জুমবাংলা ডেস্ক : বুয়েটে যথাসময়েই হচ্ছে এ বছরের ভর্তি পরীক্ষা। আবরার ফাহাদ হ’ত্যাকাণ্ডের জেরে চলমান আন্দোলনের মুখে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আজ দুপুর পর্যন্ত অনিশ্চিয়তা ছিল।
ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলন কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ফলে, সকল উৎকণ্ঠা দূর করে নির্ধারিত তারিখেই এবারের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আজ দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, চলমান আন্দোলন অব্যহত থাকবে। তবে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আগামী ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন শিথিল করা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। পরীক্ষা চলাকালীন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করবেন বলেও তারা জানান।
এ সময় শিক্ষকদের প্রতি আস্থা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। বলেন, আবরার হ’ত্যা পরবর্তী সময়ে শুরু থেকেই আমাদের পাশে ছিলেন তিনি।
শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আন্দোলনকারীরা আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে এক ব্রেফিংয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বেঁধে দেয়া সর্বশেষ পাঁচদফা দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত নোটিশ দিতে বলা হয়। না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ারি দেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, আবরার হ’ত্যায় জড়িতদের সাময়িক বহিষ্কার, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ এবং আবরার ফাহাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ পাঁচদফা দাবির পদক্ষেপসমূহ নোটিশ আকারে প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় বুয়েটে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এর আগে শুক্রবার বিকালে বুয়েট অডিটোরিয়ামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম। আবরার হত্যার ৩২ ঘণ্টা পর ক্যাম্পাসে আসার কারণে বৈঠকের শুরুতেই ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। পরে তিনি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেটা মেনে নেননি। তারা স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে অনঢ় থাকেন।
পরে কোন ধরনের সমঝোতা ছাড়াই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভিসি’র বৈঠক শেষ হলে, রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এ পাঁচদফা দাবি জানানো হয়। আগামী ২৮ অক্টোবর বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি না মানলে এ ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করারও হুশিয়ারি দেয়া হয়।
কিন্তু সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে শনিবার দুপুরে এ সিদ্ধান্ত নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জের ধরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার ম’রদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লা’শের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হ’ত্যা করা হয়েছে।’
নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। সূত্র : একুশে টিভি অনলাইন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।