জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ রহিত করা হয়েছে, তবে এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা বহাল রাখা হয়েছে। এই নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিধান প্রণয়ন করবে। এই সিদ্ধান্ত দেশে সাইবার অপরাধ মোকাবেলা এবং সাইবার স্পেসের সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
Table of Contents
সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ বাতিলের পেছনের কারণ
বাংলাদেশের সরকার গত বুধবার সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ রহিত করে এক নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করা, সাইবার স্পেসে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, অপরাধের বিচার এবং আনুষঙ্গিক বিষয়ে আইন প্রণয়ন করা। এই অধ্যাদেশে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরিত সার্কুলার মার্ক করা হয়েছে, যা জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে প্রকাশ করা হয়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংগঠন ইতোমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে যে, সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রয়োজনীয়, তবে এর কিছু ধারা অনেক বেশি কঠোর ছিল। এই কারণে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু ধারাকে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশের মূল বিষয়বস্তু
নতুন অধ্যাদেশটি সরকারের পক্ষ থেকে সদ্য বলবৎ করে দেওয়া আইনটির ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২, ২৩, ৩০, ৩২ ও ৩৫ ধারাগুলো বহাল থাকবে। অর্থাৎ, এই ধারাগুলো সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। এ ছাড়া, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সাইবার অপরাধ শনাক্তকরণ ও প্রতিরোধের জন্য নতুন পদক্ষেপ এবং যেসব অপরাধ আইনত দন্ডনীয় তা স্পষ্টীকরণ করা হবে।
সাইবার অপরাধ এবং এর বিধিনিষেধ
সাইবার অপরাধের সাথে যুক্ত নয় এমন কার্যক্রমগুলোও চিহ্নিত করা হয়েছে, এবং এ জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সাইবার স্পেসে নিরাপদ থাকতে হলে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকার বিভিন্ন সচেতনতা কার্যক্রমও চালাবে।
এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করার পেছনে সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, আইনটিকে বাস্তবতার সাথে শক্তিশালী করা, যা সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় আরো কার্যকরী হবে।
জনমত এবং প্রতিক্রিয়া
বর্তমান তরুণ বাজার ও তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে সাইবার অপরাধের প্রভাব ক্রমে বেড়ে চলেছে। এই অধ্যাদেশের ঘোষণার পর অনেকেই তা সমর্থন করেছেন, তবে কিছু বিশ্লেষক বলছেন, কিছু নির্দিষ্ট ধারা বজায় রেখে আইনটির উন্নয়ন প্রয়োজন। তরুণ সমাজে সাইবার অপরাধের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের প্রয়োজন উল্লেখ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি সংস্থার মধ্যকার সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করা যাবে। এ ধরনের উদ্যোগই ভবিষ্যতে সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ বাতিল হলেও সাইবার অপারেশন এবং সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। এটি শুধুমাত্র একটি পরিবর্তন নয়, বরং সাইবার নিরাপত্তার ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ
সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে আলোচনা শুধু বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ নয়; আন্তর্জাতিকভাবে এটি একটি গুরুতর ইস্যু। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ তাদের সাইবার নিরাপত্তার আইন চেক করছে এবং পরিবর্তনের দিকে নজর দিচ্ছে। সরকারের সাইবার নিরাপত্তার রূপরেখা কিভাবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, এ বিষয়টি সময়ের সাথে পরিষ্কার হবে।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এই আইন সম্পর্কিত সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং সি.এস.আর., সিকিউরিটি ও এথিক্যাল হ্যাকিং বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা হবে।
সাইবার নিরাপত্তার সংস্কার সম্পর্কে নতুন অধ্যাদেশের এসব বৈশিষ্ট্য বিশেষজ্ঞদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। তাদের মতে, এই আইনের মাধ্যমে সাইবার অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আশা করা হচ্ছে, এই উদ্যোগ দেশের সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
আপডেট ও তথ্যের প্রতি নির্ভরযোগ্যতার জন্য আপনি আরও তথ্য পেতে পারেন US-CERT এর ওয়েবসাইট থেকে।
FAQs
- সাইবর নিরাপত্তা আইন ২০২৩ কেন বাতিল হলো?
- সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া, আন্তর্জাতিক উদ্বেগ এবং কার্যকরী ব্যবস্থার অভাবের কারণে বাতিল করা হয়েছে।
- কোন ধারাগুলো সাইবার নিরাপত্তা আইন থেকে বহাল রাখা হয়েছে?
- অধ্যাদেশে ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২, ২৩, ৩০, ৩২ ও ৩৫ ধারাগুলো বহাল রাখা হয়েছে।
- নতুন অধ্যাদেশের বৈশিষ্ট্য কি?
- নতুন অধ্যাদেশ সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ এবং বিচার সংক্রান্ত বিধান নিশ্চিত করবে।
- কিভাবে সাইবার নিরাপত্তা আইনগুলোর কার্যকারিতা বাড়ানো হবে?
- বিভিন্ন সচেতনতা কার্যক্রম এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা আইনগুলোর কার্যকারিতা বাড়ানো হবে।
- সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে?
- সাইবার অপরাধ শনাক্তকরণ ও প্রতিরোধের জন্য বিশেষ নির্দেশনামা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
- সরকারের সাইবার নিরাপত্তার লক্ষ্যে আবার কি পরিবর্তন আসতে পারে?
- ভবিষ্যতে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন ও দেশের প্রয়োজন অনুসারে নতুন পরিবর্তন আসতে পারে।
Disclaimer: This article is intended for informational purposes only and should not be construed as professional advice. Content accuracy is checked to the best of our ability but is subject to change. Always verify directly with official sources.
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।