জুমবাংলা ডেস্ক : শনিবার সকালেই যেনো সন্ধ্যা নেমেছিল রাজধানী ঢাকায়। ঘনকালো মেঘের সাথে টানা দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। শুক্রবারের হালকা উষ্মতা কাটিয়ে অনেকটা শীতল হয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা।
কয়েক দিনের ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতে মে মাসের শুরু থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশে যে স্বস্তি ফিরে এসেছিলো তা হয়তো বেশিদিন স্থায়ী হচ্ছে না। কেননা, আবহাওয়া অফিস যে পূর্বাভাস দিচ্ছে, সে অনুযায়ী চলতি মাসের মাঝামাঝি আবার আসছে অস্বস্তিকর গরম।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামীকাল রোববার থেকে দেশের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকলেও বাড়তে শুরু করবে মঙ্গলবারের পর থেকে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে বলছে, আগামী সোমবারের পর থেকেই একটু একটু করে বাড়বে তাপমাত্রা।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, আগামী ১৪ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এরপরই বাড়বে তাপমাত্রা। ১৫ তারিখ থেকে বইতে শুরু হবে তাপপ্রবাহ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এপ্রিল মাসে যে তীব্রতা দেখা গেছে, ততোটা তীব্র হবে না মে মাসের তাপপ্রবাহ। মে মাসের ১৫-২০ তারিখের মধ্যে যে তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায়, সেটি হতে পারে মৃদু থেকে মাঝারি।
আওহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, “বজ্র-ঝড়ের তীব্রতা কমে গেলেই তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই তাপপ্রবাহ মৃদু তাপপ্রবাহই হবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হতে পারে ৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত”।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ২০ তারিখের পরে বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিপাতের সাথে বজ্রপাত- সেই সাথে হতে পারে কালবৈশাখী ঝড়ও। জুনে বর্ষাকাল শুরুর আগ পর্যন্ত সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সাথে হতে পারে শিলাবৃষ্টিও।
বৃহস্পতিবার থেকে তাপপ্রবাহ
আগামী সোমবার পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে যে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর সেটি কমতে শুরু করবে মঙ্গলবার থেকে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি মে মাসের ৫ তারিখ রাত থেকে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে বর্তমানে বাংলাদেশের তামপাত্রা ৩২ থেকে ৩৪ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে।
আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, দেশে যদি বজ্র ঝড়ের সংখ্যা যদি বৃদ্ধি পায়, এর স্থায়িত্ব যদি বাড়তে থাকে তখন তাপমাত্রাও কমতে থাকে। আগামী রবিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত এই বজ্রঝড় ও বৃষ্টি হবে বিভিন্ন জায়গায়।
গত কয়েকদিনের আবহাওয়ার উদাহরণ দিয়ে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, যদি দিনের ভেতর সকালে একবার বজ্র ঝড় ও বৃষ্টি হলে তখন বিকেলের পর তাপমাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু সকাল বিকেল দুই বার যখন ঝড় বৃষ্টি হয় তখন তাপমাত্রা কম থাকে। গত কয়েকদিনে সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সকাল ও বিকেলে বজ্র ঝড় ও বৃষ্টি লক্ষ্য করা গেছে।
আওহাওয়াবিদ মি. মল্লিক বলছেন, “আগামী ১৩ তারিখের পর থেকে বজ্র ঝড়ের তীব্রতা কমে যাবে। তখন বৃষ্টি কমতে কমতে এক পর্যায় তাপমাত্রাও বাড়তে শুরু করবে”।
তাহলে এই তাপমাত্রা কতটা বাড়তে পারে? কিংবা এটি কী তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিতে পারে? এমন প্রশ্নে আবহাওয়াবিদরা দিচ্ছেন কিছুটা স্বস্তির খবর।
তারা বলছেন, আগামী বুধ-বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হতে পারে এই তাপপ্রবাহ। এসময় রাজশাহী, যশোর, নওগাঁ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। আস্তে আস্তে সেটি আসতে পারে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের দিকে।
আবহাওয়া অফিসের হিসেব মানদণ্ড অনুযায়ী যখন কোন স্থানের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠে তখন সেটিকে বলা হয় মৃদু তাপপ্রবাহ।
আবহাওয়াবিদ মি. মল্লিক জানাচ্ছেন, আগামী ১৫ তারিখের পর থেকে বাংলাদেশে মৃদু তাপপ্রবাহ শুরু হবে। এই তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে। তবে ৩৮ ডিগ্রি পর্যন্ত নাও উঠতে পারে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, মৃদু তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ার পর যদি নতুন করে বৃষ্টিপাত শুরু না হয়, তাহলে এর তীব্রতা বাড়তেও পারে।
তবে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, আগামী বুধ বৃহস্পতিবারের দিকে যে তাপপ্রবাহ আসছে সেটি সর্বোচ্চ ১৯ থেকে ২০ মে পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মি. মল্লিক বলছেন, এবারের তাপপ্রবাহ আগের গত মাসের মতো এত ভয়াবহ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে এটির কতদিন স্থায়ী হবে বা এর প্রকৃতি কি হবে সেটি ১৪ তারিখের আগে নিশ্চিত করে বলা যাবে না।-বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।