আবু সাঈদ, বেরোবি : ঋতু পরিক্রমায় এসেছে বসন্তকাল। মৃদু ঠান্ডা, শীত যায় যায় ভাব। এরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাহারি রঙের নতুন ফুলে সেজেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাস। চারদিকে ফুলের সমারোহ। মৃদু বাতাসে বাহারি ফুলের মিষ্টি গন্ধ, ফুলের সুবাস মাতিয়ে তোলে শিক্ষক- শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের মন । ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা পুরো ক্যাম্পাস। যা ক্যাম্পাসের পরিবেশে- প্রকৃতিতে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে প্রতিদিন দর্শনার্থীরা এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের বাগান। বিশেষ করে প্রশাসনিক ভবনের উভয় পাশ, কৃষ্ণচূড়া সড়ক ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবু সাঈদ গেইট সংলগ্ন দেবদারু সড়ক, আবাসিক হলের পাশে ক্যাম্পাসের প্রায় প্রতিটি স্থানে ফুলের বাগান করা হচ্ছে।তবে অন্য সব স্থানকে ছাপিয়ে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উত্তর এবং দক্ষিণ গেইটের সামনের অংশ। পুরো অংশ জুড়ে হলুদ, লাল, গোলাপী আর সবুজের সমারোহ ভালোলাগা সৃষ্টি করছে প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয়ে।
এ সব বাগানে ফুটেছে নানান প্রজাতির ফুল। গাঁদা,জাম্বু গাঁদা,ক্যালেন্ডুলা, পিটুনিয়া, ভাররবিনা, দেশি সিলভিয়া,হাইব্রিড গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, ড্যামথাস, ডালিয়া, গোলাপ, মোরগ ঝুঁটি, সূর্যমুখীসহ নানা প্রজাতির ফুল।
এদিকে প্রকৃতির টানে অবসরে বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে ক্যাম্পাসে আসছেন অনেকে।ছবি তুলছেন ফুলের সঙ্গে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে বেরোবির সবুজ ক্যাম্পাস।তবে বিকাল হলে দর্শনার্থীদের পদচারণা বাড়ে কয়েক গুণ। মাঝে মাঝে নতুন দম্পতিরা ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসে ফুলের সাথে ছবি তুলে নিজেদের স্মৃতিকে ফ্রেমবন্দি করে রাখেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আজিজ বলেন, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। ক্যাম্পাসের এই যে সুন্দর সুন্দর ফুল গুলো দেখে আমাদের খুবই ভালো লাগে। ফুলবাগান আমাদের পরিবেশে এক প্রকার সৌন্দর্য এবং শান্তির অনুভূতি এনে দেয়। এটি শুধু দৃষ্টিনন্দন নয়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতেও সাহায্য করে। ফুল গাছ আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা আমাদের মনকে প্রশান্তি প্রদান করে। ফুলের গন্ধ এবং রঙের মেলবন্ধন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততা থেকে কিছুটা সময়ের জন্য মুক্তি দেয়।আমরা ক্লাস শেষে যখন বিরক্ত বোধ করি তখন ক্যাম্পাসের ফুলগুলো দেখে আমাদের ভালো লাগে। তবে আমরা চাই শুধু ফুল গাছ নয়, আমরা চাই যেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের একাডেমিক যে সংকটগুলো আছে সেগুলো যেন দূর করে। সেই সাথে আমরা চাই বাকি জায়গা গুলোতেও ফুল বাগান করা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সবার একটি আবেগের জায়গা যেখানে জুলাই বিপ্লবে আবু সাঈদ শহীদ হয়েছেন।ফুল সবারই প্রিয়। ফুল মানুষের মনকে সতেজ করে প্রকৃতিতে যোগ করে এক নতুন মাত্রা। আজ বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরতে এসে নানান ধরনের ফুল দেখে মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রকৃত বসন্ত এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরঙ্গনের পরিচালক ড. মো. ফেরদৌস রহমান জুমবাংলাকে বলেন বলেন, আমরা মাননীয় উপাচার্য স্যারের পরামর্শক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে আরো শিক্ষার্থীবান্ধব,দৃষ্টিনন্দন, পড়ালেখার পরিবেশ উপযোগী এবং মনোরম পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ফুলবাগান করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা ২০ প্রজাতির ফুল গাছ লাগানোর উদ্যাগ নিয়েছিলাম বেশ কিছু প্রজাতির ফুলগাছ লাগিয়েছি। পরবর্তীতে বাকি প্রজাতির ফুলগাছগুলো পর্যাক্রমে বাকি স্থানসমূহে লাগানো হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।