জুমবাংলা ডেস্ক : হাইকোর্টের আইনজীবী বিপ্লব কুমার রায়। ৩০শে জুলাই ফরিদপুরের নিজ বাড়ি থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। গুলিস্তান নেমে একটি সিএনজি নিয়ে তিনি উত্তরার বাসায় যাচ্ছিলেন। মহাখালী পৌঁছালে তাকে বহনকারী সিএনজি বিকল হয়ে যায়। পরে তিনি একটি যাত্রাবাহী বাসে ওঠেন। বাসটি উত্তরায় পৌঁছালে দেখেন তার সঙ্গে থাকা লাগেজ উধাও। যেটাতে সদ্য বিয়ে করা স্ত্রীর ২০ ভরি স্বর্ণের গহনা ছিল। এ ঘটনায় তিনি উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন। দীর্ঘ আড়াই মাস তদন্ত করে ১ হাজার বাসে অভিযান চালিয়ে ওই স্বর্ণালংকারসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তাররা হলো- আকাশ, রতন, রাজু ও মানিক।
ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন এবং বাস শনাক্তে ওই রুটে চলাচলকারী (মহাখালী-উত্তরা-গাজীপুর) এক হাজারের বেশি বাস, বাসের চালক ও হেলপারকে নজরদারি ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পরবর্তীতে আড়াই মাস পর বাসটি শনাক্ত করা যায়। রোববার গাজীপুর থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন- বাসের চালক, তার সহকারী এবং অন্য দুইজন। তাদের কাছ থেকে খোয়া যাওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ভুক্তভোগী পরিবারকে তা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ঘটনার পর ডিবির একাধিক টিম ওই রুটে চলাচল করা আজমেরি গ্লোরি বাসটি শনাক্তে মাঠে নামে। যে বাসে ঘটনা ঘটেছে সেটা বের করতে হাজারের বেশি বাস, চালক ও হেলপারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে ও খোয়া যাওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধার করতে আড়াই মাস চেষ্টা করে উত্তরা টিম। ভুক্তভোগী শুধু বাসের নাম আজমেরি গ্লোরি বলতে পেরেছেন। এ ছাড়া তিনি আর কোনো তথ্য দিতে পারেননি। যে কারণে এত লম্বা সময় লেগে যায় বাস শনাক্তে। ঘটনার সময়ের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে প্রথমে কাজ করা হয়। যত সময় যাচ্ছিল, ঘটনার রহস্যের জটিলতা কাটছিল। সবশেষ রোববার রাতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।
আইনজীবী বিপ্লব কুমার রায় বলেন, কিছুদিন আগেই বিয়ে হয়েছে আমার। স্ত্রীর বাবার বাড়ি থেকে যে স্বর্ণালংকার পেয়েছি সেগুলো গ্রামের বাড়িতে ছিল। যেহেতু গ্রামে কেউ থাকে না তাই নিরাপত্তার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসছিলাম। ভাবছিলাম এগুলো ব্যাংকের লকারে রাখবো। ওইদন বোয়ালমারী থেকে ঢাকায় এসে গুলিস্তানে নামি। সেদিন ঘটনাচক্রে উবার বা পাঠাও’র কোনো গাড়ি পাচ্ছিলাম না। এরপর সিএনজি নিয়ে উত্তরার বাসায় ফিরছিলাম। পথে মহাখালী আসার পর সিএনজি নষ্ট হয়ে যায়। মহাখালী নেমে আবারো অনলাইনে গাড়ি ডাকার চেষ্টা করি। এ সময় গাজীপুরগামী আজমেরি গ্লোরি পরিবহনের একটি বাস আসে। বাসের হেলপার আমাকে জিজ্ঞেস করে কোথায় যাবেন? উত্তরায় বলায় আমার সঙ্গে থাকা লাগেজ গাড়িতে তুলে দেয়। লাগেজসহ আমি চালকের পাশে বসি। গন্তব্যে নামতে গিয়ে দেখি লাগেজ নেই। ব্যাংকের লকারে রাখার জন্য গহনাগুলো আনার পথে হারিয়ে ফেলায় স্বজনদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়। নতুন আত্মীয়দের সঙ্গে মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যায়। যদিও আড়াইমাস পর পুলিশের সহযোগিতায় স্বর্ণালংকারগুলো উদ্ধার হয়। এতে নিজের সম্মান অক্ষুণ্ন্ন রইলো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।