মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। দেশে মোট গাড়ি আমদানির ৬০ শতাংশ এই বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ায় রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। এটি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনায় এগিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আশা করা হচ্ছে, উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে অর্থনীতিতে আরও বড় অবদান রাখতে পারবে এই বন্দর।

বর্তমানে দেশে আমদানি হওয়া রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বড় অংশই আসে মোংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে। এতে বাড়ছে রাজস্ব আয়ও। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই বন্দরের নিট মুনাফার লক্ষ্য ছিল ২০ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু বছর শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা। শুধু গাড়ি আমদানিতেই ১১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, গাড়িগুলো এখানে রাখার সুব্যবস্থা আছে। আমরা এখানে গাড়ি রাখা শুরু করেছি কয়েক বছর হলো। গাড়ি রাখার পর্যাপ্ত জায়গা, বন্দরের আধুনিক অবকাঠামো, পদ্মা সেতুর সংযোগ ও উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবসায়ীদের আস্থা আরও বাড়িয়েছে। এ ছাড়া নেই মালামাল চুরির আশঙ্কা। ফলে, আমদানিকারকরা এখন চট্টগ্রামের পরিবর্তে ক্রমশ মোংলা বন্দরের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছেন।
এদিকে, বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন বাড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জাহাজের শ্রমিকেরা। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ধারাবাহিকতা থাকলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে গাড়ি আমদানির হার আগের বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।
মোংলা বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট। আমরা খুব বেশি অভিযোগ পাইনি। মোংলা বন্দর গাড়ি ব্যবসায়ীদের জন্য ভালো করছে, এই ধারা অব্যাহত থাকবে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সমুদ্রবন্দর দিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানি হয় ১১ হাজার ৫৭৯টি গাড়ি।
পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা থেকে এ বন্দরের দূরত্ব হবে ১৭০ কিলোমিটার। অপরদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ঢাকার দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার এবং পায়রা বন্দর থেকে ঢাকার দূরত্ব ২৭০ কিলোমিটার। ফলে আমদানি-রপ্তানিকারকরা বাণিজ্যিক স্বার্থে মংলা বন্দর ব্যবহার করেন।
১৯৫০ সালে পশুর নদীর জয়মনির ঘোলে ‘দি সিটি অব লিয়নস’ নামে প্রথম ব্রিটিশ পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গরের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময় চালনা অ্যাংকারেজ পোর্ট নামে মোংলা সমুদ্র বন্দরের যাত্রা শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় নানা সমস্যা মোকাবিলা করে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ও রাজস্ব আয়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে মোংলা সমুদ্র বন্দর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



