জুমবাংলা ডেস্ক : উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার লিখিত জবাব চেয়ে কারণ দর্শানো চিঠি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এসব চিঠিতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে এ সব চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১২ জুলাই ২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, আপনার বিরুদ্ধে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং নানাবিধ তৎপরতাসহ সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যে কারণে গঠনতন্ত্রের ৪৭ (ক) ধারা অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠননিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এ বিষয়ে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রেরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
এদিকে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে ৪৭ (ক) ধারায় বলা আছে, ‘কোনো সদস্য আওয়ামী লীগের আদর্শ, লক্ষ্য উদ্দেশ্য, গঠনতন্ত্র ও নিয়মাবলি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের পরিপন্থী কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করিলে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল, কার্যনির্বাহী সংসদ, সংসদীয় বোর্ড বা সংসদীয় পার্টির বিরুদ্ধে কোনো কাজ করিলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ তাহার বিরুদ্ধে যে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।’
এছাড়াও উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদদাতা হিসাবে স্থানীয় এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এক সভা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। উক্ত সভায় উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে মদদদাতা দলীয় সংসদ সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাচনে মদদদাতা স্থানীয় এমপি, মন্ত্রী ও নেতাদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য দফতর সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের। এরইমধ্যে উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদদাতা এমপি ও স্থানীয় নেতাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
আজ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তালিকা উত্থাপনসহ কারণ দর্শানোর নোটিশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন দলটির হাইকমান্ড। এদিকে এরইমধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগে সাংগঠনিকভাবে বিভিন্ন পদে আসীন বিদ্রোহী প্রার্থীদের দুই দফায় ডাকযোগে কারণ দর্শানোর জবাব চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে দলের পক্ষে।
দীর্ঘ জটিলতার পর উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ঠিকানা বরাবর শোকজ চিঠি পাঠায় আওয়ামী লীগ। গত সোমবার পাঁচ বিভাগে শতাধিক নেতার স্থায়ী ঠিকানা বরাবর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে চিঠি পাঠানো হয়। পরদিন বাকি বিভাগের বিদ্রোহীদের চিঠি পাঠানো হয়। চলতি বছরের মার্চ ও জুনে পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আট বিভাগে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক ছিল। এর বাইরে দলটির সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন শতাধিক। আর মদদদাতা মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী শতাধিক নেতার নাম উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের তদন্তকারী টিমের কাছে। সূত্র : সারাবাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।