স্পোর্টস ডেস্ক: গ্রানাডার কাছে আগের ম্যাচে হার বড় এক সঙ্কটেই ফেলে গেছে বার্সেলোনাকে। হারলেই কার্যত ছিটকে পড়তে হবে লা লিগার শিরোপার দৌড় থেকে। এমন সমীকরণের সামনে থেকে সোমবার রাতে পরাজয়ের শঙ্কাতেই পড়ে গিয়েছিল বার্সা। তবে লিওনেল মেসি যখন দলে থাকেন, তখন আর চিন্তা কিসে? তার জোড়া গোলেই শেষমেশ ভ্যালেন্সিয়ার মাঠ থেকে ফিরেছে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে, লিগ পুনরুদ্ধারের ‘জীবিত’ আশা নিয়েও।
লিগে আগের ম্যাচে হার, সেদিনের লাল কার্ডে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে বার্সা ডাগআউটে ছিলেন না কোচ রোনাল্ড কোম্যান। এর সঙ্গে আবার রোববার রাতেই রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকো নিজেদের ম্যাচে জিতে চাপ বাড়িয়ে রেখেছিল কাতালানদের ওপর। তার ওপর ইতিহাসও কথা বলছিল মেসিদের বিপরীতে। ভ্যালেন্সিয়ার মাঠ মেস্তায়ায় শেষ তিন ম্যাচের একটিতেও যে জিততে পারেননি মেসিরা। সেই দুই ড্র কিংবা এক হারের পুনরাবৃত্তি সোমবার রাতের ম্যাচে হলেই লিগ থেকে ছিটকে যেত কোম্যানের শিষ্যরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে যখন গোলটা হজম করল বার্সা, সে শঙ্কা আরও বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল দলটির সামনে। কার্লোস সোলেরের করা কর্নার ঠেকাতে মেসি ছেড়ে এসেছিলেন গোলপোস্ট, সতীর্থ আর প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের বাঁধা পেয়ে লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। কিন্তু সোলেরের কর্নারটা ছিল ফারপোস্টে, সেখানে অনেকটা অরক্ষিত ভাবে ছুটে এসে গোল করেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল পাওলিস্তা।
এর আগে ম্যাচের শুরুটা অবশ্য বেশ ভালোই করেছিল বার্সা। শুরুতে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের পাস থেকে সুযোগ নষ্ট করেন পেদ্রি গঞ্জালেজ, এর কিছু পর মেসির ফ্রি কিকে মাথা রোনাল্ড আরাউহোর ফ্লিক সরসরি গিয়ে জমা পড়ে ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক ইয়াসপার সিলেসেনের হাতে। এরপর মেসির ফ্রি কিক লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বিরতির আগে গোলের দেখা আর পায়নি দুই দলের কেউ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ভ্যালেন্সিয়ার সে গোল।
তবে বার্সার প্রথম গোলটা হলো ভ্যালেন্সিয়ার গোলটা থেকেও বেশি ঘটনাবহুল। মেসির ক্রস অবৈধভাবে থামিয়ে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক টনি লাতো। পেনাল্টি থেকে মেসি নেন দুর্বল এক শট, তা ঠেকাতে বেগ পেতে হয়নি গোলরক্ষক সিলেসেনকে। ফিরতি চেষ্টায় পেদ্রির শটও প্রতিহত হয় গোলরেখা থেকে, এরপর ফাঁকায় থেকে মেসি বলটা জড়ান জালে, সমতায় ফেরে বার্সা।
বার্সেলোনা এরপর এগিয়ে যেতে সময় নিল মোটে ছয় মিনিট। জর্দি আলবার ক্রসে মাথা ছোঁয়ালেও প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ঠেকান সেটা, তবে ফিরতি সুযোগে অ্যান্টোয়ান গ্রিজমান বলটা জড়ান জালে। এরও ছয় মিনিট পর বক্সের একটু বাইরে ফ্রি কিক পায় বার্সা। লিওনেল মেসির দুর্দান্ত এক ফ্রি কিকে ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। চলতি লিগে এটি ছিল মেসির ২৮তম গোল, যা ক্যারিয়ারের অষ্টম পিচিচি জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে আর্জেন্টাইন তারকাকে।
তবে ম্যাচের শেষটা মোটেও আশানুরূপ হয়নি বার্সার। ৩-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ারর পরই দারুণ চাপে পড়ে যায় কাতালানরা। ৮৩ মিনিটে ৩৫ গজ দূর থেকে যখন গোলটা করলেন কার্লোস সোলের, আরও একটা পয়েন্ট হারানোর শঙ্কায় তখন কাঁপছে বার্সা শিবির। তবে এরপর ম্যাচটা শেষ হয়েছে নাটক ছাড়াই।
এই জয়ের ফলে ৩৪ ম্যাচ থেকে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা আছে তালিকার তিনে। একই সংখ্যক ম্যাচে বার্সার সমান পয়েন্ট জিতলেও দুই ক্ল্যাসিকোয় জয়ের কারণে রিয়াল আছে তালিকার দুইয়ে।
সামনের সপ্তাহটা সম্ভাব্য শিরোপা নির্ধারণী সপ্তাহ। আগামী শনিবার রাতে বার্সেলোনা নিজেদের মাঠে আতিথ্য দেবে শীর্ষে থাকা অ্যাটলেটিকোকে। আর পরদিন দুইয়ে থাকা রিয়াল খেলবে তালিকার চারে থাকা সেভিয়ার বিপক্ষে। সেদিনের জয়-হারই গড়ে দিতে পারে চলতি মৌসুমে লা লিগার ভাগ্য। সে সপ্তাহের আগে এমন এক জয় মেসিদের যে উজ্জীবিত করবে, তা একরকম নিশ্চিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।