আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ এক প্রতিবেদনে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইয়েমেনে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে বলেছে দেশটির এক কোটি ১৩ লাখ শিশুর জন্য জরুরি সাহায্যের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। খবর পার্সটুডে’র।
ইউনিসেফ এমন সময় ইয়েমেনের শিশুদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরল যখন জাতিসংঘের আওতাধীন কোনো কোনো সংস্থা ও ব্যক্তিত্ব বহুবার ইয়েমেনে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছে। তবে এসব সংস্থা কিংবা ব্যক্তিত্বরা ইয়েমেনের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কারা দায়ী সে ব্যাপারে কিছু বলছে না যা কিনা খুবই দুঃখজনক। অর্থাৎ তারা ইয়েমেনের বিপর্যয়ের জন্য দায়ী সৌদি আরবের আগ্রাসনের ব্যাপারে মুখ খুলছে না।
সৌদি আরব ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে বর্বরোচিত আগ্রাসন শুরু করে এবং এখনো সেখানে তারা নির্বিচারে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এ অপরাধযজ্ঞে কয়েকটি আরব দেশ সৌদি আরবকে সহযোগিতা করছে এবং এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও দখলদার ইসরাইলের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ইয়েমেনের পলাতক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদিকে ক্ষমতায় বসানোর অজুহাত দেখিয়ে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট এ বর্বর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কোনো জোট বা সংগঠন সৌদি আরবের নাম মুখেও আনেনি। তাই সৌদি পেট্রো ডলার সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। এদিকে, যেহেতু ইয়েমেনে মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে বিভিন্ন সংস্থা প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও আগ্রাসী হিসেবে সৌদি আরবের নাম তারা উচ্চারণ করছে না তাই হুথি সমর্থক স্যালভেশন সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের কথাও তারা বলছে না। কিন্তু সৌদি আরবের গণমাধ্যমগুলো ইয়েমেনের বর্তমান বিপর্যয়কর পরিস্থিতির জন্য জনপ্রিয় হুথি আসনারুল্লাহ সংগঠন ও তাদের সমর্থিত সরকারকে দায়ী করছে এবং এর মাধ্যমে তারা বিশ্বজনমতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
গত প্রায় ছয় বছরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনগুলো বিশেষ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বরা ইয়েমেনের বিপর্যয়ের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেও যারা এতো বড় অপরাধযজ্ঞের জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো কথাই বলছে না। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে এ বিষয়ে তদন্ত কিংবা দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি আন্তর্জাতিক সংস্থা বা সংগঠনগুলো। এভাবে তারা ইয়েমেনে আগ্রাসন অব্যাহত রাখার জন্য সৌদি আরবকে এক ধরনের সবুজ সংকেত দিচ্ছে। দরিদ্র দেশ ইয়েমেনের জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি। ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী এর মধ্যে এক কোটি ১৩ লাখ শিশুর জন্য জরুরি সাহায্যের প্রয়োজন।
এদিকে, সৌদি আরব শুরুতে ঘোষণা করেছিল, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে তারা ইয়েমেন যুদ্ধে বিজয়ী হবে কিন্তু গত প্রায় ছয় বছরেও তারা বিজয়ের মুখ দেখেনি। বরং ইয়েমেনের জনগণ আরো শক্তভাবে সৌদি আগ্রাসন মোকাবেলা করে যাচ্ছে। আনসারুল্লাহ নেতা মোহাম্মদ আল বাখাতি বলেছেন, তারা সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয়ী হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।