দীর্ঘ সময়ের সম্পর্ক চুকিয়ে ২০২১ সালে অশ্রুভেজা চোখে বার্সেলোনা ছেড়েছিলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। তার সেই বিদায়টা সুখকর কিছু ছিল না। কিন্তু সেই তিক্ততা ভুলেই ফের কাতালান ক্লাবটিতে ফিরতে চেয়েছিলেন। যদিও তেমনটা আর হয়ে উঠেনি। পরে ২০২৩ সালে পাড়ি জমান ইউরোপের চেয়ে অনেক দূরে। বার্সায় ফিরতে না পারা এবং ক্লাবটিতে তার লিগ্যাসি ধরে বড় তারকা হতে যাওয়া লামিনে ইয়ামালকে নিয়ে কথা বলেছেন মেসি।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) তিনি ইউটিউব চ্যানেল ‘সিম্পলি ফুটবল’-এ একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানেই মেসির সামনে প্রসঙ্গ তোলা হয় অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ফুটবল এবং নিজের পরিবার সম্পর্কে। ২০২৩ সালে পিএসজি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্র এমএলএসের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার আগে বার্সায় গুঞ্জন উঠেছিল এই আলবিসেলেস্তে তারকার। এমনকি সেই সময়ের কাতালান কোচ জাভি হার্নান্দেজও এ নিয়ে দু’পক্ষের যোগাযোগের কথা বলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর তেমন কিছু হয়নি।
স্প্যানিশ ঠিকানায় প্রত্যাবর্তন না করার নেপথ্য কারণ জানিয়ে মেসি বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের পর আমি বার্সা ছাড়া অন্য কোনো ইউরোপীয় দলের হয়ে খেলতে চাইনি। আমার লক্ষ্য ছিল ফিরে যাওয়া, আমার বাড়িতে ফেরা, যেখান থেকে সবকিছু শুরু হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটি সম্ভব হয়নি। ওই সময়ে সিদ্ধান্তটি ছিল পারিবারিক। আমরা তখন বিশ্বকাপ জিতেছি এবং তার একটি বড় প্রভাব ছিল। আমার বিষয়টা ছিল পরিস্কার, ইউরোপের অন্য ক্লাবে যেতে চাইনি। পরে পরিবারের চাওয়ায় নতুন অভিজ্ঞতা নিতে মায়ামিতে এসেছি।’
বার্সেলোনায় মেসির ফেরাটা কেন অসম্ভব ছিল তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। যে কারণে তাকে কাতালান ক্লাব থেকে অনেকটা বাধ্য হয়েই চলে যেতে হয়েছিল, সেই একই আর্থিক কারণ বার্সার মাথায় খড়গ হিসেবে বসেছিল। মেসিকে বছরে তখন ২১ মিলিয়ন ইউরো বেতন দিতে হলে কয়েকজন ফুটবলারকে বেচে দিতে হতো বার্সার। নয়তো তারা স্প্যানিশ লিগ থেকে আর্থিক নিষেধাজ্ঞায় পড়ত। যা মেসি-বার্সার মিলনের পথে দেয়াল তৈরি করে।
এদিকে, মাত্র ১৭ বছর বয়সেই মেসির যোগ্য উত্তরসূরী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন লামিনে ইয়ামাল। স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ডকে নিয়ে আগেও কথা বলেছেন মেসি। এবারও প্রশংসায় পঞ্চমুখ এই বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক, ‘ইতোমধ্যে স্পেনের হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়ন লামিনে ইয়ামাল, সে যা দেখাচ্ছে তা অসাধারণ। মাত্র ১৭ বছর বয়স, সময়টা এখনও উন্নতির পর্যায়ের এবং সে প্রতিনিয়ত বড় ফুটবলার হিসেবে নিজের খেলায় নতুন কিছু যোগ করছে, যেমনটা আমি করেছি। তার দুর্দান্ত কিছু গুণ আছে এবং ইতোমধ্যেই সে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার।’
মেসি ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন পিএসজি ছেড়ে। এরপরই তার সতীর্থ হিসেবে ফ্লোরিডার ক্লাবটিতে নাম লেখান বার্সেলোনার সাবেক সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ, সার্জিও বুসকেটস ও জর্দি আলবা। তারকাসমৃদ্ধ দল নিয়ে গত মৌসুমেই মায়ামি প্রথমবারের মতো সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছে। জায়গা নিশ্চিত করেছে আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপেও। এ ছাড়া এবারের এমএলএসের ইস্টার্ন কনফারেন্সে সাত ম্যাচে চার জয় ও তিন ড্রয়ে ১৫ পয়েন্ট চারে অবস্থান মায়ামির।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।