বিয়ের পাঁচ দিনের মাথায় জানা গেল বর এইডসে আক্রান্ত! যা করলেন স্ত্রী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিয়ের পাঁচ দিন পর জানা গেল বর এইচআইভি পজিটিভ। বিষয়টি স্ত্রী মেনে নিলেও সমস্যা দেখা গেল অন্য জায়গায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় তাকে স্কুলে আসতে নিষেধ করে দিয়েছে। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের সোনারপুর এলাকার। ১২ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয় সৌমিত্র গায়েন আর সুনীতা যাদবের। ১৭ ফেব্রুয়ারি দম্পতির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল তাদের মাথায়।
একটি বেসরকারি স্কুলে স্পেশাল এডুকেটর হিসাবে কর্মরত ছিলেন সৌমিত্র। তিনি এইচআইভি পজিটিভ জানার পরই তাঁকে ৯০ দিনের জন্য ‘ছুটি’তে পাঠায় স্কুল। স্কুলের এই সিদ্ধান্তে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। স্কুলের বরাতে জানা গেছে, এইচআইভি পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি গোপন করে চাকরি করছিলেন সৌমিত্র। সে কারণেই তাঁকে সাময়িকভাবে কাজ থেকে ‘ছুটি’তে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছে।
তবে এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চায়নি তারা। সৌমিত্র গায়েনের কথায়, “যেদিন কাজে যোগ দেওয়ার ছিল, তার আগের দিন আমাকে ফোন করে ডাকা হয়। সন্ধ্যাবেলা আমাকে স্যারের চেম্বারে গিয়ে দেখা করতে বলা হয়। আমি যাওয়ার পর বলছেন, বুঝতেই তো পারছ পরিস্থিতি। কেউ জানত না এটা। তুমি কিছুদিনের জন্য ছুটিতে চলে যাও। অফিস থেকে বেতন নিয়ে যেতে বলেন।
একইসঙ্গে বলেন, যোগাযোগ রাখবে আমাদের সঙ্গে। মাঝে মাঝে আসবে। তারপরও যদি পরিস্থিতি ঠিক না হয় তাহলে আরও কিছুদিন ছুটিতে থাকবে।”
সৌমিত্রের বক্তব্য, তিনি এইচআইভি পজিটিভ জানার পর স্কুলের উপর নানা চাপ আসছে বলে জানানো হয়েছে স্কুল থেকে। সৌমিত্র বলেন, “অভিভাবকরা ভয় পাচ্ছেন, তাঁদের বাচ্চাদের যদি এরকম কিছু হয়। আমি তো অবাক এসব শুনে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে মানুষ এরকম ভাবছেন? আমি তো ধিক্কার জানাচ্ছি।”
সৌমিত্রের নববধূ সুনীতা জানান, বিয়ের পর পরই স্বামীর চাকরি থেকে এভাবে বসে যাওয়া মন খারাপ করে দেয় তাঁর। তিনিও অবাক!
সুনীতার কথায়, “আজও মানুষ ভাবে এইচআইভিটা ছোঁয়াছুঁয়ির জন্য হয়। খুব আঘাত লেগেছিল। তারপর ভাবলাম যা হচ্ছে দেখা যাবে। দেখি কী হয়!”
এমন ঘটনার তীব্র নিন্দায় রাজনৈতিক মহলও। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ফেসবুকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান শুক্রবার রাতে। শনিবার তিনি বলেন, “এইচআইভি আক্রান্ত তো জন্মসূত্রে। তাঁদের দোষ নয় তো। অথচ তার জন্য চাকরি চলে যাচ্ছে। কেন হবে এটা? সমাজ সচেতনতা, বড় বড় কথা, লোককে জ্ঞান দেওয়া এগুলো কথায়? চাকরি ফিরিয়ে দিন। না হলে পরবর্তীকালে আমাদের কমিউনিকেশন বাড়বে। তাতে আপনাদের অস্বস্তি হবে। তার আগে ছেলেটিকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।