আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেলে ২ ডলারেরও বেশি বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাসের বৈঠক সামনে রেখে পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। বিনিয়োগকারীরা ওপেক প্লাসের সদস্য দেশগুলোর উত্তোলন হ্রাসের সম্ভাবনা পদক্ষেপের ওপর নজর রাখছেন। বিষয়টি দাম বাড়াতে সহায়তা করেছে।
তথ্য বলছে, গতকাল আইসিই ফিউচারস এক্সচেঞ্জে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম একদিনের ব্যবধানে ২ ডলার ৪২ সেন্ট বা ২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৯৫ ডলার ৪৪ সেন্টে। এর আগে শুক্রবার বাজার আদর্শটির দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছিল। অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম একদিনের ব্যবধানে ২ ডলার ৫ সেন্ট বা ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৮৮ ডলার ৯২ সেন্টে। এর আগের কার্যদিবসে বাজার আদর্শটির দাম দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছিল।
জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক এবং এর মিত্র দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস নামে পরিচিত। গতকাল জোটটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ওই বৈঠকে জোটটি বিদ্যমান নীতিতেই জ্বালানি তেল উত্তোলন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। আবার কেউ কেউ উত্তোলন আরো কমানো হবে বলেও মত প্রকাশ করেন। কারণ হিসেবে তারা জানান, অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যে জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে দাম ঊর্ধ্বমুখী রাখতে চায় ওপেক প্লাস। এ কারণেই সরবরাহ সংকট থাকা সত্ত্বেও উত্তোলন বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই জোটটির।
রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ জ্বালানি তেল উত্তোলক দেশ। পাশাপাশি ওপেক প্লাসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও। ওপেক প্লাস উত্তোলন কমানোর পথে হাঁটলেও তাতে সাড়া দিচ্ছে না রাশিয়া। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এএনজেডের বিশ্লেষকরা বলছেন, আমরা মনে করি, ওপেক প্লাস তাদের উত্তোলন আগের মতোই অপরিবর্তিত রাখবে। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বর্তমানে জ্বালানি তেলের বাজারদরে যে নিম্নমুখিতা তৈরি হয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্তও আসতে পারে।
এদিকে বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান সিএমসির বিশেষজ্ঞরা জানান, উত্তোলন কমার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাজারে নিম্নমুখিতার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। কারণ ইরানের পরমাণু চুক্তিতে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। দেশটি বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল নিয়ে রফতানি বাজারে ফেরার সম্ভাবনা দেখছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক মন্দার উদ্বেগ তো আছেই।
চলতি বছরের শুরুর দিকে রাশিয়া-ইউকক্রেন সংঘাত দেখা দিলে আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। বিশেষ করে মার্চে জ্বালানিটির দাম কয়েক বছরের সর্বোচ্চে উঠে আসে। কিন্তু এরপর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি সংকোচন ও চীনে কভিড-১৯ ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ বাজারকে নিম্নমুখী করে তোলে। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তিন মাস ধরেই অব্যাহত কমেছে জ্বালানি তেলের দাম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশ চীন বৈশ্বিক অর্থনীতি ও জ্বালানি তেলের চাহিদার গতিকে মন্থর করে তুলছে। নতুন করে সংক্রমণ বাড়ায় দেশটির বিভিন্ন শহরে আবারো লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।