আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুসারে ইরানের উপর আরোপিত পাঁচ বছরের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে ১৮ অক্টোবর। যদিও আমেরিকা ওই নিষেধাজ্ঞা নতুন করে চালু করার জন্য সব রকম প্রচেষ্টাই চালিয়েছে। তবে সব প্রচেষ্টাই যথারীতি ব্যর্থ হয়েছে।
রাশিয়া ইতিমধ্যে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পর ইরানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। রাশিয়া একদিকে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং পরমাণু সমঝোতার ৫+১ এক গ্রুপের অন্যতম সদস্য।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা জানিয়েছেন ইরানের উপর আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার পর মস্কো তেহরানের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা চালিয়ে যাবে।
জাখারোভা জানান, ইরানের উপর চাপানো অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের বিষয়টি সম্পর্কিত নয়। তবুও তেহরান স্বেচ্ছায় বাড়তি কিছু প্রটোকল মেনে নিয়েছিল। তাঁর মতে, পরমাণু বিষয়ক আলোচনা দ্রুত নিষ্পন্ন করা এবং একটা সমাধানে পৌঁছনর জন্যই ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। এটা থেকে পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে তেহরানের সদিচ্ছা ফুটে ওঠে।
ইরানের উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পর রাশিয়া তাদের যে দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করল, তা থেকে মস্কোর মৌলিক অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমেরিকা অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে ইরানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে গত দেড় বছরে। তারা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছে ইরানের উপর যেন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল বহাল থাকে। কিন্তু রাশিয়া আমেরিকার সেসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তাদের সুস্পষ্ট অবস্থানের কথা সাফ জানিয়ে দিল। আমেরিকার উচ্চ পদস্থ কর্তারা এমনকি ট্রাম্প এবং পম্পেও পর্যন্ত বারবার কিছু দাবি তুলে মূলত ইরানের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালিয়েছে গত ২০১৯ সাল থেকে।
তাদের বক্তব্য, ইরানের উপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা দেখা দেবে। আর ইরান এবং তাদের মিত্ররা যদি শক্তিশালী হয়ে ওঠে তাহলে ইসরায়েলের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। এইসব যুক্তি দেখিয়ে তারা নিরাপত্তা পরিষদে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার লক্ষ্যে একটি খসড়া পেশ করেছে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের ১৩ সদস্যই খসড়ার বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। অগত্যা তারা অদ্ভুত এক দাবি জানায়। তারা বলে যে আমেরিকা নাকি এখনও পরমাণু সমঝোতার সদস্য।
তারা আরও বলে ইরান নাকি সমঝোতা লঙ্ঘন করেছে এবং সে কারণে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা পুনরায় কার্যকর হবে। তারা ২০ সেপ্টেম্বর সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববাসীর বিরোধিতার কারণে আমেরিকার ওই পদক্ষেপও ভেস্তে গিয়েছে। সর্বশেষে তারা স্ন্যাপব্যাক মেকানিজমের কথা বলেছে। তাও কাজে আসেনি। আসলে ট্রাম্পের অবিবেচনামূলক পদক্ষেপ আমেরিকার জন্য হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমনটি মার্কিন ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন ট্রাম্পের বিদেশ নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, ট্রাম্পের বিদেশ নীতি অন্য যে-কোনও সময়ের তুলনায় আমেরিকাকে কোণঠাসা করে দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।