আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সামাজিক মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দুই ধনকুবেরের মধ্যকার ‘কেজ ফাইট’ (খাঁচার লড়াই)! টুইটার প্রধান ইলন মাস্ক ও মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গের মধ্যে সম্মুখ সমর দেখার আশায় বসে নেটিজেনরা।
শুরুতে এটিকে রসিকতা মনে করা হলেও সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, সম্ভবত এই লড়াই সত্যি সত্যিই হতে যাচ্ছে।
দিন কয়েক আগে ইলন মাস্ক হঠাৎই টুইটারে মার্ক জাকারবার্গকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। কিন্তু বিষয়টা ছিল পুরোটাই মজার ছলে। তবে মার্ক সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণও করে নেন। জাকারবার্গ, মাস্ককে জিজ্ঞেস করেন, ‘কোথায় লড়াই হবে?’ তারপরই টেসলার মালিক ‘কেজ ফাইট’ এর চ্যালেঞ্জ জানান।
এই লড়াইয়ে জিতবেন কে, সেটা তো সময়ই বলবে। তবে এই যুদ্ধ নিয়ে কী ভাবছেন মিশ্র মার্শাল আর্টিস্টরা? তাদের কথায়, এই লড়াইয়ে জেতার সম্ভাবনা যোদ্ধাদের আকার আকৃতি ওপর নির্ভর করে না।
কেজ ফাইট বা মিশ্র মার্শাল আর্টস কী?
এই লড়াই দুই প্রতিপক্ষের মধ্যে বন্ধ খাঁচার মধ্যে হয়। বক্সিং, জুজুৎসু, কিক বক্সিং, কুস্তিসহ একাধিক ধরনের মার্শাল আর্টের ককটেল হলো এই এমএমএ বা কেজ ফাইট।
এবার এই এমএমএ লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছেন এমন দুই যুযুধান, যাদের লড়াই এতদিন সীমাবদ্ধ ছিল শুধুই সামাজিক মাধ্যমের গণ্ডিতে। সেই গণ্ডি পেরিয়ে এখন রিংয়ে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মাস্ক ও জাকারবার্গ। প্রথমজনের উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি, দ্বিতীয়জনের ৬ ফুট ২ ইঞ্চি। মাস্কের ওজন ৮৫ কেজি ও জাকারবার্গের ওজন ৭৫ কেজি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্ষেত্রে সামান্য সুবিধা পেতে পারেন মাস্ক। যদিও উচ্চতা এই লড়াইয়ে তেমন বড় ভূমিকা নেয় না।
নকআউট ফাইটক্লাবের মালিক মানান দাত্তাহ জানান, ‘এমন লড়াইয়ে উচ্চতা বা যোদ্ধার দেহের গঠন গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়। যোদ্ধার প্রশিক্ষণ ও মানসিকতার ওপরই নির্ভর করে লড়াইয়ের ভবিষ্যত।’
এই লড়াইয়ে বেশি করে কাজ করে যোদ্ধাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ও লড়াই ক্ষেত্রে তাদের আগ্রাসন। মানানের কথায়, ‘লড়াইয়ের আগেই মাস্কের মধ্যে যে আগ্রাসন দেখা যাচ্ছে, তা থেকেই তার মানসিকতা সম্পর্কে আন্দাজ পাওয়া যায়। এই মানসিকতা এগিয়ে রাখবে মাস্ককে।’
কেজ ফাইটের নিয়ম কী?
মার্শাল আর্টসের বিশেষজ্ঞদের মতে, এই লড়াইয়ে মেরুদণ্ড, কুঁচকি ও ঘাড়ে আঘাত করার কোনও অনুমতি নেই। এছাড়াও আঙুল দিয়ে চোখে আঘাত করা বা দেহের সংবেদনশীল অংশে আঘাত আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
দু’মিনিটের এক একটা রাউন্ড হয়। সব রাউন্ড মিলিয়ে বিচারকরা সিদ্ধান্ত নেন, কে জিতবেন। অনেক লড়াই আবার নকআউট মাধ্যমেও শেষ হয়। যেখানে প্রতিপক্ষকে ঘুষি, লাথি মেরে শুইয়ে দেওয়া। এছাড়াও ট্যাপ আউট অবলম্বন করে জেতা সম্ভব। এমনভাবে প্রতিপক্ষকে লড়াইয়ের ময়দানে শুইয়ে ফেলে ধরে রাখতে হবে, যেখানে শেষ পর্যন্ত তাকে হার মানতে বাধ্য করবে। এখন দেখার মাস্ক ও জাকারবার্গের মধ্যে কে বাজিমাৎ করবেন।
কোথায় হবে লড়াই?
প্রথমে এলন মাস্ক লাস ভেগাসের ইউএফসি অক্টাগনের কথা বললেও, এবার সেটাই পালটে হয়ে গেল রোমের কলোসিয়াম।
মধ্যওযুগে রোমের এই কলোসিয়াম গ্ল্যাডিয়েটরদের মুখোমুখি লড়াইয়ের প্রান্ত হিসাবে চিহ্নিত হত। প্রতিপক্ষে থাকত কখনও ক্ষুধার্ত পশু, কখনও আমৃত্যু লড়াইয়ের শর্তে থাকা দাস। সেই কলোসিয়ামকেই লড়াইয়ের ক্ষেত্র হিসাবে বেছে নিলেন বর্তমানে টেক দুনিয়ার দুই জায়ান্ট। শুক্রবার টুইট করে টেসলা সিইও জানান, ‘লড়াইটা কোলোসিয়ামে হলে কেমন হয়?’
সম্প্রতি মাস্ককে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম টিএমজেড জানিয়েছিল যে, রোমান অঙ্গনে লড়াইয়ের জন্য জাকারবার্গের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ইতালীয় প্রশাসন।
ইলন মাস্ক বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এবং বিশ্বের ১০তম ধনী ব্যক্তি মার্ক জাকারবার্গ। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, ২৯ জুন পর্যন্ত তাদের সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩৩৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ইলন মাস্কের ২৩১ বিলিয়ন এবং জাকারবার্গের ১০৩ বিলিয়ন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।