জুমবাংলা ডেস্ক : “৫ বছর বয়সী আফিফা বাবাকে দেখতে চায়। মেয়ে এখনও বোঝে না; বার বার বলছে, ‘বাবা আর আসবে না? আবার কবে আসবে? বাবার মাথাব্যথা কবে ভালো হবে?’,” কথাগুলো বলছিলেন গত ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রবাড়ি এলাকায় গুলিতে নিহত হওয়া মো. আবদুন নূরের ছোট বোন সুমাইয়া সিফা।
তিনি বলেন, “আফিফা বুঝতে পারছে না ওর বাবা আর ফিরে আসবে না।”
তিনি আরও জানান, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গিয়ে যাত্রাবাড়ি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় আমার ভাই।”
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের পাশাপাশি সেদিন সারাদেশে বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান এবং মঙ্গলবার ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ আন্দোলনে যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন আবদুন নূর।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্ট যারা মারা যান ৩০ বছর বয়সী মো. আবদুন নূর। তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার ডিগ্রি ভূমি গ্রামে। বাবার নাম আবুল বাসার।
ছবিতে দেখা গেছে মাথায় গুলি লেগে খুলি ভেঙে রক্তে রঞ্জিত হয় আবদুন নূরের সারা দেহ। পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি এবং পায়জামা।
সুমাইয়া সিফা বলেন, “মৃতদেহ কোনো একজন নিয়ে আসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। পাঞ্জাবীর পকেটে থাকা কাগজপত্র ও সাংবাদিক কার্ড দেখে শনাক্ত করা হয় লাশের পরিচয়।”
“৫ আগস্ট রাতে বাবার কাছে ফোন আসে যে, ছেলের লাশ ঢাকা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছে। গুলিতে নিতহ হয়েছেন তিনি। এরপর আমাদের আত্মীয়রা গিয়ে লাশ নিয়ে আসেন। নানাবাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার লংগাইর গ্রামে নানার কবরের পাশে মাটি দেওয়া হয়েছে তাকে, বলছিলেন সুমাইয়া সিফা।
তিনি আরও জানান, “মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে মা ও ভাবি বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। তাদের সামলাতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। ভাবির অল্প বয়স, ভাই হারানোর শোকের সঙ্গে এখন কীভাবে পরিবারের খরচ চলবে, আর আফিফাকে কীভাবে বড় করবো– এটাই চিন্তা।”
সুমাইয়া সিফা জানান, যাত্রাবাড়ির শনির আখড়া এলাকায় একটি মেসে ভাড়া থাকতেন তার ভাই। ভাবি বাচ্চা নিয়ে থাকতেন তার বাবার বাড়িতে।
তিনি বলেন, “ভাইয়া চাপাতা, চিনিসহ মুদি সামগ্রী দোকানে দোকানে পাইকারি বিক্রি করতেন। সেই আয় দিয়েই সংসারের খরচ চালাতো। ২ মাস আগে একটি অনলাইন পত্রিকায় কাজ শুরু করেছিলেন।”
ঢাকা মেডিকেলে মো. আবদুন নূরের সাথে অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক আজকের গোয়েন্দা সংবাদ এর সাংবাদিক লেখা কার্ড ছিল।
দৈনিক আজকের গোয়েন্দা সংবাদ এর সম্পাদক ও প্রকাশক এস. এম. কে. মিজান এ বিষয় বলেন, “২ মাস আগে আবদুন নূরকে শিক্ষানবিশ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”
“তবে তাকে মাঠে কোনো সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য আমরা পাঠাইনি। আবদুন নূর এই অল্প বয়সে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহিদ হয়েছেন,” যোগ করেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।