বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্নাতক পর্যায়ের বিভিন্ন লেভেল ও টার্মের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এন. এম. গোলাম জাকারিয়া স্বাক্ষরিত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগামী ৩০ আগস্ট থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য স্নাতক পর্যায়ের বিভিন্ন লেভেল ও টার্মের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হলো।
একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তীতে স্নাতক পর্যায়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বুয়েটসহ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথমে তিন দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। দাবির মধ্যে রয়েছে- নবম গ্রেডের ইঞ্জিনিয়ারিং পদ বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং প্রার্থীর কমপক্ষে বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। কোটার মাধ্যমে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। এমনকি বিভিন্ন নামে সমমানের পদ সৃষ্টি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
দশম গ্রেডের কারিগরি পদ বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ডিগ্রিধারীদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা বুধবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার উদ্দেশে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্য আহত হন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও আদায় না হওয়া তিন দফা দাবি থেকে সরে এসে পাঁচ দফা দাবি জানান আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি এ সমস্যা সমাধানে সরকারের গঠন করা কমিটিও প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা।
বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে তাকে বিষয়টির জবাবদিহি করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গঠিত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করলাম। একই সঙ্গে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে।
জুবায়ের আহমেদ আরও বলেন, আমাদের পূর্ব ঘোষিত তিন দফা দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাহী আদেশে প্রজ্ঞাপন দিতে হবে। তিন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে এখানে এসে নিশ্চয়তা দিতে হবে। হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ বহন করতে হবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যৌক্তিক আন্দোলনে আর কোনো হামলা করা যাবে না।
এছাড়া আন্দোলনে অংশ নেওয়া রোকনের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান বুয়েটের এ শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পুলিশের হামলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।