জুমবাংলা ডেস্ক: সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারনী এলাকার বনে লাগা আগুন প্রায় ৩০ ঘন্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে, দু’দফা বৃষ্টিতে রক্ষা পেয়েছে সুন্দরবন, হয়নি বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি। খবর বাসসের।
সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার বিকালে দু’দফা বৃষ্টির কারনে ছড়িয়ে পড়া আগুনের তেজ কমে আসলে এবং বিক্ষিপ্ত ভাবে লেগে থাকা আগুন ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ও বন বিভাগ ও সুন্দরবন সুরক্ষায় ভিটিআরসি টিমের সদস্যরা মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে আগুন নিভিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।
স্থানটি দূর্গম হওয়ায় দ্বিতীয় দিনে এসেও আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন যাতে বনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য কাটা হয় ফায়ার লাইন। আগুনে বিক্ষিপ্ত ভাবে প্রায় ১০ একর গাছপালা ও লতাগুল্ম পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সুন্দরবন বিভাগ বলছে আগুন লাগার কারন অনুসন্ধানে গঠিত ৩ সদস্যে কাজ শুরু করেছে। ওই কমিটি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত রিপোর্ট জমা দিলেই আগুন লাগার কারন ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানা সম্ভব হবে। প্রাথমিক ভাবে ধারন করছে জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের ফেলে দেয়া আগুন থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। আগের আগুনগুলোর মতো এই আগুনটিও নাশশকতার কি না সে বিষয়টিও বন বিভাগ ক্ষতিয়ে দেখছে।
লোকালয় থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার গহীন বনের দাসের ভারানী এলাকায় সোমবার বেলা ১১টায় এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
এদিকে সুন্দরবন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবনে ১৫ বছরে ২৮ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৮০ একর বনভূমি।
২০১৭ সালের ২৬ মে পূর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন আবদুল্লাহর ছিলায় বড় ধরনের অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। ওই আগুনে প্রায় পাঁচ একর বনভূমির ছোট গাছপালা,লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক মো. সরোয়ার হোসেন জানান, সোমবার বেলা ১১ টায় পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয় শরণখোলা রেঞ্জের দাশের ভারনী টহল ফাঁড়ি এলাকার বনে আগুন লেগেছে।
প্রথমে শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ ও বিকালে বাগেরহাটের ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটসহ বন বিভাগ ও সুন্দরবন সুরক্ষায় ভিটিআরসি টিমের সদস্যরা গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত দূর্গম বনের ভিতর ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপ টেনেও ঘটনাস্থলে পৌছাতে পারেনি।
এরপর রাতের কারনে আগুন নেভানোর পাইপ টানার কাজ বন্ধ করে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় লোকালয় থেকে ঘটনাস্থলে পৌছান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ অন্যরা। আগুন লাগার জায়গাটা বেশ দূর্গম বনের মধ্যে হওয়ায় পানি বেশ খানিকা দূরে থাকায় আমাদের কর্মীরা পানির পাইপ টানার কাজ শেষ করে আগুন নেভানো শুরু করেছে। প্রায় পাঁচ একর এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
তবে সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার বিকালে দুদফা বৃষ্টির কারনে ছড়িয়ে পড়া আগুনের তেজ কমে আসলে আগুন প্রায় ৩০ ঘন্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসেছে। দুই দফা বৃষ্টি এবার আগুনে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে সুন্দরবনকে রক্ষা করেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবনের কতটুকু এলাকায় আগুনে গাছপালা পুড়ছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত কমিটি ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরুপণ ও আগুন লাগার সঠিক কারন জানা সম্ভব হবে। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের ফেলে দেয়া আগুন থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারন করছি। তবে আগের আগুনগুলোর মতো এই আগুনটিও নাশশকতার কি না সে বিষয়টিও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।