জুমবাংলা ডেস্ক : রংপুরের তিস্তায় দেখা মিলেছে বিরল প্রজাতির পাখি পাতি মার্গেঞ্জারের। পরিযায়ী এ পাখি দেখতে অনেকটা রাজহাঁসের মতো। ঠোঁট, পা, পায়ের পাতা কমলা রঙের। ডানা ধূসর, সাদার মিশ্রণ। কয়েক বছর আগে স্থানীয়রা একবার এ প্রজাতির পাখি তিস্তায় দেখেছিল। গেল বছর শেষে ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয়বারের মতো তিস্তা নদীতে দেখা মিলল পাতি মার্গেঞ্জার পাখির।
দীর্ঘদিন ধরে পাখির ছবি তুলতে দেশ-বিদেশে ছুটে বেড়িয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ। শীতের এই সময়ে দেশে অতিথি পাখির আনাগোনা বাড়ে। ফলে পাখিপ্রেমীদের জন্য এ সময়টা দারুণ। তুহিন ওয়াদুদও পাখির ছবি তোলার জন্য বেছে নিলেন এ সময়টি। গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে নৌকা করে তিস্তা নদীতে পাখির ছবি তুলেছেন। এ সময় ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে চোখে পড়ল দারুণ এক দৃশ্য। তিস্তার জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে আমাদের দেশে বিরল পাখি পাতি মার্গেঞ্জার।
সেদিনের কথা স্মরণ করে তুহিন ওয়াদুদ জানান, ওইদিন বেলা দেড়টার দিকে রংপুরের পীরগাছা ও কুড়িগ্রামের উলিপুর সীমান্ত ঘেঁষা তিস্তা নদীতে পাখির ছবি তুলতে তুলতে হঠাৎ বিরল মার্গেঞ্জার দেখতে পান। তিস্তায় পানি এখন কম, অনেক স্থানে হাঁটুসমান। এমনই এক জায়গায় পানিতে মাছসহ জলজপ্রাণী শিকার করছিল মার্গেঞ্জারটি। দেখামাত্রই ক্যামেরায় ধারণ করে নেন পাখিটিকে। বেশ কয়েকটি ক্লিকেই ধারণ করেন উড়ন্ত পাতি মার্গেঞ্জারকে।
ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, শীত মৌসুমে পরিযায়ী পাখি তিস্তায় আসে। আমরা কয়েকজন শৌখিন ফটোগ্রাফার সারা বছর পাখির ছবি তুলি। তিস্তা নদীতে পাখির ছবি তোলার সময় পাতি মার্গেঞ্জারকে দেখতে পাই। এটি পরিযায়ী। মূলত শীতপ্রধান দেশ থেকে তারা শীতকালে উত্তরাঞ্চলে চলে আসে। এর আগে আমি কখনও এ পাখিকে তিস্তা নদীতে দেখিনি। বছরের শেষদিনে দুর্লভ পাখিটির ছবি তুলতে পেরে আনন্দিত। যে পাখিটির ছবিটি তুলেছি, সেটি মেয়ে মার্গেঞ্জার। ছেলে পাখিগুলো আরও দেখতে আকর্ষণীয়। একে ইংরেজিতে ‘কমন মার্গেঞ্জার’ বলে।
তিনি বলেন, মার্গেঞ্জার পাখিটি রাজহাঁসের মতো। অনেক শিকারি তিস্তায় আসা পরিযায়ী পাখি শিকারের জন্য ওত পেতে থাকে। জীবন রক্ষা করতে শীতপ্রধান দেশ থেকে শত শত কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পরিযায়ী পাখিরা উত্তরাঞ্চলে আসে। তাই এসব পাখি রক্ষায় প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে।
জানা যায়, পাতি মার্গেঞ্জার প্রবহমান নদী ও নালয় বিচরণ করে তারা স্রোতের বিপরীতে পানিতে ডুব দিয়ে মাছ শিকার করে। সেই সঙ্গে জলজ পোকামাকড়, ব্যাঙ, চিংড়ি, শামুকজাতীয় প্রাণীসহ লতাপাতা খায়। গাছের প্রাকৃতিক গর্তে এরা আবর্জনা ও কোমল পালকের স্তূপ বানিয়ে ৬ থেকে ১৭টি ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ পীতাভ। এরপর ২৮ থেকে ৩২ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।
সামাজিক বন বিভাগ রংপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রতি বছর শীতে নদীতে বিরল পরিযায়ী পাখিরা আসে। শিকারিদের হাত থেকে এসব পাখি রক্ষায় সামাজিক বন বিভাগের একটি টহল টিম বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে।
সূত্র : প্রতিদিনের বাংলাদেশ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।