লাইফস্টাইল ডেস্ক: যে কোনো বয়সী নারী কিংবা পুরুষের মধ্যেই বারবার পানি পিপাসা পাওয়ার প্রবণতা থাকতে পারে। বারবার পানি পিপাসা পাওয়ার কারণে আপনার মূত্রত্যাগের বেগও বাড়তে থাকে। বিষয়টি সাধারণ চোখে স্বাভাবিক মনে হলেও চিকিৎসাশাস্ত্রে বিষয়টি মোটেও স্বাভাবিক নয়।
এ ধরনের সমস্যা শিশু বয়সে যেমন হতে পারে তেমনি সমস্যাটি দেখা দিতে পারে মধ্য কিংবা বৃদ্ধ বয়সে। চিকিৎসকরা বলছে, অস্বাভাবিক এই প্রবণতা মূলত একটি রোগ। এর নাম ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস।
যেহেতু নামটি ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস তাই অনেকে মনে করে বেশি বার মূত্রত্যাগ মানেই হলো ডায়াবেটিসের লক্ষণ। বিষয়টি কিন্তু মোটেও তা নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, ডায়াবেটিস মূলত তিন প্রকার। টাইপ ১, টাইপ ২ এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। এখানে টাইপ ১, টাইপ ২ ধরনকে ডায়াবেটিস মেলিটাস বিবেচনা করা হয়। এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বিষয়।
এই রোগটির সঙ্গে শর্করা বা গ্লুকোজের কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক রয়েছে পানির। তাই ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস হচ্ছে পানি ভারসাম্য ও নিয়ন্ত্রণের ব্যাধি।
এ ব্যাধিতে আক্রান্ত লোক সবসময় তৃষ্ণার্ত থাকে। চোখ, মুখ শুষ্ক থাকে। মস্তিষ্ক ক্লান্ত ও দুর্বল অনুভব করে। শরীরে দেখা দেয় ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যা। এতে করে ওজন কমে যায় এবং স্মৃতি ফেকাসে ও মনোযোগে সমস্যা দেখা দেয়।
নিম্ন রক্তচাপ, মাথাব্যথা, দ্রুত হৃদস্পন্দনকে এ রোগের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় থাকে না। পাশাপাশি ব্রেইনও পর্যাপ্ত এডিএইচ উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস অটোইমিউন রোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এ ছাড়া ট্রমা, পিটুইটারি সার্জারি এবং স্ট্রোকের কারণেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা রয়েছে।
কম্প্রিহেনসিভ ব্লাড টেস্টের মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা যায়। এই টেস্টের মাধ্যমে হরমোন, ভিটামিন ও মিনারেলের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। পরীক্ষায় ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস ধরা না পরলে কোন কারণে বারবার প্রস্রাবের বেগ হচ্ছে তার কারণ খুঁজে বের করুন।
আর যদি টেস্টে ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস ধরা পড়ে তবে রোগীর প্রধান চিকিৎসা ভেসোপ্রেসিন। ভেসোপ্রেসিন একটি কৃত্রিম হরমোন যা এডিএইচকে অনুকরণ করতে পারে। নাকের স্প্রে, ট্যাবলেট কিংবা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে এই ওষুধ রোগীর শরীরে প্রবেশ করানো হয়।
চিকিৎসার এমন পদ্ধতিতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সক্ষম হয় ডায়াবেটিস ইনসিপিডাসে আক্রান্ত রোগীরা। তাই এই সমস্যায় আক্রান্ত হলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।