অনিল চন্দ্র রায়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দ্বিতীয় দফায় কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে শিমুলবাড়ী এলাকায় শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া বারোমাসিয়া ও নীলকমল নদীর পানি হু হু করে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী এবং ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নে ৭শ পরিবার আসবাসপত্র আর গৃহপালিত পশু নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে কোনও রকমে উচু বাঁধে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছেন।
এদিকে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তলিয়ে গেছে পাট, ভুট্রা, সবজি ক্ষেত, বীজতলা ও আউশ ধান।
সোমবার সকালে উপজেলার ভাঙ্গামোড়, বড়ভিটা, ফুলবাড়ী, শিমুলবাড়ী ও নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, পানিবন্দী ও বাঁধে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে জীবন-যাপন করছেন। এভাবে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ভারত থেকে পানি আসা অব্যাহত থাকলে আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়বে।
এদিকে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তলিয়ে গেছে পাট, ভুট্রা, সবজি ক্ষেত, বীজতলা ও আউশ ধান। সেই সাথে তলিয়ে গেছে এ সব এলাকার গ্রামীণ রাস্তাসহ উচু এলাকার ও পাকা-আধা-পাকা সড়কগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যার আঘাতে বিপর্যদস্ত হয়ে পড়েছে বানভাসিরা।
কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জুমবাংলাকে জানান, শিমুলবাড়ী এলাকায় শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পয়েন্টে ধরলার নদীর পানি বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশা করছি আগামী দুই একদিনের মধ্যে ধরলার পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের সোনাইকাজী গ্রামের হযরত আলী ও মকিম উদ্দিনসহ অধিকাংশ পরিবার পানিবন্দী। তারা জুমবাংলাকে জানান, আমাদের সবার বাড়ি ও টিউওয়েল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রান্না করা ও বিশুদ্ধ পানির সমস্যা থাকায় গত কয়েদিন ধরে মানুষের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। এখন পর্যন্ত কেউ খোঁজ খবর নেয়নি।
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবু জুমবাংলাকে জানান, তার ইউনিয়নের বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ১ হাজার পরিবার উচু বাঁধে ও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও পয় নিস্কাশনের সমস্যাসহ নানা সমস্যা নিয়ে তারা বসবাস করছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান জুমবাংলাকে জানান, উপজেলায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী ও ৭শ পরিবার উচু বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ধরলার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোমবার দুপুরে সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে জরুলী মিটিং করেছি। পানিবন্দী ও বানভাসীদের পাশে দ্বাড়ানোর আহবান জানানো হয়েছে। পানিবন্দী পরিবারগুলোর তালিকা করে জেলায় পাঠানো হয়েছে। তারপরেও প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে। জিআররের ১২ মেট্রিক চাউল ও ৩০ হাজার টাকা মজুদ আছে। আগামীকাল থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
দুইটি আশ্রয়কেন্দ্রসহ মোট ৪১টি স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।