জুমবাংলা ডেস্ক: হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২৩-এর আওতায় হাট ও বাজারের সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখলে রাখা অথবা যথাযথ অনুমতি ব্যতীত ঐ খাস জমির উপর কোনো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইন লঙ্ঘনকারীর অনধিক ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের শাস্তি হতে পারে।
এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ জুডিসিয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমেও বিচার করা যাবে।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ৯ই ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা), ২০২৩ বিলটি উপস্থাপন করেন। ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক খসড়াকৃত বিলটি উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন ছাড়াই জাতীয় সংসদে আইন হিসেবে প্রণীত হয়। গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি এই আইনের গেজেট প্রকাশ হয়। খুব শীগগিরই ভূমি মন্ত্রণালয় এই আইনের আওতায় বিধি প্রণয়ন করবে।
২০২১-২২ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী সারা দেশে মোট হাট ও বাজার সংখ্যা ১০ হাজার২৭৩টি। এর মধ্যে ৭হাজার ৯৭২টি ইজারাকৃত হাট ও বাজার থেকে সরকারের প্রায় ৭শত ৪৪কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়।
প্রসঙ্গত, ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল সেবা প্রবর্তনের পাশাপাশি আইন ও বিধি-বিধান সংশোধন করে, এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নতুন আইনের খসড়া তৈরি করে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা স্থাপনে জোর দিচ্ছে। আরও নতুন যে সব আইন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে তার মধ্যে উলেখযোগ্য: ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ভূমি মালিকানা ও ব্যবহার আইন, ভূমি সংস্কার আইন, ভূমি উন্নয়ন কর আইন, স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল (সংশোধন) আইন এবং ভূমি ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ আইন। এসব আইনও দ্রুত প্রণীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
হাট ও বাজার আইনে সরকারী অনুমতি প্রাপ্তির পূর্বশর্ত সহ জনস্বার্থে সরকারি বা বেসরকারি অর্থায়নে অথবা বৈদেশিক সাহায্যে আধুনিক বহুতলবিশিষ্ট বিপণী ভবন (মার্কেট) নির্মাণের বিধান রয়েছে। এসব বিপণী ভবনের ব্যবস্থাপনা ও আয় বণ্টন নির্ধারিত পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে।
নতুন আইনে হাট-বাজারে কোনো জমির স্থায়ী বন্দোবস্ত বা ইজারা দেওয়া নিষিদ্ধ, শুধুমাত্র বার্ষিক ইজারা দেওয়া যাবে। উপরন্তু, নিয়মিত ইজারা বাইরে হাট-বাজারের একটি সংরক্ষিত খালি জায়গা কৃষক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য অস্থায়ী বসার জন্য “তোহা বাজার” হিসাবে ব্যবহার করতে হবে। স্থায়ী হাট ও বাজারের পাশাপাশি এই আইনে অস্থায়ী হাট ও বাজার স্থাপনেরও বিধান রাখা হয়েছে।
হাট ও বাজার স্থাপনকারী কর্তৃপক্ষ হাট ও বাজারের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা, এর রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন, প্রযোজ্য টোল, কর, রেইট বা ফি আদায়সহ সকল কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের জন্য জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে পারবেন।
আইন অনুযায়ী হাট-বাজারের মালিকানা ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যস্ত থাকবে এবং বিধান লঙ্ঘন করে ভূমিতে কোনো হাট বা বাজার স্থাপন করলে সরকার জমি ও তার সব স্থাপনা বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।
উল্লেখ্য, আইন অনুযায়ী, ‘হাট ও বাজার’ বা ‘হাট বা বাজার’ শব্দটি এমন কোনও স্থানকে বোঝায় যেখানে সাধারণ মানুষ কৃষিপণ্য, ফলমূল, পশু, হাঁস-মুরগি, ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য, খাদ্য ও পানীয়, শিল্প পণ্য এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য গুলি দৈনিক ভিত্তিতে বা সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে ক্রয় ও বিক্রয় করে। ঐ স্থানে এই সকল পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য প্রতিষ্ঠিত দোকানও এর অন্তর্ভুক্ত।
‘হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২৩’ প্রণয়ন করার সাথে-সাথে ‘হাট ও বাজার (স্থাপন ও অধিগ্রহণ) অধ্যাদেশ, ১৯৫৯’ রহিত করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।