জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ান প্রযুক্তি জায়ান্ট স্যামসাংয়ের সম্ভাব্য ২২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ভেস্তে গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫’-এর প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “বিগত সরকার যথাযথ সুযোগ-সুবিধা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় স্যামসাংসহ বহু সম্ভাবনাময় বিনিয়োগকারী ফিরে গেছে। স্যামসাং চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (কেইপিজেড) বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ছিল। কিন্তু জমির মিউটেশন জটিলতা কাটিয়ে উঠতে না পারায় তারা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ভিয়েতনামে বিনিয়োগ করে।”
চৌধুরী আশিকের দাবি, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মাত্র দুই মাসে সেই জমি সমস্যার সমাধান করেছে, যা পূর্ববর্তী সরকার দশ বছরেও করতে পারেনি। “আমরা সদিচ্ছা দিয়ে প্রমাণ করেছি—চাইলেই সম্ভব,” বলেন তিনি।
তিনি জানান, বিডায় দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি কেইপিজেড প্রতিষ্ঠাতা প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। সে সময় কিহাক সাং আফসোস করে বলেন, “আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। কিন্তু জমির কাগজ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে স্যামসাং বিনিয়োগ থেকে সরে যায়।”
বিডা চেয়ারম্যান আরও জানান, সমস্যার সমাধানে ‘প্রজেক্ট অ্যাম্বাসেডর’ নামে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বিত একটি টিম গঠন করা হয়। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় দীর্ঘদিনের জমি জটিলতা দূর করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, “লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমাতে আমরা বদ্ধপরিকর। সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করছি।”
ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে: আইজিপি
সম্মেলনে অংশ নিতে কিহাক সাং এবার প্রায় ৩০ জন কোরিয়ান বিনিয়োগকারীকে সঙ্গে এনেছেন জানিয়ে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “এটা একটি আশাব্যঞ্জক সঙ্কেত। আমরা চাই—বিশ্বের বড় বড় বিনিয়োগকারীরা যেন বাংলাদেশকে আবার সম্ভাবনার গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করে।”
দেশে ব্যবসা পরিচালনার খরচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও জমির খরচ অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় কম। আমাদের শ্রমিকরাও নতুন প্রযুক্তি সহজে আয়ত্ত করতে পারে—এটি একটি বড় সুবিধা।”
বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ সম্মেলনের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আগামী ছয় থেকে বারো মাস নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হবে।”
স্টার্টআপ ও উদ্যোক্তাদের বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকারের কথাও তুলে ধরেন বিডা চেয়ারম্যান। বলেন, “স্টার্টআপদের পাশে থেকে আমরা একটি প্রাণবন্ত, উদ্ভাবননির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই।”
বিনিয়োগে নতুন আশা জাগিয়ে চৌধুরী আশিক বলেন, “যে বিনিয়োগ হাতছাড়া হয়েছিল, সেই ধরনের বিনিয়োগ ফিরে আনার জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।