জুমবাংলা ডেস্ক : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় নির্মাণাধীন পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হেলে পড়া চারতলা ভবন সোজা করতে ভিন্ন এক ফর্মুলা অনুসরণ করা হচ্ছে। ভবন সোজা করতে অনেকটা পরিখা খননের মতো একপাশে খনন করা হচ্ছে ১৪ ফুট গভীরতার ক্যানেল।
অন্যপাশে বাঁশের পাইলিং দিয়ে প্রায় ১২ ফুট চওড়া ও ১৪ ফুট উচ্চতায় নির্মাণ করা হচ্ছে বাঁধ। তবে এ পদ্ধতি যথেষ্ট কার্যকর কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তিন সদস্যবিশিষ্ট টেকনিক্যাল টিম ভবনটি পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে। পরে ভনবটি হেলেপড়া রোধ ও সোজা করতে নতুন ফর্মুলায় কাজ করতে ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নতুন ফর্মুলা অনুযায়ী ভবনের সামনে (দক্ষিণ পাশ) এবং পশ্চিম পাশে মূল ভবনের কিছু অংশ বাদ রেখে ১২ ফুট চওড়া ও ১৪ ফুট গভীর ক্যানেল (খাল) খনন করা হচ্ছে। ক্যানেল থেকে উত্তোলিত পচা মাটি বস্তায় ভরে ভবনের পেছন ও পূর্বপাশের ডোবা নালায় বাঁশের পাইলিং দিয়ে প্রায় ১২ ফুট চওড়া ও ১৪ ফুট উচ্চতার বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। গত ৩ মার্চ থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নতুন ফর্মুলা অনুযায়ী কাজ শুরু করেছে।
একটি সূত্র বলছে, ভবনটি যেখানে করার কথা ছিল, সেখানে নির্মাণ না করে কিছুটা সরিয়ে করা হয়েছে। আর যেখানে করা হয়েছে-সেখানকার মাটি পরীক্ষা করা হয়নি। জায়গাটি বিল বা ডোবা হিসেবে থাকলেও বহুতলবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের আগে তার স্থায়িত্ব নিয়েও ভাবা হয়নি। যে কারণে ভবনটি হেলে পড়ার পর এখন যেনতেনভাবে সেটি টিকিয়ে রেখে কাজ সম্পন্ন করে বিল উত্তোলনের চেষ্টা চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের বাস্তবায়নে ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ‘নির্বাচিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহে উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা ইউনিয়নে পারমাদারতলা এলাকার পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। কাজটি পায় খুলনার দৌলতপুরের এমএস রৈতি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার স্বত্বাধিকারী টিপু হাওলাদার। ১৮ মাসে কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দিয়ে ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
অভিযোগ উঠেছে, নির্ধারিত সময়ের দ্বিগুণ সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে নির্মাণাধীন ভবনের পেছনের (উত্তর) পাশ দেবে ভবনটি কিছুটা হেলে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। একপর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ টিম ভবনটি পর্যবেক্ষণ করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রৈতি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী টিপু হাওলাদার বলেন, ‘ভবনটি হেলে পড়ার পর শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের একাধিক টিম সেখানে আসে। তারা এটি সোজা করার একাধিক প্ল্যান (পরিকল্পনা) করলেও সে পর্যন্ত সামনে ও পেছনে পরিখা ও বাঁধ দেওয়ার জন্য বলেন। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে কাজের আটদিন অতিবাহিত হয়েছে। আগামী ছয়দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।
কাজ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত খুলনার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুস সোহেল বলেন, ‘এভাবে হেলেপড়া ভবন সোজা হবে কি না বা হলেও কতদিন লাগবে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
এ প্রকৌশলীর ধারণা, ভবনটি সোজা হতে চার থেকে পাঁচ বছর লেগে যেতে পারে। সূত্র : জাগো নিউজ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।