আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বড় আকারে মন্ত্রিসভার রদবদল করছেন নরেন্দ্র মোদী। তাতে চমক যেমন থাকছে, তেমনই থাকছে বার্তা দেয়ার বিষয়টি। খবর ডয়চে ভেলে’র।
বিজেপি-তে একটা চালু কথা আছে, নরেন্দ্র মোদী যা করেন, তা বড় আকারেই করেন। তিনি সবসময় মেগা ইভেন্ট পছন্দ করেন। তার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভার প্রথম রদবদলও তিনি বড় আকারেই করছেন। বুধবার সন্ধ্যায় নতুন মন্ত্রীরা শপথ নেবেন। বেশ কিছু পুরনো মন্ত্রী বাদ পড়ছেন। অনেক মন্ত্রীর দফতর বদলের সম্ভাবনাও প্রবল।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে সম্ভবত দুইজন নতুন মন্ত্রী হচ্ছেন। নিশীথ প্রামাণিক এবং শান্তনু ঠাকুর। দুজনেই এদিন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে মোদীর সঙ্গে দেখা করেছেন। সুভাষ সরকার ও জন বার্লাকেও মন্ত্রী করা হতে পারে। নিশীথ প্রমাণিক উত্তরবঙ্গের নেতা। শান্তনু ঠাকুর মতুয়াদের নেতা। ভবিষ্যৎ ভোটের দিকে তাকিয়েই এই পরিবর্তন করছেন মোদী। রাজ্যে জিততে গেলে মতুয়া ও উত্তরবঙ্গের ভোট পাওয়া তার কাছে জরুরি। এর আগে উত্তরবঙ্গ থেকেই প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন দেবশ্রী চৌধুরী। তিনি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করেছেন আরেক বাঙালি প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন এবং ওই দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। পদ ছেড়েছেন মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক, শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার। ইস্তফা দিয়েছেন সদানন্দ গৌড়াও। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলানোর ক্ষেত্রে প্রাথমিক ব্যর্থতার কারণেই সম্ভবত মন্ত্রিত্ব হারাতে হলো হর্ষবর্ধনকে। ইস্তফা দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় ধোতরে।
একগুচছ নতুন মন্ত্রী নিচ্ছেন মোদী। এদিন যারা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন, তার মধ্যে আছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, মীনাক্ষি লেখি, ভূপেন্দ্র যাদব, শোভা খারান্ডলাজে, অনুপ্রিয়া পাটিল, রীনা গাভিদ, সুনীতা দুগ্গা।
এছাড়া অনুরাগ ঠাকুর, হরদীপ পুরি, জি কিষেন রেড্ডি, কিরণ রিজিজুর মতো প্রতিমন্ত্রীকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী করা হতে পারে।
এই রদবদলের মধ্যে দিয়ে বেশ কয়েকটি বার্তা দিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রথম বার্তাটি অবশ্যই উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যগুলির জন্য, যেখান আর মাস সাতেকের মধ্যে বিধানসভা ভোট হবে। উত্তর প্রদেশ থেকে বেশ কিছু নতুন মন্ত্রী নেয়া হচ্ছে। সেখানে জাতপাতের বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে। ব্রাহ্মণ রীতা বহুগুণা জোশী, অনগ্রসর অনুপ্রিয়া প্যাটেল এবং রাজভরকে মন্ত্রী কর হচ্ছে। বরুণ গান্ধীকে মন্ত্রী করা হলে আরেকজন ব্রাহ্মণ নেতাকে মন্ত্রী করা হবে। উত্তরাখণ্ড থেকেও অজয় মিশ্র, অজয় ভাটের মতো নতুন মুখকে নিয়ে এসে মন্ত্রী করা হচ্ছে।
মহারাষ্ট্র থেকে নারায়ণ রানে সহ চারজন নতুন মন্ত্রী নেয়া হতে পারে। এটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। কারণ, মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা দখল করতে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। শিবসেনাকে চাপ দেয়া হচ্ছে। কথাবার্তাও হয়েছে। কিন্তু শিবসেনার সঙ্গে হাত মেলালে উদ্ধবকে মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে, যাতে রাজি নয় বিজেপি। তারা এনসিপি-কেও বাজিয়ে দেখছে।
প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় বার্তাটি অনগ্রসরদের উদ্দেশ্যে। বেশ কিছু অনগ্রসর নেতাকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এটাও প্রধাণত উত্তর প্রদেশের ভোটের দিকে তাকিয়েই।
মোদী এবার বেশ কয়েকজন নারী সাংসদকে মন্ত্রী করতে চলেছেন। প্রায় চার-পাঁচজন নতুন নারী মন্ত্রী নিতে পারেন মোদী। এটাও একটি বার্তা। মেয়েদের উদ্দেশে। পশ্চিমবঙ্গের ভোটে মেয়েরা ঢালাও মমতাকে ভোট দেয়ার পরই কি এই উপলব্ধি? তবে বিজেপি নেতারা বলছেন, এর আগে নির্মলা সীতারামনকে অর্থমন্ত্রী করেছেন মোদী, তাকে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটি ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটিতেও রেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী এবার বেশ কিছু কম বয়সি নেতাকে নতুন মন্ত্রী করতে চলেছেন। আর কয়েকজন তরুণ প্রতিমন্ত্রীকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী করতে চলেছেন। এইভাবে তিনি মন্ত্রিসভাকে ইয়াং লুক দিতে চেয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।