জুমবাংলা ডেস্ক : তীব্র তাপদাহের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কে পানি ছিটানো হয়েছে। মঙ্গলবার পৌরসভার উদ্যোগে বিশেষ কায়দায় পানি ছিটানো হয়। তবে বাসা-বাড়িতে সংকট রেখে সড়কে পানি ছিটানো নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, শিবগঞ্জ পৌরসভার অধীনে মাত্র ২ হাজার ৪৬১টি আবাসিকে পানির সংযোগ রয়েছে। প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যে এসব গ্রাহককেও পর্যাপ্ত সরবরাহ করা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই এ নিয়ে অভিযোগ শুনতে হচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাওয়ায় নতুন করে পানির সংযোগ দেওয়া যাচ্ছে না।
পৌরসভার সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পানির সংযোগ নেওয়ার জন্য এখনো ৪ হাজার ৮০০ গ্রাহকের আবেদন জমা পড়ে আছে। কবে নাগাদ তাদের সংযোগ দেওয়া যাবে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। এমন পরিস্থিতিতে পৌর কর্তৃপক্ষের সড়কে পানি ছিটানো কার্যক্রম সমালোচনার মুখে পড়েছে। অনেকে এ নিয়ে হাস্যরস ও ট্রল করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে।
মঙ্গলবার একটি ড্রাম ট্রাকে তিনটি ট্যাংকি স্থাপন করে শিবগঞ্জ বাজার এলাকায় সড়কে পানি ছিটানো হয়। তিনটি ট্যাংকির পানির ধারণ ক্ষমতা এক হাজার লিটার করে। দুইবারে মোট ছয় হাজার লিটার পানি ছিটানো হয়। প্রচণ্ড দাবদাহে কিছুটা স্বস্তি ফেরাতে এ উদ্যোগ নেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌর মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলাম নিজে এ কার্যক্রমের তদারকি করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, বাসা-বাড়িতে চাহিদা মতো পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আগের মতো পানির ফ্লো নেই। মানুষ খুবই কষ্টে আছে পৌরসভার সরবরাহ করা পানি সংকটের কারণে।
আরেকজন জানান, তিনি চার মাস আগে পানির সংযোগের জন্য আবেদন করেছেন কিন্তু সংযোগ দিতে পারেনি। যেখানে বাসা-বাড়ি পানির সংযোগ দিতে পারে না, সেখানে রাস্তায় পানি ছিটানো বিলাসিতা।
জালমাছমারি এলাকায় এক ব্যক্তি বলেন, এ এলাকায় মেয়রের বাড়ি, অথচ এখানেও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। সস্তা জনপ্রিয়তা নেওয়ার জন্য মেয়র রাস্তা-ঘাটে পানি ছিটাচ্ছেন।
পানি সংকটের কথা স্বীকার করেছেন পৌর কাউন্সিলররাও। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজিজুল ইসলাম জানান, পানি সংকট নিয়ে নাগরিকরা প্রতিনিয়ত তাদের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন। কিন্তু তাদের জন্য কিছু করা যাচ্ছে না।
শিবগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মোনায়েম জানান, কিছু এলাকায় পানি নিয়ে সমস্য হয়েছে। আমরা সমাধানের চেষ্টাও করছি। পাশাপাশি প্রচণ্ড গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়েছে, তাই কিছুটা সংকট হতে পারে।
শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বলেন, এই প্রচণ্ড গরমে মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতেই সড়কে পানি ছিটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পানি ছিটানোর ফলে বাতাসে শীতলতা আসবে। যারা এ গরমেও বাইরে বের হয়েছেন তারা স্বস্তি পাবেন।
বাসা-বাড়িতে পানি সংকট রেখে সড়কে ছিটানোর সমালোচনা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, কিছু মানুষ সমালোচনা করবেই। তবে দায়িত্বশীল মানুষেরা এটা নিয়ে সমালোচনা করতে পারে না।
তিনি বলেন, পানি সমস্যা দূরীকরণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরইমধ্যে একজন প্রকল্প পরিচালকও শিবগঞ্জ ঘুরে গেছেন। হয়তো দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।