আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, সকালে অং সান সু চি এবং অন্য রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করার পর তারা দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ক্ষমতা নিয়েছেন সেনাপ্রধান মিন অং লাইং। এই সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ব নেতারা।
সেনা অভ্যুত্থান ও সু চিকে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে, ‘ওয়াশিংটন সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফল কিংবা মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের বিকল্প যেকোন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সব সরকারি কর্মকর্তা এবং সুশীল সমাজের নেতাদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ‘গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, শান্তি এবং উন্নয়নের প্রতি বার্মার জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। সামরিক বাহিনীর তাদের পদক্ষেপ থেকে এখনই সরে আসা উচিত।’
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী মারিজ পেইনি বলেন, ‘আমরা আইনের শাসন মেনে চলতে, আইনি প্রক্রিয়ায় চলমান দ্বন্দ্বের নিষ্পত্তিতে এবং বেসামরিক সব নেতা ও অন্য যাদের বেআইনিভাবে আটক করা হয়ে সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে সামরিক বাহিনীকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জন সিফটন বলেন, ‘প্রথম বিষয়টি হচ্ছে যে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা যারা কয়েক দশক ধরে দেশটিকে শাসন করেছে তারা কখনোই আসলে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ায়নি। তারা কখনোই বেসামরিক কর্তৃপক্ষের শাসন মেনে নেয়নি, আর তাই আজকের ঘটনা আসলে এতদিন ধরে চলা অবস্থারই প্রকাশ মাত্র।’
ইয়াঙ্গন ভিত্তিক ইতিহাসবিদ এবং লেখক থ্যান্ট মিয়ন্ত-ইউ বলেন, ‘ভিন্ন ধরনের একটি ভবিষ্যতের দরজা খুললো মাত্র। আমার মনে হচ্ছে যে, পরবর্তীতে যা ঘটতে যাচ্ছে তা আসলে কেউই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।’
নিন্দা জানানো হয়েছে জাতিসংঘ থেকেও। অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের পর মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় বেশ জোরালোভাবেই নিন্দা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল। তার মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ‘মিয়ানমারে যা ঘটছে তা আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে দেখছি। মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি ভারতের সমর্থন সব সময়ই অবিচল ছিল। আমরা বিশ্বাস করি যে, আইনের শাসন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত থাকবে। আমরা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’
ইয়াঙ্গুনে উল্লাস : এদিকে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে সেনা অভ্যুত্থানের সমর্থনে উল্লাস করেছে স্ব-ঘোষিত কিছু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা। তারা সুয়েডাগন প্যাগোডার বাইরে শহীদদের সমাধিস্থলের কাছে গান গেয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে।
বিবিসি নিউজ মিয়ানমারকে এই উল্লাসকারীদের একজন বলেছে যে, উদযাপনের অংশ হিসেবে তারা শহরের অন্য স্থানগুলোতেও যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।