বাবল বা বুদবুদ খুব মজার জিনিস। হবে নাই-বা কেন? সাবান-পানি, একটুখানি বাতাস আর একটা স্ট্র (নল)! এই তিনটা জিনিস হলেই বুদবুদ বানানো যায়। প্রায় স্বচ্ছ দেখতে এসব বাবল বাতাসে ভেসে বেড়ায়। দেখতে দারুণ লাগে। আবার কিছুর ছোঁয়া লাগলেই—ফটাস! ফেটে আবার মিলিয়ে যায় বাতাসে। কিছু সময় পরে অবশ্য ফেটে যায় এমনিতেও। মোট কথা, বেশি সময় থাকে না। তারপরও বাবল বা বুদবুদ মজার জিনিস। ছোটবেলায় আপনিও হয়তো নানা কায়দায় এই বাবল বানিয়ে খেলেছেন।
বন তুলসীর কষ হোক আর সাবানের ফেনা—যা দিয়েই বাবল তৈরি করা হোক না কেন, একই ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ পেছনের বিজ্ঞানটা এক। বিশেষ ধরনের রাসায়নিক গঠনের কারণে এসব উপাদানের মধ্য দিয়ে বাতাস পেরোতে পারে না। ফলে যখন ফুঁ দেওয়া হয়, তখন অল্প পরিমাণ বাতাসের চারপাশে উপাদানগুলো (সাবান-পানি বা বন তুলসীর কষ) একটা পাতলা আবরণ তৈরি করে। বাতাস প্রায় সবদিকে সমান চাপ দেয়। তাই ঘাসের গিঁট বা স্ট্র-এর মুখ গোলাকার হলে বাবলগুলো প্রায় সুষম গোলক হয়। এর পেছনে খুব মজার একটা পদার্থবিজ্ঞানের নীতি কাজ করে। বায়ুচাপ।
বাতাস যে নানা রকম অণু-পরমাণু দিয়ে তৈরি, এটা তো আমরা জানি। শুধু বাতাস কেন, সব গ্যাসই অণু-পরমাণু দিয়ে তৈরি। তবে কঠিন বা তরল পদার্থের মতো অণুগুলো এখানে একে অন্যের খুব একটা কাছে থাকে না। একটু দূরত্ব বজায় রেখে ছোটাছুটি করতে থাকে। একটা অন্যটাকে ক্রমাগত ধাক্কাতে থাকে। ফলে আবদ্ধ জায়গায় একধরনের চাপ তৈরি হয়।
নানা কায়দা বলছি, কারণ সাবান-পানি ছাড়াও বাবল বানানো যায়। ছোটবেলায় যাঁরা গ্রামে বড় হয়েছেন, তাঁরা জানেন, ঘাসের কাণ্ড আর বন তুলসী বা বন মরিচ গাছের কষ দিয়ে বাবল তৈরি করা যায়। গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ এই বন তুলসী। এর বৈজ্ঞানিক নাম, ক্রোটন বনপ্ল্যান্ডিয়ানাস (Croton bonplandianus)।
এর কচি ডাল ভাঙলে একধরনের কষ বেরোয়। এই কষ অনেকটা সাবান-পানির মতো ঘন ও পিচ্ছিল। ঘাসের কাণ্ডে গিঁট দেওয়ার সময় গিঁটের মাঝে কিছুটা ফাঁক রাখতে হয়। তারপর ফাঁকা জায়গাটুকু ভরে ফেলতে হয় বন তুলসীর কষ দিয়ে। এরপর কায়দা করে গিঁটের একপাশ থেকে ফুঁ দিলেই নানারকম বাবল বেরোয় সামনে দিয়ে। এবারে একটু সতর্কবার্তা দিয়ে দিই (ইংরেজিতে যাকে বলে ডিসক্লেইমার)। বন তুলসীর কষ ভীষণ তিতকুটে। সাবান-পানির মতোই, চোখে গেলে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া শুরু হয়। তাই এ নিয়ে খেলার সময় খুব সাবধান থাকা উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।