নিজস্ব প্রতিবেদক : সঠিক জবাবদিহিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনকে (বিআরটিসি) লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিআরটিসি’র প্রধান কার্যালয়ের সভা কক্ষে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি ও ছুটি নগদায়নের অর্থ প্রদানের সময় তিনি এ কথা বলেন।
এ-সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টর ফাইন্যান্স ড. অনুপম সাহা, ডিরেক্টর টেকনিক্যাল কর্ণেল মোহাম্মদ মোবারক হেসেন মজুমদার, হিসাব বিভাগের জিএম আমজাদ হোসেন, পরিচালক (প্রশাসন) এসএম কামরুজ্জামান প্রমুখ।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আর্থিক ব্যাবস্থাপনা যদি স্বচ্ছ না হতো বিআরটিসির রূপরেখার পরিবর্তন হতো না। আমরা প্রথমেই সঠিক পরিকল্পনা করেছি এবং সেই আলোকে তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছি। এক সময় আয় ব্যায়ের কোন স্বচ্ছতা ছিল না। মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন ছিল। এখন মানুষের মনে উল্টো প্রশ্ন রয়েছে কিভাবে এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে? বিআরটিসিতে বেতনের পরিমাণ কিভাবে ৬ কোটি থেকে ১২ কোটি করা হলো।’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ২০০ জন মেধাবীকে বিআরটিসিতে নিয়োগ প্রদান করেছি। এর মধ্যে ১৮২ জন কাজে যোগদান করেছে। তাদের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। নতুন ও তরুণদের স্বমন্বয়ে একটি আধুনিক বিআরটিসি গঠন করা হয়েছে। এর আগে অনেকেই কাজ না করে বেতন পেতেন আর যারা কাজ করতো তারা বেতন পেত না।
তাজুল ইসলাম বলেন, এখন আমার একটাই সিদ্ধান্ত ‘নো ওয়ার্ক. নো পে’। সবাইকে কাজের মাধ্যমে বিআরটিসির হাল ধরতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন প্রতি মাসে ২০টি গাড়ি বানানোর সক্ষমতা অর্জন করেছি। আমাদের টেকনিক্যাল বিভাগ এখন অনেক শক্তিশালী। এর আগে শুধু গাড়ি মেরামতের নামেই অনেক বিল ভাউচার জমা হতো। এখন এই ভাউচার প্রথা বন্ধ করে দিয়েছি। নিজেরাই সংস্কার করে সেই গাড়ি চালানোর উপযোগী করা হয়।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ২০২১ সালের পর নতুন গাড়ি না থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হচ্ছে। আমি এখানে যোগদান করার পর থেকে কোনো বৈষম্য রাখতে দেইনি। সবাই যার যার প্রাপ্য অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে। আমাদের এই প্রতিষ্ঠানের সংস্কার অনেক আগেই করা হয়েছে। যার জন্য বিআরটিসিরি কর্মচারীরা এখন ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে ব্যাংকে তাদের টাকা পেয়ে যায়।
বিআরটিসি ২০২১ সাল থেকে তিন মাস অন্তর অন্তর অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি ও ছুটি নগদায়নের অর্থ প্রদান করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ২৯৬ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি ও ছুটি নগদায়ন বাবদ ৪৫,০৪,৯৮,৬১.৪৪ টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও অসুস্থ ও দুরারোগ্য আক্রান্ত ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে কল্যাণ তহবিল হতে ২১,৫০,০০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
এসময় অবসরপ্রাপ্তদের মাঝে অনেকেই অনলাইন ও সরাসরি যুক্ত হয়ে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে যায়।
এর পূর্বে নতুন গাড়ি থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছয় কোটি টাকা বেতনও নিয়মিত পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং প্রশাসনের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় পুরাতন গাড়ি দিয়ে রাজস্ব অর্জন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা বেতন প্রদানের পাশাপাশি সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি ও ছুটি নগদায়নের অর্থ নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।