পৃথিবীতে বিজ্ঞান বইয়ের ইতিহাসে কসমস এমন একটা বই, যেখানে বিজ্ঞানের বর্ণনাকে কাব্যময়তার জগতে নিয়ে আসা হয়েছে। যেখানে গণিতের যুক্তি বিজ্ঞানের তত্ত্ব ইতিহাসের কাহিনি আর চলচ্চিত্রের নাটকীয়তার এক মহাসমাবেশ ঘটানো হয়েছে। এ জন্য বিজ্ঞানকে খাটো করতে হয়নি।
সাধারণ মানুষকে বোঝানোর জন্য ‘জনপ্রিয় বিজ্ঞান’ বলে কোনো নতুন বিভাগ খুলতে হয়নি। বিজ্ঞান মানুষের কাছে ধরা দিয়েছে আরও ব্যাপকতা নিয়ে আরও গভীরভাবে। সেখানে তিনি দেখিয়েছেন, এই মহাবিশ্বের বেশির ভাগ অঞ্চলই খালি। সেই তুলনায় আমাদের অবস্থান কত ক্ষুদ্র। প্রাণ কোনো বিশেষ ব্যাপার নয়। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় প্রাণের উদ্ভব সম্ভব।
ইতিহাসের পর ইতিহাসের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি দেখিয়েছেন, সাংস্কৃতিক পার্থক্য, মূল্যবোধের অভাব, সামান্য লোভ আর তুচ্ছ সব কারণে পৃথিবীর এক সভ্যতা আরেক সভ্যতাকে কত নির্মমভাবে ধ্বংস করেছে। এসব উদাহরণ থেকে সাগান বলেছেন, ‘আমাদের টিকে থাকতে হলে, পৃথিবীকে অর্থবহ করে তুলতে হবে আমাদের প্রশ্ন করার সাহস এবং উত্তরের গভীরতা দ্বারা।’ বর্তমান সভ্যতার প্রেক্ষাপটে তিনি এই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যে উন্নতির সঙ্গে বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির যদি সমন্বয় ঘটানো না যায়, তাহলে পুনরায় মধ্যযুগের মতো অন্ধকার যুগ আসন্ন।
আয়োনিয়া, আলেক্সান্দ্রিয়ার ঘটনা থেকে বোঝা যায়, কোনো এক অঞ্চলে একটি সভ্যতা কিছুদিন পর আপন ইচ্ছায় ধ্বংস হয়ে যায়। রাজনৈতিক সামাজিক অনেক কারণই হয়তো। ঢাকা শহর তার উদাহরণ হতে পারে। সাগান বলেছেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
ক্ষমতাধর দেশ ছাড়াও ছোট দেশগুলো নানা মাত্রায় পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। আর বলছে, তাদের দেশের জনগণের অধিকতর নিরাপত্তা বিধানে তারা এই কাজ করছে। কিন্তু পৃথিবী আবহাওয়া ক্রমাগতভাবে মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। তেজস্ক্রিয়তার কারণে নানা ধরনের মরণব্যাধি বেড়ে যাচ্ছে।
সবাই তার দেশ এবং জাতির জন্য কথা বলছে। কিন্তু পৃথিবীর জন্য কারা কথা বলবে? পৃথিবীকে এই ভয়াবহ বিপদ থেকে কারা রক্ষা করবে? এটা তো সত্যি, এই পৃথিবী না বাঁচলে এই জাতি–রাষ্ট্র কোনো কিছুই থাকবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।