চার বছরের মধ্যে বৃহস্পতিবার বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিং নিয়ে সবার আগ্রহ একটু বেশিই ছিল। সবার ধারণা ছিল, বাফুফে সভাপতি হিসেবে কাজী সালাউদ্দিনের এটাই শেষ সভা। সেজন্য গতকাল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভবনে সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু আড়াই ঘণ্টা সভা শেষ করেই ভবন ত্যাগ করেন সালাউদ্দিন। যাওয়ার আগে নিজের সহযোদ্ধাদের উদ্দেশে আবেগঘন বার্তা দেন তিনি। আর সালাউদ্দিন চলে যাওয়াতে বুঝতে বাকি নেই হয়তো আরেকটি মিটিং করবে এই কমিটি।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই কথাই বললেন বাফুফের অন্যতম সদস্য সত্যজিৎ দাস রুপু। নির্বাহী কমিটির আলোচনায় মূল যে এজেন্ডা ছিল ১৩৩ কাউন্সিলরের নাম অনুমোদন; সেটা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও গঠন করা হয়েছে। গুঞ্জন উঠেছিল নতুন কাউকে দেওয়া হবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব। সেই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে আগের চারবার বাফুফে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা মেসবাহ উদ্দিনকেই করা হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিন সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশনে মেজবাহর সঙ্গে থাকছেন এহসানুর রহমান ও সুরাইয়া আক্তার জাহান। ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন।
কাউন্সিলরশিপ নিয়ে গত কয়েক দিন বাফুফেতে নানা নাটকীয়তা দেখা দেয়। বিশেষ করে বেশ কয়েকটি ডেলিগেট নিয়ে আপত্তি থাকায় সেগুলো নিয়ে বুধবার ফেডারেশনে হয় শুনানি। ভেতরে শুনানি চললেও বাইরে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়াতে দেখা যায়। ১০ ঘণ্টার ম্যারাথন শুনানি শেষে লালমনিরহাট, গোপালগঞ্জ, ফেনী ও শেরপুর জেলা অ্যাসোসিয়েশনের ভোটাধিকার বাতিল করা হয়। কাউন্সিলরশিপের মতো নির্বাচন কমিশন নিয়েও অনেক কথা উঠেছিল। বিকল্প কয়েকজনের নামও ছিল আলোচনায়। কিন্তু বোর্ডের ১৪ জন সদস্য নাকি মেজবাহর পক্ষে সাফাই গেছেন।
এখানে পরিবর্তন না এনে কেন মেজবাহ উদ্দিনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে, সেই ব্যাখ্যা এভাবেই দেন রুপু, ‘গত নির্বাচনগুলো তিনি খুব সুচারুরূপে পরিচালনা করেছেন। তাঁর ওপর সবার আত্মবিশ্বাস ছিল বিধায় তাঁকে পুনরায় প্রস্তাব করা হয়েছে এবং বোর্ড সেটাতে সম্মতি দিয়েছে।’
সংবাদমাধ্যমের সামনে না এলেও বোর্ড মিটিংয়ের সূচনা বক্তব্যে বেশ আবেগঘন ছিলেন সালাউদ্দিন। বিষয়টি জানান রুপু, আমরা যখন বোর্ড মিটিং শুরু করেছি, তখন প্রারম্ভিক যে সম্ভাষণ ছিল, সেটা তিনি করেছিলেন। শুরুতেই তিনি বলেছেন, ‘আমি দীর্ঘসময় ছিলাম, আমি শুধু একটা জিনিসই বুঝি, সেটা হচ্ছে ফুটবল। আমার অন্য কিছুর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি ফুটবলের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি, এখানে আমার ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে।’ ব্যক্তিগতভাবে কারও সঙ্গে কোনো কিছু যদি থেকে থাকে, সেটার জন্য তিনি সরি (দুঃখিত) বলেছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, যতদিন তিনি এই চেয়ারে ছিলেন, ফুটবলের জন্য কাজ করেছেন। তিনি শেষ দিনেই ব্রিফ করবেন। আরও একটা মিটিং যেহেতু আছে।
সরকার পরিবর্তনের পর আত্মগোপনে থাকায় মিটিংয়ে ছিলেন না বাফুফের তিন সহসভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, কাজী নাবিল আহমেদ ও আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক। আরেক সহসভাপতি ইমরুল হাসান ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন সভায়। সশরীরে উপস্থিত ছিলেন ১০ সদস্য। ফাইন্যান্সিয়াল একটা বিষয়ের সমাধান না হওয়ায় সালাউদ্দিনের এই কমিটি আরেকটি সভাতে বসবে নির্বাচনের আগেই। তবে বাফুফে নির্বাচনের পর নভেম্বরে ফিফা উইন্ডোতে জাতীয় ফুটবল দলের ম্যাচ আছে। তাই নতুন কমিটি যেন সেই ম্যাচগুলো আয়োজন করতে পারে, তা অনুমোদন বোর্ড দিয়েছে বলে জানান রুপু। আর নির্বাচনে আপিল কমিটির প্রধান করা হয়েছে ড. মোহাম্মদ জাকারিয়াকে। তাঁর সঙ্গে আছেন হারুনুর রশিদ ও মিহির সারোয়ার মোর্শেদ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।