১৯৯৪ সালের ১৭ জানুয়ারি। রাতের ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যস্ত শহর লস এঞ্জেলাস। ভেঙ্গে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। বিদ্যুৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে শহরের বড় একটি অংশ। অন্ধকারে ভীত নগরবাসী আকাশে রূপালী মেঘের কুণ্ডলী দেখতে পায়। অনেক মানুষ আতঙ্কিত হয়ে এদিক-সেদিক ছুটতে থাকে।
আসলে তারা সেদিন হয়তো প্রথমবারের মতো আকাশের ছায়াপথ বা মিল্কিওয়ে দেখতে পেয়েছিল। এটি তাদের কাছে রূপালী মেঘের মতো মনে হয়েছিল। আসলে লস এঞ্জেলাস এর জনগণ ভুলে গিয়েছিল রাতের আকাশ দেখতে কেমন।
বিকেলের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার হচ্ছে বৈদ্যুতিক বাল্ব। সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে এটির অবদান রয়েছে। বর্তমানে এটির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার বেড়েছে। এর ফলে আলোর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। এর ফলে হারিয়ে যাচ্ছে রাতের আধার। কেড়ে নিচ্ছে রাতে মানুষের ঘুম।
এর ফলে নিশাচর প্রাণীরা রাতের আবাসস্থল হারিয়ে ফেলছে। মানুষের শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বাস্তুসংস্থানে এদের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। আলোর দূষণের মতো বৈশ্বিক সমস্যা ২০১৬ সালে বেশি করে আলোচনায় উঠে এসেছিল।
একটি স্যাটেলাইট ছবি রাতের পৃথিবীর ভয়াবহ দৃশ্য ফুটিয়ে তোলে। স্যাটেলাইট থেকেও ঝলমলে দেখাচ্ছিল উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও রাশিয়ার কিছু অংশ। কৃত্রিম আলোর কারণে মানবদেহে মেলাটোনি এর মত গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হ্রাস পাচ্ছে।
রক্তচাপের নিয়ন্ত্রণ কমে আসছে। ঘুমের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এর ফলে অবসাদ, বিষন্নতা ও স্থূলতার মতো সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার মত সমস্যা তো আছেই। রাতের আকাশ বেশি উজ্জ্বল থাকায় বন্যপ্রাণীর আচরণে পরিবর্তন আসছে।
খাদ্যের সন্ধানে ছুটে চলা নিশাচর প্রাণীরা রাত ও দিনের ব্যবধান বুঝতে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক পাখি নিজেদের আবাসস্থল হারিয়ে ফেলছে। শহর থেকে অতিরিক্ত আলোর পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব হলে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।