জুমবাংলা ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আজিজ-বেনজীর ইস্যুতে সরকার বিব্রত নয়। কারণ, বিচার করার সৎসাহস সরকারের আছে। সরকার তাদের অপরাধ অস্বীকার করে পার পেয়ে যাবার সুযোগ দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে কোনো অপরাধী শাস্তি ছাড়া পার পাবে না। দুর্নীতির ব্যাপারে সরকারপ্রধান আপসহীন।’
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড় রিমাল কবলিত এলাকা পটুয়াখালী পরিদর্শনে যাবেন। সময় পেলে খুলনায়ও যেতে পারেন তিনি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুদক সূত্র জানিয়েছে, বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে এখনো তদন্ত হচ্ছে, আরও তদন্ত হবে। মামলা হলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ অপরাধী হলে তার বিরুদ্ধেও তদন্ত করতে পারবে দুদক। অপরাধী হলে অপরাধের জন্য শাস্তি পেতেই হবে। তিনি যেই হোন না কেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার সবসময় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।’
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা এখন কথায় কথায় সাবেক আইজিপির দুর্নীতির কথা বলেন। তাদের আমলে সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা ও চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার প্রাণনাশের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিচার কি বিএনপি করেছে? এসপি কোহিনুরের নির্যাতন ও দুর্নীতির কী বিচার হয়েছে? তাদের নেতাকর্মীর দুর্নীতি ও হাওয়া ভবনের দুর্নীতির বিচার কী তারা করেছে? চট্টগ্রামে বিএনপি নেতা জামালউদ্দিনকে গুম করে খুন করেছে বিএনপি। এর বিচার কে করেছে? সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ব্যাপারে দুদক তদন্ত করে বের করছে। দুদক স্বাধীন। এই স্বাধীনতা শেখ হাসিনা দুদককে দিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এ দেশে ’৭৫ পরবর্তীকালে একমাত্র ক্ষমতাসীন রাজনীতিক, যিনি অপরাধীকে নিজের দলের লোক হলেও ক্ষমা করেন না। এর প্রমাণ তিনি রেখেছেন। বুয়েটে আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছাত্রলীগের কর্মীদের কী ছাড় দেওয়া হয়েছে? বিশ্বজিতের কথা সবার জানা আছে।’
সরকার পরিবর্তন নিয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের উপায় দু’টি- গণঅভ্যুত্থান ও নির্বাচন। গণঅভ্যুত্থান বিএনপির গলাবাজিতে ছিল, বাস্তবে ছিল না। গণআন্দোলনও তারা করতে পারেনি। জনগণ সম্পৃক্ত ছিল না বলেই বিএনপির আন্দোলন বারবার ব্যর্থ হয়েছে। তারা নির্বাচন বয়কট করার পরও ভোটার টার্ন আউট ৪২ শতাংশেরও বেশি। তারা বয়কট করে নির্বাচন ও জনগণের অংশগ্রহণ ঠেকাতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নিজেদের অপরাধ ঢাকতে অপপ্রচার করছে। তাদের আমলে অপরাধীদের কোনদিন শাস্তি পেতে হয়নি। আজ তারাই বলে- তারেক রহমানকে কীভাবে শাস্তি দেবেন? শাস্তি তো তিনি পেয়ে গেছেন। দুদকের মামলায় নয় বছর কারাদণ্ড, অর্থপাচারের মামলায় সাতবছর সাজা ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা এবং একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের কিছু টাকা বাংলাদেশ ফিরে পেয়েছে। এখন শাস্তি বাস্তবায়ন করতে তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই চেষ্টা অব্যাহত আছে, তার শাস্তি হতেই হবে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশে হত্যা ও গুমের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়েছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হাতে। তার আমলে তিন হাজারের বেশি রাজনৈতিক কর্মী, যাদের অধিকাংশ আওয়ামী লীগের- তাদের গুম ও খুন করা হয়েছে। সেটা কী বিএনপি ভুলে গেছে? এদেশের মানুষ এখনো সেই হত্যা, গুমের রোমহর্ষক কাহিনি ভুলে যায়নি। আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলের ৬২ হাজার নেতাকর্মী কাদের আমলে কারাগারে ছিলেন? যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের কারামুক্তি দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। এর মধ্যে ৭০৩ জন ছিল দণ্ডিত আসামি। অনেকে বলেন- বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এটা সত্য নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান প্রমুখ।
রেমালে ক্ষতিগ্রস্তের পাশে দাঁড়াতে নেতাকর্মী প্রতি ফখরুলের আহ্বান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।