আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জার্মান বিমানবাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসারদের আলোচনার এক রেকর্ডিং প্রকাশ করে রাশিয়া গুপ্তচরবৃত্তির ক্ষেত্রে সাফল্য দেখাতে পেরেছে৷ জার্মান সরকার শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনকে শক্তিশালী টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিলে কোন কোন বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে, জার্মান বিমানবাহিনীর প্রধান ও উচ্চপদস্থ অফিসাররা সে বিষয়ে আলোচনা করছিলেন৷
শুক্রবার রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যমে সেই গোপন কথোপকথন ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জার্মানিতে প্রবল তর্কবিতর্ক চলছে৷ জার্মানির স্থিতিশীলতা বিঘ্নের অভিযোগও উঠছে৷
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এমন আড়ি পাতা কেলেঙ্কারির উৎস জানতে দ্রত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকেই প্রাথমিক ফলের আশা করছেন৷ তাঁর মতে, ভুয়া তথ্য প্রচার করার ক্ষেত্রে এটা রাশিয়ার ‘হাইব্রিড’ হামলা৷ সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ গোটা ঘটনার তদন্ত করছে৷ যে কথোপকথন ফাঁস করা হয়েছে, তার মধ্যেও চালাকি করে কোনো পরিবর্তন আনা হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠছে৷ জোট সরকারের নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা আরো বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন৷ এভাবে আরো জোরালোভাবে গুপ্তচরবৃত্তি মোকাবিলার ডাক দিচ্ছেন সরকার ও বিরোধী পক্ষের নেতারা৷
ওয়েবএক্স নামের সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেনা অফিসারদের কনফারেন্স কলে আড়ি পাতার ঘটনা ঠিক কীভাবে ঘটেছে, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়৷ রাশিয়া সরাসরি আড়ি পেতেছে, নাকি জার্মান সেনাবাহিনীতই ‘সরষের মধ্যে ভুত’ রয়েছে, সেটা জানার চেষ্টা চলছে৷ তাছাড়া আড়ি পাতার এমন ক্ষমতা থাকলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এমন আরো আলোচনাও রাশিয়া শুনে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে৷ সে সব সংলাপ ফাঁস হলে জার্মানির ভাবমূর্তি ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে৷ রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যম ইতোমধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধে জার্মানির সরাসরি অংশগ্রহণের অভিযোগ তুলছে৷ টাউরুস প্রয়োগ করে অধিকৃত ক্রাইমার সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস করার বিষয়ে আলোচনা উদ্ধৃত করে এমন দাবি করা হচ্ছে৷ চ্যান্সেলর শলৎস বার বার যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়ায় ঘটনাটি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷
দেশে-বিদেশে প্রবল চাপ সত্ত্বেও ওলাফ শলৎস এখনো ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত নন৷ সরাসরি যুদ্ধে না জড়িয়ে পড়ার কারণ দেখিয়ে তিনি যে সব যুক্তি খাড়া করছেন, বিরোধী পক্ষ তা নাকচ করে দিচ্ছে৷ জোট সরকারের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে৷ আড়ি পাতা রেকর্ডিং-এর ভিত্তিতে বিরোধীরা বলছে, টাউরুস ব্যবহার করার জন্য ইউক্রেনে জার্মান সেনাবাহিনীর সদস্য পাঠানোর কোনো প্রয়োজন নেই৷
উল্লেখ্য, সে ক্ষেত্রে ইউক্রেনের অফিসারদের বেশ কয়েক মাস ধরে জার্মানে প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলে সেনা কর্মকর্তাদের আলোচনায় উঠে এসেছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, ডিপিএ, এএফপি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।