জুমবাংলা ডেস্ক: পদ্মা ও মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন এবং প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৩৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে চাঁদপুরের লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ (১ আগস্ট) দুপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান।
এর আগে গতকাল (৩১ জুলাই) দুদক সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদনের বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, অনুসন্ধানে সেলিম খানের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণও মিলেছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে সেলিম খানের নামে ৩৬ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাটসহ সম্পদের দালিলিক মূল্য অনুযায়ী মোট সম্পদের হিসাব করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তিনি সম্পদের দাম কম উল্লেখ করে দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন। প্রকৃত ও বাজারমূল্য অনুযায়ী তার নামের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য শতকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
বালুখেকো হিসেবে পরিচিত সেলিম খানের বিরুদ্ধে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। সরকারের অনুমোদন ছাড়া উত্তোলন করা বালু বিক্রির অর্থ ভাগবাটোয়ারা করেছেন তার এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাঝে। তিনি তার মালিকানাধীন সেলিম এন্টারপ্রাইজের ২০০টি ড্রেজারের মাধ্যমে প্রায় এক দশক ধরে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে সরকারি অর্থ আত্মসাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও রয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানে সেলিম খানের নামে পাওয়া সম্পদের মধ্যে স্থাবর সম্পদ ২৯ কোটি ৩৮ লাখ ৪১ হাজার টাকার। অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ২৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকার। ৯টি চলচ্চিত্র নির্মাণে বিনিয়োগ করা হয়েছে ৬ কোটি ২৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা। তার নামে একাধিক বহুতল বাড়ি, একাধিক গাড়ি, বিপুল পরিমাণ জমি, ফ্ল্যাট, আগ্নেয়াস্ত্র, স্বর্ণালংকার, ব্যাংকে জমানো বিপুল টাকার তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। তার সম্পদের মধ্যে রয়েছে- চাঁদপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৪০টি দলিলে বিপুল পরিমাণ জমি, রাজধানীর কাকরাইলে সাততলা ভবন, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগড় এলাকায় দশতলা ভবন, কাকরাইলের আজমিন টাওয়ারে চারটি ফ্ল্যাট, কাকরাইলের আরেকটি ভবনে ফ্ল্যাট। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তার নামে ফ্ল্যাট রয়েছে।
চাঁদপুর সদরে সেলিম খান একটি বাড়ি কিনেছেন ৫ কোটি টাকায়। লক্ষ্মীপুর মৌজায় প্রায় এক বিঘা জমিতে সিনেবাজ ফিল্মসিটি নামে দুইতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে সুইমিংপুলও করা হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে ৩-৪ কোটি টাকা। চাঁদপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সঙ্গে প্রায় দুই বিঘা জমিতে সিনেবাজ ফিল্মসিটি মার্কেট করা হয়েছে। রাজধানীর কাকরাইলের করিম ম্যানশনে তার শাপলা মিডিয়া হাউসের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।