জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশালের বানারীপাড়ায় একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার ঘটনার চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের স্ত্রীর পরকীয়ার জেরেই মূলত তিন স্বজনকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর সন্দেহভাজন কবিরাজ জাকির হোসেন এবং আব্দুর রবের ভাগ্নি আছিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
এর আগে গতকাল শনিবার রাতে বানারীপাড়ায় হাফেজ আ. রবের বাড়িতে তার বৃদ্ধা মা মরিয়ম বেগম (৭৫), ভগ্নিপতি সফিকুল আলম (৬৫) ও খালাতো ভাই ইউসুফ (২২) খুন হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, হাফেজ আব্দুর রহমান একজন কুয়েত প্রবাসী। তার বাড়ি তৈরির জন্য কাজ করতেন এলাকার রাজমিস্ত্রি ও কবিরাজ জাকির হোসেন। এই কাজের সূত্র ধরে রবের স্ত্রীর সঙ্গে জাকিরের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ কারণে রবের বাড়িতে যাতায়াত ছিল কবিরাজ জাকিরের।
ঘটনার দিন রাতে কবিরাজ জাকির রবের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়িতে আসেন। এসময় তার ঘরে ঢুকে রবের স্ত্রীকে বিবস্ত্র করেন। রবের ভাগ্নি আছিয়াও তার স্ত্রীর সঙ্গে একই ঘরে থাকতেন।
জাকিরের সঙ্গী রবের স্ত্রীর নগ্ন ছবি মোবাইলে ধারণ করেন। একই সঙ্গে এ ঘটনা জানাজানি হলে ওই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেন। এরপর তারা বিকাশের মাধ্যমে রবের স্ত্রীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নেন।
এদিকে, ওই রাতেই রবের বাড়িতে তার ভগ্নিপতি সফিকুল আলম ও খালাতো ভাই ইউসুফ খুন হয়। তারা রবের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে কবিরাজ জাকিরও তার সহযোগীর কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা সে বিষয়ে পুলিশ বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
বানারীপাড়া থানা পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, নিহতদের ব্যাপারে তথ্য পেতে আব্দুর রবের স্ত্রী, ভাগ্নি আছিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, বিগত তিন বছর ধরে কবিরাজ জাকির হোসেন তাদের জিম্মি করে রেখেছে। বিভিন্ন তাবিজ-কবজের মাধ্যমে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখাতো কবিরাজ জাকির।
এ ঘটনার বিষয়ে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যই সন্দেহের মধ্যে রয়েছেন। প্রয়োজনে তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্তের স্বার্থে কবিরাজ জাকির হোসেনকে ওই বাড়ি থেকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছে।
জিজ্ঞাসাবাদে জাকির হোসেন পুলিশের নিকট দাবি করেছে, ঘটনার রাতে (শনিবার) সে বরিশাল নগরীর সাগরদী এলাকায় তার ভাগনে তরিকুলের বাসায় ছিলেন। কিন্তু তরিকুল জানিয়েছে সে ঘটনার রাতে তার বাড়িতে ছিলেন না।
প্রসঙ্গত, শনিবার ভোরে বানারীপাড়ার সলিয়াবাকপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির বাসিন্দা কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আ. রবের বাসায় তার বৃদ্ধা মা মরিয়ম বেগম (৭৫), ভগ্নিপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সফিকুল আলম (৬৫) ও বাড়ির পুকুর থেকে খালাতো ভাই ইউসুফের (২২) হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। সূত্র : আমাদের সময়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।