আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্ব বাণিজ্য ও ইরান ইস্যুকে গুরুত্ব দিয়ে ফ্রান্সের বিয়ারিতজে শেষ হলো বিশ্ব নেতাদের অংশগ্রহনে আয়োজিত জি-৭ সম্মেলন। গতকাল সোমবার তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের সমাপ্তিতে এই দুই ইস্যু ছাড়াও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের আলোচনায় স্থান পায় ইউক্রেন, লিবিয়া, হংকং, জলবায়ু ও ব্রেক্সিট। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠকে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ হংকংয়ে সহিংসতা এড়াতে ১৯৮৪ সালের সিনো-ব্রিটিশ ডিক্লারেশনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। খবর সিএনএন ও রয়টার্সের
বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা চান নেতৃবৃন্দ
সম্মেলনে যাওয়ার আগে চীনা পণ্যে ফের শুল্ক বাড়িয়ে বাণিজ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে গতকাল সুর নরম করে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি আসছে। বেইজিং চুক্তিতে আগ্রহ দেখানোয় ভাল চুক্তির আশা করা হচ্ছে। কারণ শুল্কে চীনের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে এবং তাদের কর্মসংস্থান হ্রাস পাচ্ছে। এর আগে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, চীন সমঝোতার মাধ্যমে বাণিজ্য চুক্তি করতে রাজি আছে। বিশ্ব নেতাদের বৈঠকে বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা, মুক্ত বাণিজ্য এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে (ডাব্লিউটিও) কার্যকর করতে এর সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ২০২০ সালের মধ্যেই এ সংক্রান্ত চুক্তি হবে বলে নেতৃবৃন্দ আশা করেন।
ইরানের সঙ্গে আলোচনায় রাজি ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইরান পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হোক তা চায় না জি-৭। তবে এই অঞ্চল স্থিতিশীল থাকুক সেটিও চান বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। রবিবার আকস্মিকভাবেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ ফ্রান্সের সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইরানের সঙ্গে নতুন পরমাণু চুক্তি করতে রাজি আছেন জানিয়ে বলেন, আড়াই বছরের আগের ইরান এবং এখনকার ইরানের মধ্যে অনেক পার্থক্য। তিনি বলেন, ইরান একটি ভাল দেশ হতে পারে। তবে তারা পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না। ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠকে রাজি হওয়ার আগে তাদের ভাল খেলোয়াড়ের ভূমিকা পালন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। এর আগে ইরানের প্রেসিডেন্টও বলেছিলেন, তেহরান লাভবান হলে তিনি যে কারো সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি।
আরো যেসব বিষয় আলোচনা হয়
জি-৭ জোটে ফের রাশিয়ার অন্তর্ভূক্তি দাবি করলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেন, রাশিয়া একটি শক্তিশালী দেশ। তাকে ফিরিয়ে আনাই ভাল হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, এ নিয়ে রাজনৈতিকভাবে তিনি কী ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন সেই বিষয়কে পরোয়া করেন না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার কারণেই রাশিয়াকে বাদ দেওয়া হয়। অনেকের চেয়ে পরিবেশ সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখেন উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আমি বিশুদ্ধ পানি ও বায়ু চাই। কিন্তু আমি আমার দেশকেও সম্পদশালী দেখতে চাই। ইউক্রেন ইস্যুতে ভাল ফল পেতে জার্মানি ও ফ্রান্স নরম্যান্ডিতে শিগগিরই একটি বৈঠকে মিলিত হবে বলে একমত হয়েছেন নেতৃবৃন্দ। ক্রিমিয়া দখলের অভিযোগে ২০১৪ সালে রাশিয়াকে বাদ দেওয়া হয়। নেতৃবৃন্দ স্থিতিশীল লিবিয়া গঠনে সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান এবং যুদ্ধবিরতির জন্য চুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও জার্মান চ্যান্সেলর মার্কেল ব্রেক্সিট ইস্যুতে কথা বলেন। এদিকে গতকালই ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে ফ্রান্স ত্যাগ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।