রামের জেলে কালাম পাহলানের (৪০)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে কামাল বিপিনপুর গ্রামের পার্শ্ববর্তী একটি খালে মাছ শিকারে যান। এসময় একটি বাজপাখি অসুস্থ অবস্থায় খালের পাড়ে পড়ে থাকতে দেখেন কামাল। পাখিটির কাছে যাওয়ার সময় তিনি দেখতে পান অপর একটি বাজপাখি গাছের ডালে বসে রয়েছে। পরে কামাল খুব সাবধানতার সঙ্গে অসুস্থ বাজপাখিটি উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাজপাখিটির শরীরে তখন অনেক জ্বর ছিলো। এছাড়াও সেটির পাখায় আঘাতের চিহ্ন ছিলো।
অসুস্থ পাখিটিকে নিজের সঙ্গে বাড়িতে আনলেও কামালের পেছন পেছন তার বাড়িতে চলে আসে গাছে বসে থাকা সুস্থ বাজপাখিটিও। পরে কামাল দুটি পাখিকে খাঁচায় বন্দি করে প্রায় ১৫ দিন চিকিৎসা দেন। একই সঙ্গে তাদের খাবারেরও ব্যবস্থা করেন। এক পর্যায়ে সুস্থ হয়ে উঠলে পাখি দুটিকে ছেড়ে দেন কামাল। এসময় একটি পাখি উড়ে গেলেও অন্য পাখিটি কামালের বাড়ির পাশের খালপাড়ের একটি রেন্ট্রি গাছে থাকতে শুরু করে।
দীর্ঘদিন পাখিটি সঙ্গে থাকায় কামাল তার নাম দেন ‘ডায়মন’। বর্তমানে ‘ডায়মন’ বলে ডাকলেই বাজপাখিটি বাড়ির আশপাশে যেখানেই থাকুক না কেনো ছুটে চলে আসে কামালের কাছে। কামালের হাত এবং শরীরের ওপরে বসেই খুনসুটি করতে শুরু করে সে। পরে খাবার খেয়ে ফের চলে যাই গাছের মগডালে।
বাজপাখি এবং কালামের বন্ধুত্ব এক বিরল দৃষ্টান্ত বলে দাবি এলাকাবাসীর।
বিপিনপুর গ্রামের ইসমাইল মুন্সী বলেন, ‘টিয়া, ময়না এবং শালিক পাখি মানুষ পোষ মানিয়েছে। কিন্তু বাজপাখির সঙ্গে মানুষের ভালোবাসা অবিশ্বাস্য হলেও এটা বাস্তব ঘটনা। দেখে অনেকটা অলৌকিক মনে হলেও কালাম এটা করে দেখিয়েছেন। বাজপাখি কামালের সব কথাই শোনে।’
একই এলাকার ইয়াসিন মিয়া বলেন, ‘এটি একটি অবাক করা দৃশ্য। আসলে নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। বাজপাখি আর কালাম পাহলানের বন্ধুত্ব দেখে আমরা আনন্দিত।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘শুধু বাজপাখিই নয় ভালোবাসা দিয়ে জয় করা যায় আরও বড় হিংস্র প্রাণীর মন। কালাম খুবই ভালো কাজ করেছেন। হিংস্র জেনেও কামাল চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেছেন পাখিটিকে।’
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel