জুমবাংলা ডেস্ক : বেগুনে ক্যানসার সৃষ্টিকারী হেভি মেটাল উপাদান লেড, ক্যাডমিয়াম ও নিকেলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বিজ্ঞানীরা। গবেষণার বরাতে তারা জানিয়েছেন, ক্রমাগত বেগুন খাওয়ার মাধ্যমে এসব উপাদান গ্রহণ করলে যে কেউ ক্যানসার আক্রান্ত হতে পারেন। তবে রান্নার পর বেগুনে ক্যানসারের এসব উপাদান থাকছে কিনা সেটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়নি।
গবেষকরা জানিয়েছেন, জামালপুরের ইসলামপুর ও মেলান্দহ উপজেলার ২০টি স্পটের কৃষকদের থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা বেগুন এবং মাটির স্যাম্পল পরীক্ষায় এসব হেভি মেটালের উপাদান মিলেছে।
গবেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইউএসইপিএর গাইডলাইন মেনে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। গাইডলাইনে বলা হয়, হেভি টক্সিক মেটালের এই বেগুন ক্রমাগত গ্রহণ করলে মানবদেহে ক্যানসার হতে পারে।
তাদের গবেষণার এই ফলাফল চলতি বছরের ২২ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘নেচার পোর্ট ফোলিও’-তে প্রকাশিত হয়েছে। তবে গবেষকরা মনে করছেন, বেগুনে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এসব উপাদানের উপস্থিতি নিয়ে আরও বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন। গবেষক দলে আরও ছিলেন অধ্যাপক ড. কাজী ফরহাদ কাদির, অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএস (থিসিস) শিক্ষার্থী আনিকা বুশরা।
চাহিদা ও উৎপাদনের গুরুত্ব বিবেচনায় গবেষক দল জামালপুরের ইসলামপুরকে বেছে নেন। একইসঙ্গে পাশের মেলান্দহ উপজেলাকেও বেছে নেওয়া হয়। সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে গবেষক দল সরেজমিন থেকে গবেষণা শুরু করে।
দলটি জামালপুরের ইসলামপুরের ১১টি ও মেলান্দহ উপজেলার ৯টি স্পটসহ ২০ স্পটের কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি বেগুনের নমুনা সংগ্রহ করেন। এ সময় এই দুটি উপজেলা থেকে বেগুনের ৮০টি ও মাটির (টপ সয়েল) ৬০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বাকৃবির ল্যাবের গবেষণায় প্রথমে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে একটি ফলাফল মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। পরে চলতি বছরের জুন মাসে আরও একটি ফলাফল জমা পড়ে।
গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, এসব উপাদান ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে এর বাইরে বেগুনে পুষ্টি উপাদান হিসেবে কপার, জিংক, আয়রন ও ম্যাঙ্গানিজের উপস্থিতিও ছিল।
গবেষকরা আরও জানান, জামালপুরের ইসলামপুর ও মেলান্দহের ২০টি স্পট থেকে সংগ্রহ করা সব স্যাম্পলেই জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর লেড এবং নিকেল পাওয়া গেছে। আর ক্যাডমিয়াম মিলেছে ৪০ শতাংশ স্যাম্পলে।
তবে উৎপাদিত বেগুন ও মাটিতে এসব উপাদান সার ও কীটনাশক কিংবা ব্যবহৃত পানি থেকে এসেছে কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমনকি রান্নার পর বেগুনে এসব উপাদানের মাত্রা কতখানি থাকছে সেটি নিয়েও কোনও গবেষণা হয়নি। মানবদেহ এসব উপাদানের সহনীয় মাত্রা কত তা নিয়েও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।