মাজহারুল রাসেল : নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও বন উজাড়ের কারণে সোনারগাঁ উপজেলা থেকে বিলুপ্ত হতে চলেছে টক-মিষ্টি স্বাদের ‘ডেউয়া’ ফল। গৃহস্থ পরিবারের পরিত্যাক্ত জমিতে ঝোপ-ঝাড়ের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে জন্মাতো ডেউয়া গাছ। গ্রামাঞ্চলে এটি অত্যন্ত পরিচিত একটি ফল হলেও শহরাঞ্চলে এটি একটি অপ্রচলিত ফল। আগে গ্রামে এ ফলের চাষ হয় করা হত। তবে বর্তমানেএই ফলের চাষ খুব একটা দেখা যায় না।
ডেউয়া গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus lacucha বা Artocarpus lakoocha Roxb. এবং ইংরেজি নাম ”Monkey Jack”। দেশের এলাকাভেদে এটি ঢেউয়া, ডেলোমাদার, ডেউফল বা ঢেউফল নামে পরিচিত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরা আক্তার বলেন, বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ফলের আবাদ করতে গিয়ে এ ধরনের অপ্রচলিত ফল হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে, ডেউয়া অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, কাঁঠাল জাতীয় ফলের মত এই ফলে কোয়া (কোষ) থাকে। সাধারণত ফেব্রুয়ারি (ফাল্গুন) মাসে একটি পরিপূর্ণ গাছে ফুল আসে এবং জুন (আষাঢ়) মাসে ফল পাকতে শুরু করে। যা পাকলে বীজের গায়ে জড়ানো রসালো অংশ খেতে হয়। কোন বালাই নাশক ছাড়াই এই ফলের গাছ সহজেই জন্মে।
সোনারগাঁ উপজেলার বারদীর সাবেক ইউপি সদস্য দাইয়ান সরকার বলেন, তাদের পরিত্যাক্ত জমিতে এক সময় প্রচুর ডেউয়া গাছ ছিল। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে গ্রামাঞ্চলের অতি পরিচিত এই গাছটি আজ বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে তার বাড়িতে একটি গাছে অনেক ডেউয়া ফল ধরেছে। এটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে লালচে হলদে।
সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচালক ডাঃ পলাশ কুমার সাহা বলেন, ডেউয়া ফল ভিটামিন ‘সি’ ,ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, লৌহ ও জিংক সমৃদ্ধ। একটি মাঝারি সাইজের ডেউয়া ফলে ৭৩ কিলোক্যালরি শক্তি থাকে। এর মধ্যে ফসফরাস ২৫% ও ক্যালসিয়াম ৬৭% মিলিগ্রাম, মিনারেল ১ গ্রাম, চর্বি ১ গ্রাম, প্রোটিন ২ গ্রাম, আঁশ ৩ গ্রাম এবং আদ্রতা ৯০গ্রাম। কাঁচা ডেউয়া টক, ক্ষুধা দূর করে। পাকা ডেউয়া ক্ষুধার্বধক। এ ফলের খাদ্য আঁশ পিত্ত ও যকৃতের উপকারি। চুল পড়া প্রতিরোধ, চুল বৃদ্ধি, সন্ধিবাত ফোলায় উপকার করে। এছাড়া চর্মরোগ, কলেরা রোগের উপশম ছাড়াও রক্ত চলাচল, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।