স্পোর্টস ডেস্ক : কাতারে অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপের এখনো মাস চারেক বাকি থাকলেও এরই মধ্যে উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে সমর্থকদের মধ্যে কথার লড়াইও চলছে পুরোদমে। এদিকে, বাংলাদেশি সমর্থকদের উন্মাদনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ট্রফির আগমন। দুই দিনের জন্য বিশ্বকাপ ট্রফি এখন ঢাকায়।
বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে মাতামাতির পুরোটাই মূলত ট্রফি নিয়ে, কে কতবার জিতেছে-এ নিয়েই যত তর্ক-বিতর্ক। ফিফার এই মহাযজ্ঞের গত ৯২ বছরের ইতিহাসে বিশ্বকাপ ট্রফির আকার-আকৃতি কিংবা নামে যেমন বদল এসেছে, তেমনি চুরির মতো কলঙ্কিত ঘটনাও ঘটেছে।
বিশ্বকাপ ট্রফিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়: এক জুলে রিমে ট্রফি, যা আদি বিশ্বকাপ নামে পরিচিত। ১৯৩০-১৯৭০ সাল পর্যন্ত জুলে রিমে ট্রফি নামেই পরিচিত ছিল বিশ্বকাপ। এরপর দ্বিতীয়ত ফিফা বিশ্বকাপ, যেটি এখন বর্তমান আদলে আছে।
ট্রফি চুরির গল্প
১৯৬৬ সালের ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের আর মাত্র ৪ মাস বাকি! ওয়েস্ট মিনিস্টারের সেন্ট্রাল হলে ২৪ ঘণ্টার কড়া পাহারার পরেও ২০ মার্চ, ১৯৬৬ সালে জুলে রিমে কাপ চুরি হয়ে যায়, যা সারা বিশ্বে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। লন্ডনের পুলিশ বাহিনী চোরের খোঁজে তখনকার সময়ে ১৫ হাজার পাউন্ডের পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছিল।
বিশ্বকাপের আগে জুলে রিমে কাপ উদ্ধার করা যাবে না এই ভয়ে ব্রিটিশরা তড়িঘড়ি করে আরেকটি রেপ্লিকা কাপ তৈরি করার ব্যবস্থা করে। পিকেলস নামের একটি কুকুর সেবার ইংল্যান্ডের মান ইজ্জত বাঁচাতে অবদান রাখে। চুরির এক সপ্তাহ পরে পিকেলস কুকুর লন্ডনের এক বাগানে খবরের কাগজে মোড়া অবস্থায় ট্রফিটি উদ্ধার করে।
১৯৭০ সালে ব্রাজিল তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জিতলে ট্রফিটি স্থায়ীভাবে তাদের দিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু ট্রফিটি আগলে রাখতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল। ১৯৮৩ সালে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের অফিস থেকে ট্রফিটি চুরি হয়ে যায়।
রিও ডি জেনেরিওতে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের অফিসে ছিল জুলে রিমে ট্রফি। ভবনটির তৃতীয় তলায় ছিল ট্রফিটি। ১৯-২০ ডিসেম্বর রাতের বেলায় ভবনটিতে প্রবেশ করে বুলেটপ্রুফ কাচে ঘেরা শোকেসে রাখা ট্রফিটি নিয়ে মুহূর্তে রাতের অন্ধকারে হাওয়া হয়ে যায় চোরের দল। সেই সঙ্গে চিরদিনের জন্য হারিয়ে যায় ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম মূল্যবান ট্রফি।
চুরির জন্য ৪ জন মানুষকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও কাপটি আর কখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত কেউ জানে না যে সেই আসল কাপটির মূলত কি হয়েছিল। লোকমুখে এমন শোনা যায় যে এটিকে গলিয়ে বিক্রি করা হয়েছে অথবা কোনো ধনকুবেরের ব্যক্তিগত কালেকশনে এটির ঠাঁই হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।